০৭:২৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাগলা মসজিদের দানের সিন্দুক খুলে পাওয়া যায় ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৮:৩৩:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ অক্টোবর ২০২২
  • 26

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের আটটি দানের সিন্দুক খুলে পাওয়া যায় ১৫ বস্তা টাকা। সারাদিন গণনা শেষে যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা। যা পাগলা মসজিদের ইতিহাসে দানে পাওয়া সর্বোচ্চ টাকা। নগদ টাকা ছাড়াও দানবাক্সে মার্কিন ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও সোনা-রূপার গহনাও পাওয়া যায়।

শনিবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বিষয়টির সত‌্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শনিবার সকাল আটটার দিকে জেলা প্রশাসনের কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মসজিদ কমিটির কর্মকর্তাদের সামনে এ সিন্দুকগুলো খুলা হয়।

জেলা প্রশাসক বলেন, এবার তিন মাস ১ দিন পর মসজিদের সিন্দুক খোলা হয়েছে। আমরা গত দুই বছর ধরে মসজিদের দানের মূল টাকা খরচ করছি না। এগুলো ব্যাংকে জমা রাখা হচ্ছে। যা দিয়ে এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের বহুতল বিশিষ্ট আধুনিক সুযোগ সুবিধাযুক্ত দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণ স্থাপন করা হবে। ওই কমপ্লেক্সে ৬০ হাজার মুসল্লির একসঙ্গে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকবে। নারীদের জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্থাও থাকবে সেখানে। থাকবে সমৃদ্ধ লাইব্রেরিসহ আরও নানা আয়োজন। এ প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

এর আগে গত ২ জুলাই দান সিন্দুক খুলা হয়েছিল। তখন সিন্দুকগুলোতে সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। তারও আগে ১২ মার্চ দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন সিন্দুকগুলোতে সবমিলিয়ে ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

শনিবার সকালে সিন্দুক খুলার পর টাকাগুলো বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় নিয়ে গণনার কাজ শুরু করা হয়। প্রায় ২০০ লোক দানের টাকা গুনার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। টাকার বস্তাগুলো একে একে ঢেলে দেয়া হয় তাদের সামনে। এভাবে বস্তার পর বস্তা টাকা গণনার কাজ এগিয়ে চলে। একইসঙ্গে ব্যাংকের লোকজন মেশিন দিয়ে টাকাগুলো আবার গণনা করেন।

টাকা গণনার সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ টি এম ফরহাদ, সহকারী কমিশনার জোহরা সুলতানা যুথী ও মোছা. নাবিলা ফেরদৌস।

এছাড়াও টাকা গণনার কাজে রূপালি ব্যাংকের এজিএম ও অন্যান্য কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।

প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ মসজিদটির দানসিন্দুক গুলোতে নগদ টাকা-পয়সা দান করেন। এছাড়া গবাদিপশু, হাঁস-মুরগীসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদটিতে দান করা হয়। লোকজনের বিশ্বাস এই মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এ কারণে দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এখানে দান করে থাকেন। শুধু মুসলমান নয়, সব ধর্মের লোকজন এখানে টাকা-পয়সা দান করে থাকেন।

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এর খ্যাতিও। দিন দিন মসজিদের দানের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

পাগলা মসজিদের দানের সিন্দুক খুলে পাওয়া যায় ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা।

Update Time : ০৮:৩৩:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ অক্টোবর ২০২২

কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের আটটি দানের সিন্দুক খুলে পাওয়া যায় ১৫ বস্তা টাকা। সারাদিন গণনা শেষে যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ৮৯ লাখ ৭০ হাজার ৮৮২ টাকা। যা পাগলা মসজিদের ইতিহাসে দানে পাওয়া সর্বোচ্চ টাকা। নগদ টাকা ছাড়াও দানবাক্সে মার্কিন ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও সোনা-রূপার গহনাও পাওয়া যায়।

শনিবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বিষয়টির সত‌্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, শনিবার সকাল আটটার দিকে জেলা প্রশাসনের কয়েকজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মসজিদ কমিটির কর্মকর্তাদের সামনে এ সিন্দুকগুলো খুলা হয়।

জেলা প্রশাসক বলেন, এবার তিন মাস ১ দিন পর মসজিদের সিন্দুক খোলা হয়েছে। আমরা গত দুই বছর ধরে মসজিদের দানের মূল টাকা খরচ করছি না। এগুলো ব্যাংকে জমা রাখা হচ্ছে। যা দিয়ে এখানে একটি আন্তর্জাতিক মানের বহুতল বিশিষ্ট আধুনিক সুযোগ সুবিধাযুক্ত দৃষ্টিনন্দন ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণ স্থাপন করা হবে। ওই কমপ্লেক্সে ৬০ হাজার মুসল্লির একসঙ্গে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকবে। নারীদের জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্থাও থাকবে সেখানে। থাকবে সমৃদ্ধ লাইব্রেরিসহ আরও নানা আয়োজন। এ প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

এর আগে গত ২ জুলাই দান সিন্দুক খুলা হয়েছিল। তখন সিন্দুকগুলোতে সব মিলিয়ে ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। তারও আগে ১২ মার্চ দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন সিন্দুকগুলোতে সবমিলিয়ে ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা পাওয়া গিয়েছিল।

শনিবার সকালে সিন্দুক খুলার পর টাকাগুলো বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় নিয়ে গণনার কাজ শুরু করা হয়। প্রায় ২০০ লোক দানের টাকা গুনার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। টাকার বস্তাগুলো একে একে ঢেলে দেয়া হয় তাদের সামনে। এভাবে বস্তার পর বস্তা টাকা গণনার কাজ এগিয়ে চলে। একইসঙ্গে ব্যাংকের লোকজন মেশিন দিয়ে টাকাগুলো আবার গণনা করেন।

টাকা গণনার সময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এ টি এম ফরহাদ, সহকারী কমিশনার জোহরা সুলতানা যুথী ও মোছা. নাবিলা ফেরদৌস।

এছাড়াও টাকা গণনার কাজে রূপালি ব্যাংকের এজিএম ও অন্যান্য কর্মকর্তা, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য এবং মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদরাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।

প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ মসজিদটির দানসিন্দুক গুলোতে নগদ টাকা-পয়সা দান করেন। এছাড়া গবাদিপশু, হাঁস-মুরগীসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্রও মসজিদটিতে দান করা হয়। লোকজনের বিশ্বাস এই মসজিদে দান করলে মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এ কারণে দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এখানে দান করে থাকেন। শুধু মুসলমান নয়, সব ধর্মের লোকজন এখানে টাকা-পয়সা দান করে থাকেন।

কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে পাগলা মসজিদ অন্যতম একটি প্রতিষ্ঠান। শহরের পশ্চিমে হারুয়া এলাকায় নরসুন্দা নদীর তীরে মাত্র ১০ শতাংশ ভূমির ওপর এই মসজিদটি গড়ে উঠেছিল। সময়ের বিবর্তনে আজ এ মসজিদের পরিধির সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এর খ্যাতিও। দিন দিন মসজিদের দানের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।