০৫:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাপ্তাহিক রোজা কি বারে রাখব

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৫৩:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৩
  • 35

রোজা আল্লাহর প্রিয় ইবাদত। রোজা আল্লাহ তাআলার জন্য রাখা হয়। আর রোজার প্রতিদান আল্লাহ তাআলা নিজ হাতে দিবেন বা রোজার প্রতিদান আল্লাহ নিজেই বলে হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন।আল্লাহ তাআলা বছরে মানুষের জন্য দীর্ঘ এক মাস রোজা পালনকে ফরজ করেছেন। যা আমরা রমজান মাসব্যাপী পালন করেছেন।রমজানরে ফরজ রোজা ছাড়াও রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বিশেষ বিশেষ দিনে রোজা রেখেছেন এবং তাঁর উম্মতকে রোজা রাখতে বলেছেন। তাছাড়া মানুষের মান্নতের রোজা রাখাও আবশ্যক। প্রিয়নবি (সা.) প্রতি সপ্তাহে ২দিন রোজা রাখতেন। আর তাহলো সোমবার ও বৃহস্পতিবারের দোয়া। এই দুই দিন রোজা রাখার ফজিলত : প্রথমত হলো, প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার দিন নফল রোযা রাখা সুন্নত ও মুস্তাহাব। কারণ, তা ছিল মহানবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের আমল। আর এই দুই দিন আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের নিকট বান্দার আমল পেশ করা হয়। মা আয়ি’শাহ (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন রোযা রাখাকে প্রাধান্য দিতেন।’ (তিরমিযী : ১০২৭)। সুতরাং, নবী (সা.) এর অনুসরণে মাসের যে কোন সোমবার অথবা বৃহস্পতিবারে ১টা, ২টা, ৩টা। এইভাবে একজন ব্যক্তির ইচ্ছা, সামর্থ্য ও সুযোগ অনুযায়ী যার যতগুলো ভালো লাগে, ততগুলো রোযা রাখা যাবে। এই ব্যপারে নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই, যত বেশি রোযা রাখা যায়, বান্দার জন্য তত উত্তম। দ্বিতীয়ত হলো, নবী (সা.) সোমবার দিন জন্ম গ্রহণ করেছিলেন, সোমবারেই তাঁকে নবুওয়ত দেওয়া হয় এবং সোমবার দিনেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন। আবু কাতাদাহ আনসারী রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কে সোমবার দিন রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছিলাম এবং এই দিনেই আমাকে নবুওয়াত প্রদান করা হয়েছিলো অথবা, এই দিনে আমার উপর (ক্বুরআন) নাযিল করা হয়েছে।’ (সহীহ মুসলিম : ১১৬২)।
তৃতীয়ত হলো, সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই দুইদিন আল্লাহ তাআ’লা তাঁর রহমতের উসীলায় মুসলমানদের গুনাহ মাফ করেন। তবে এমন দুইজন মুসলমান, যারা পরস্পর সম্পর্ক ছিন্ন করে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা এই গুনাহ থেকে তোওবা করে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন করবে, তারা এই ফযীলত থেকে বঞ্চিত থাকবে। আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা.) সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন রোযা রাখতেন। একদিন তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন রোযা রাখেন কেনো? তিনি বললেন, আল্লাহ তাআ’লা সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই দুই দিন প্রত্যেক মুসলমানের গুনাহ ক্ষমা করেন। কিন্তু পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারী সম্পর্কে (আল্লাহ বলেন), তাদেরকে ছেড়ে দাও, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা স্থাপন করে। (ইবনে মাজাহ : ১৭৪০)। রাসূল (সা.) বলেছেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর নিকট বান্দার আমল পেশ করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, রোযা থাকা অবস্থায় যেন আমার আমলনামা (আল্লাহর) কাছে পেশ করা হয়। (তিরমিযী : ৭৪৭)। সর্বশেষ, রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুবরণ করেছিলেন সোমবারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) সোমবারে মৃত্যুবরণ করার কারণে সোমবার ফযীলতপূর্ণ হয় নি।

বরং, সোমবারের বিশেষ মর্যাদা হচ্ছে রাসুলুল্লাহ (সা.) সোমবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এই দিন তাঁকে নবুওয়াত দেওয়া হয়েছিলো বা কুরআন নাযিল করা হয়েছিলো, এইদিনে বান্দার আমলনামা আল্লাহ তাআ’লার কাছে পেশ করা হয়, আল্লাহ তা’লা নিজ রহমতে সোমবার দিন মুসলিম বান্দাকে ক্ষমা করেন, এই কারণে। তবে মুসলিম বান্দা হিসেবে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এর উম্মত হিসেবে আমাদের জানা থাকা উচিত যে, “অধিকাংশ আলেমদের নিকট প্রসিদ্ধ এবং গ্রহণযোগ্য মত হচ্ছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এগারো (১১) হিজরীর রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ, রোজ সোমবার মৃত্যুবরণ করেছিলেন।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

সাপ্তাহিক রোজা কি বারে রাখব

Update Time : ০৫:৫৩:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৩

রোজা আল্লাহর প্রিয় ইবাদত। রোজা আল্লাহ তাআলার জন্য রাখা হয়। আর রোজার প্রতিদান আল্লাহ তাআলা নিজ হাতে দিবেন বা রোজার প্রতিদান আল্লাহ নিজেই বলে হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন।আল্লাহ তাআলা বছরে মানুষের জন্য দীর্ঘ এক মাস রোজা পালনকে ফরজ করেছেন। যা আমরা রমজান মাসব্যাপী পালন করেছেন।রমজানরে ফরজ রোজা ছাড়াও রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন উপলক্ষ্যে বিশেষ বিশেষ দিনে রোজা রেখেছেন এবং তাঁর উম্মতকে রোজা রাখতে বলেছেন। তাছাড়া মানুষের মান্নতের রোজা রাখাও আবশ্যক। প্রিয়নবি (সা.) প্রতি সপ্তাহে ২দিন রোজা রাখতেন। আর তাহলো সোমবার ও বৃহস্পতিবারের দোয়া। এই দুই দিন রোজা রাখার ফজিলত : প্রথমত হলো, প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার দিন নফল রোযা রাখা সুন্নত ও মুস্তাহাব। কারণ, তা ছিল মহানবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের আমল। আর এই দুই দিন আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের নিকট বান্দার আমল পেশ করা হয়। মা আয়ি’শাহ (রা.) বলেন, ‘আল্লাহর রাসুল (সা.) সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন রোযা রাখাকে প্রাধান্য দিতেন।’ (তিরমিযী : ১০২৭)। সুতরাং, নবী (সা.) এর অনুসরণে মাসের যে কোন সোমবার অথবা বৃহস্পতিবারে ১টা, ২টা, ৩টা। এইভাবে একজন ব্যক্তির ইচ্ছা, সামর্থ্য ও সুযোগ অনুযায়ী যার যতগুলো ভালো লাগে, ততগুলো রোযা রাখা যাবে। এই ব্যপারে নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই, যত বেশি রোযা রাখা যায়, বান্দার জন্য তত উত্তম। দ্বিতীয়ত হলো, নবী (সা.) সোমবার দিন জন্ম গ্রহণ করেছিলেন, সোমবারেই তাঁকে নবুওয়ত দেওয়া হয় এবং সোমবার দিনেই তিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন। আবু কাতাদাহ আনসারী রাদিয়াল্লাহু আ’নহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) কে সোমবার দিন রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘এই দিনে আমি জন্মগ্রহণ করেছিলাম এবং এই দিনেই আমাকে নবুওয়াত প্রদান করা হয়েছিলো অথবা, এই দিনে আমার উপর (ক্বুরআন) নাযিল করা হয়েছে।’ (সহীহ মুসলিম : ১১৬২)।
তৃতীয়ত হলো, সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই দুইদিন আল্লাহ তাআ’লা তাঁর রহমতের উসীলায় মুসলমানদের গুনাহ মাফ করেন। তবে এমন দুইজন মুসলমান, যারা পরস্পর সম্পর্ক ছিন্ন করে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা এই গুনাহ থেকে তোওবা করে পুনরায় সম্পর্ক স্থাপন করবে, তারা এই ফযীলত থেকে বঞ্চিত থাকবে। আবু হুরাইরাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা.) সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন রোযা রাখতেন। একদিন তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি সোমবার ও বৃহস্পতিবার দিন রোযা রাখেন কেনো? তিনি বললেন, আল্লাহ তাআ’লা সোমবার ও বৃহস্পতিবার এই দুই দিন প্রত্যেক মুসলমানের গুনাহ ক্ষমা করেন। কিন্তু পরস্পর সম্পর্ক ছিন্নকারী সম্পর্কে (আল্লাহ বলেন), তাদেরকে ছেড়ে দাও, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা নিজেদের মধ্যে সমঝোতা স্থাপন করে। (ইবনে মাজাহ : ১৭৪০)। রাসূল (সা.) বলেছেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর নিকট বান্দার আমল পেশ করা হয়। তাই আমি পছন্দ করি যে, রোযা থাকা অবস্থায় যেন আমার আমলনামা (আল্লাহর) কাছে পেশ করা হয়। (তিরমিযী : ৭৪৭)। সর্বশেষ, রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুবরণ করেছিলেন সোমবারে। রাসুলুল্লাহ (সা.) সোমবারে মৃত্যুবরণ করার কারণে সোমবার ফযীলতপূর্ণ হয় নি।

বরং, সোমবারের বিশেষ মর্যাদা হচ্ছে রাসুলুল্লাহ (সা.) সোমবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, এই দিন তাঁকে নবুওয়াত দেওয়া হয়েছিলো বা কুরআন নাযিল করা হয়েছিলো, এইদিনে বান্দার আমলনামা আল্লাহ তাআ’লার কাছে পেশ করা হয়, আল্লাহ তা’লা নিজ রহমতে সোমবার দিন মুসলিম বান্দাকে ক্ষমা করেন, এই কারণে। তবে মুসলিম বান্দা হিসেবে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এর উম্মত হিসেবে আমাদের জানা থাকা উচিত যে, “অধিকাংশ আলেমদের নিকট প্রসিদ্ধ এবং গ্রহণযোগ্য মত হচ্ছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) এগারো (১১) হিজরীর রবিউল আউয়াল মাসের ১২ তারিখ, রোজ সোমবার মৃত্যুবরণ করেছিলেন।