০৭:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪, ৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদ (প্রকাশ নাহিদ মামা )সহ দু’জনের জামিন নামঞ্জুর

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:২৭:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩
  • 54

ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ও বকচরা আহমেদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাংবাদিক রমজান আলীসহ চার জনকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করার ঘটনার মামলায় কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদসহ দুই আসামিকে জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

রবিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির হয়ে উক্ত আাসামীরা জামিন আবেদন জানালে আদালতের বিচারক মো. জিয়ারুল ইসলাম তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এ নিয়ে এ মামলায় মোট তিন আসামির জেল হাজতে রয়েছে।

জামিন না মঞ্জুরকৃত আসামিরা হলো- শহরের ইটাগাছা এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দীনের ছেলে ও এ মামলার প্রধান আসামী কিশোর গ্যাং লিডার মো. নাহিদ (২৬) প্রকাশ নাহিদ মামা এবং বাঁকাল এলাকার মো. সাবদুল’র ছেলে ও এ মামলার তিন নম্বর আসামী মোঃ সিরাজুল ইসলাম (২৭)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ২৩ অক্টোবর সোমবার সকাল ১১টার দিকে কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদ ও রিপনসহ তাদের গুন্ডাবাহিনী হাতে রাম দা, লোহার রড, ছুরি, লোহার হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠি সহকারে বেআইনী জনতা দলবদ্ধ হয়ে সাতক্ষীরা শহরের বাঁকালস্থ সাংবাদিক রমজান আলীর বাড়িতে অনধিকারভাবে প্রবেশ করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাচ করতে থাকে। এতে রমজান আলী প্রতিবাদ করলে ৪নং আসামী আব্দুল গফফারের হুকুমে নাহিদ(প্রকাশ নাহিদ মামা) , রিপন, সিরাজুলসহ অন্যান্য আসামীরা তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকে। এসময় তার ডাক চিৎকারে বোন সাজিদা খাতুন, ভাগ্নে ফাহিম সরদার ও ভাইপো (রমজানের ছেলে) ফারহান ফেরদৌস তাকে রক্ষা করতে আসলে উক্ত আসামীরা তাদেরও মারপিট করতে থাকে।

একপর্যায়ে ১নং আসামী নাহিদ তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে রমজানের পেটে নিচে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এরপর ২নং আসামী রিপন হত্যার উদ্দেশ্যে জিআই পাইপ দিয়ে বোন সাজিদাকে মারতে গেলে তার বাম চোখে লেগে থ্যাতলানোসহ রক্তাক্ত জখম হয়। ৩নং আসামী সিরাজুল হত্যার করার উদ্দেশ্যে ভাইপো ফারহানকে রামদা দিয়ে তার পিঠের বাম পাশে কোপ মারে। এতে সে গুরুতর জখম হয়। আসামী আব্দুল গফফার হত্যার উদ্দেশ্যে ভাগ্নে ফাহিমকে ধারালো দা দিয়ে মাথায় কোপ মারতে গেলে সে মাথা সরিয়ে নিয়ে হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার ডান হাতের কনুইয়ের নিচে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় রমজান ছাড়াও তার বোন সাজিদা, ভাইপো ফারহান ও ভাগ্নে ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। আহতরা সবাই সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎস নিয়েছেন। আহতদের মধ্যে রমজান আলীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ ঘটনায় আহত রমজান আলীর মেঝ ভাই আব্দুর রহমান বাদী থানায় নাহিদ, রিপন, সিরাজুল গফফারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পরদিন সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় রবিবার নাহিদ ও সিরাজুল আদালতের কাছে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন জানালে আদালতের বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে আব্দুল গফফার এ মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন।

এদিকে, কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদের বিরুদ্ধে এর আগেও শহরের ইটাগাছা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে মুজাহিদুর রহমান অন্তরকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো দা দিয়ে বাম হাতের ৪টি আঙ্গুল কেটে নেয়া ও একই এলাকার আব্দুস সবুরের মালিকানাধীন আলম এন্টার প্রাইজের ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

এ মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এএসএম আশরাফুল আলম উক্ত দুই আসামীর আদালত কর্তৃক জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদ (প্রকাশ নাহিদ মামা )সহ দু’জনের জামিন নামঞ্জুর

Update Time : ১১:২৭:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ নভেম্বর ২০২৩

ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের চেতনা পত্রিকার সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি ও বকচরা আহমেদিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাংবাদিক রমজান আলীসহ চার জনকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করার ঘটনার মামলায় কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদসহ দুই আসামিকে জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

রবিবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল আদালতে হাজির হয়ে উক্ত আাসামীরা জামিন আবেদন জানালে আদালতের বিচারক মো. জিয়ারুল ইসলাম তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এ নিয়ে এ মামলায় মোট তিন আসামির জেল হাজতে রয়েছে।

জামিন না মঞ্জুরকৃত আসামিরা হলো- শহরের ইটাগাছা এলাকার মৃত গিয়াস উদ্দীনের ছেলে ও এ মামলার প্রধান আসামী কিশোর গ্যাং লিডার মো. নাহিদ (২৬) প্রকাশ নাহিদ মামা এবং বাঁকাল এলাকার মো. সাবদুল’র ছেলে ও এ মামলার তিন নম্বর আসামী মোঃ সিরাজুল ইসলাম (২৭)।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গত ২৩ অক্টোবর সোমবার সকাল ১১টার দিকে কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদ ও রিপনসহ তাদের গুন্ডাবাহিনী হাতে রাম দা, লোহার রড, ছুরি, লোহার হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠি সহকারে বেআইনী জনতা দলবদ্ধ হয়ে সাতক্ষীরা শহরের বাঁকালস্থ সাংবাদিক রমজান আলীর বাড়িতে অনধিকারভাবে প্রবেশ করে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাচ করতে থাকে। এতে রমজান আলী প্রতিবাদ করলে ৪নং আসামী আব্দুল গফফারের হুকুমে নাহিদ(প্রকাশ নাহিদ মামা) , রিপন, সিরাজুলসহ অন্যান্য আসামীরা তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকে। এসময় তার ডাক চিৎকারে বোন সাজিদা খাতুন, ভাগ্নে ফাহিম সরদার ও ভাইপো (রমজানের ছেলে) ফারহান ফেরদৌস তাকে রক্ষা করতে আসলে উক্ত আসামীরা তাদেরও মারপিট করতে থাকে।

একপর্যায়ে ১নং আসামী নাহিদ তার হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে রমজানের পেটে নিচে ছুরিকাঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এরপর ২নং আসামী রিপন হত্যার উদ্দেশ্যে জিআই পাইপ দিয়ে বোন সাজিদাকে মারতে গেলে তার বাম চোখে লেগে থ্যাতলানোসহ রক্তাক্ত জখম হয়। ৩নং আসামী সিরাজুল হত্যার করার উদ্দেশ্যে ভাইপো ফারহানকে রামদা দিয়ে তার পিঠের বাম পাশে কোপ মারে। এতে সে গুরুতর জখম হয়। আসামী আব্দুল গফফার হত্যার উদ্দেশ্যে ভাগ্নে ফাহিমকে ধারালো দা দিয়ে মাথায় কোপ মারতে গেলে সে মাথা সরিয়ে নিয়ে হাত দিয়ে ঠেকাতে গেলে তার ডান হাতের কনুইয়ের নিচে লেগে গুরুতর রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় রমজান ছাড়াও তার বোন সাজিদা, ভাইপো ফারহান ও ভাগ্নে ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। আহতরা সবাই সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎস নিয়েছেন। আহতদের মধ্যে রমজান আলীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ ঘটনায় আহত রমজান আলীর মেঝ ভাই আব্দুর রহমান বাদী থানায় নাহিদ, রিপন, সিরাজুল গফফারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে পরদিন সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় রবিবার নাহিদ ও সিরাজুল আদালতের কাছে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন জানালে আদালতের বিচারক তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে আব্দুল গফফার এ মামলায় জেল হাজতে রয়েছেন।

এদিকে, কিশোর গ্যাং লিডার নাহিদের বিরুদ্ধে এর আগেও শহরের ইটাগাছা এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে মুজাহিদুর রহমান অন্তরকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো দা দিয়ে বাম হাতের ৪টি আঙ্গুল কেটে নেয়া ও একই এলাকার আব্দুস সবুরের মালিকানাধীন আলম এন্টার প্রাইজের ৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা ছিনতাইসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

এ মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এএসএম আশরাফুল আলম উক্ত দুই আসামীর আদালত কর্তৃক জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।