আগামী ১০ ডিসেম্বর এক দফার আন্দোলন শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, এক দফার আন্দোলনে সবাই প্রস্তুতি নিন। ওই আন্দোলনে সরকার পদত্যাগে বাধ্য হবে। দেশের মানুষ চরম দুর্ভোগে অনাহারে- অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। মানুষের জীবন-জীবিকা সংকোচিত হয়ে আসছে। কিন্তু জনগনের প্রতি সরকারের কোন মমত্ববোধ নেই।
আজ শনিবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ২টায় ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের উজান কাশিয়ার চর গ্রামে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া, আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ্যাগ্রিকালচারিস্টস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এ্যাব) এর আয়োজনে এই দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা শেষে স্থানীয় শতাধিক প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে কৃষি বীজ, গাছের চারা, ছাগল ও মুরগী বিতরণ করেন প্রধান অতিথি।
অনুষ্ঠানে এমরান সালেহ প্রিন্স আরও বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতির অবিচ্ছেদ্য। তিনি এদেশের মানুষের ভাবনাকে ধারণ ও লালন করেন। এদেশের কৃষি ও কৃষককে ভালোবাসেন তিনি। তাঁর জন্মবার্ষিকীতে এ্যাবের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।
রাষ্ট্র পরিচালনা ও নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের একগুঁয়েমি ও ফ্যাসিবাদী দমন নিপীড়ন করে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, দেশ, জনগণ ও গণতন্ত্রের প্রতি নূন্যতম শ্রদ্ধাবোধ থাকলে আওয়ামীলীগের উচিত একগুঁয়েমি পরিহার করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গণদাবী মেনে নিয়ে পদত্যাগ করা। অন্যথায় পরিণতির জন্য তাদেরকেই দায়ী থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে আজ গণতন্ত্রের নামে ফ্যাসিবাদী ও কর্তৃত্ববাদী শাসন চলছে। নির্বাচনের নামে প্রহসন সৃস্টি করে জনগনের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। দুর্ণীতি, লুটপাট করে দেশের অর্থনীতি লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। ব্যাংকে ডলার নাই, টাকা নাই, ব্যাবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছে না। বিদেশে অধ্যায়নরত ছাত্রদেরকেও ডলার পাঠানো যাচ্ছে না।এ রকম ভয়াবহ পরিস্থিতিতেও ক্ষমতাসীনদের লুটপাট থেমে নেই। তারা বেনামে, ভূয়া কোম্পানি বানিয়ে ব্যাংক থেকে জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করছে। অথচ অভাবের তাড়নায় গ্রাম,শহরে চুরি ডাকাতি বেড়ে গেছে। আর তাই প্রধানমন্ত্রী ঘরে চুরির ভয়ে টাকা না রেখে ব্যাংকে রাখতে বলেছেন, কিন্তু সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট ব্যাংক ডাকাতদের তারা আটকাতে পারছেন না। দেশ আজ চোর ডাকাতদের কবলে।
অনুষ্ঠানে এমরান সালেহ প্রিন্স আরও বলেন, সরকার নিজেদের ব্যার্থতা, দুর্ণীতি, লুটপাট আড়াল করতে মিথ্যাচার করে নিজেদের অধীনে প্রহসনের নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করছে। জনগণের কাছে এই সরকারের গ্রহনযোগ্যতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা তলানীতে ঠেকেছে। আর এ কারণেই তারা আস্থাহীনতায় ভূগছে। এখন তারা প্রকাশ্যে হাত তুলে ওয়াদা করাতে হচ্ছে তাদেরকে ভোট দেয়ার জন্য। কিন্তু তাদের ওয়াদাবদ্ধ হবার আহ্বানে জনগণ দূরের কথা, তাদের নেতাকর্মীরাও সাড়া দিচ্ছে না।
আলোচনা সভায় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব মাহাবুবুর রশিদ গোলাপের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামিমুর রহমান শামীম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এ্যাবের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কৃষিবিদ রাশিদুল হাসান হারুন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ অধ্যাপক ড.জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান, ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, বিএনপি নেতা হাফেজ আজিজুল হক, এ্যাব নেতা কৃষিবিদ ড.শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড.আবদুল কুদ্দুস, অধ্যাপক ড.শহীদুল হক, অধ্যাপক ড. রুহুল আমিন, অধ্যাপক খায়রুল হাসান ভূইয়া, অধ্যাপক ড. খায়রুল ইসলাম বাদল,অধ্যাপক ড.মনির, অধ্যাপক ড.কাফি,অধ্যাপক ড. মো.ইলিয়াস, অধ্যাপক ড. আবদুল কুদ্দুস, অধ্যাপক তোফাজ্জল হোসেন,অধ্যাপক মুরাদ হোসেন, অধ্যাপক আলী হোসেন, কৃষিবিদ আহসান হাবিব প্রান্ত, দীপা, সোহেল নূরন্নবী ভূইয়া শ্যামল, হেলাল উদ্দিন, আবুল খায়ের দীপু, সারোয়ার হোসেন, ইয়ার মাহমুদ, জসিম উদ্দিন জনি, সবুর, মনির আহমেদ, শাহাদাত পারভেজ, মাহবুবুর রহমান মুন্না, মাহবুবুল আলম টোরন, রফিক প্রমূখ। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এ্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কৃষিবিদ প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ, একেএম জোনায়েদ উল নূর টিটু।