কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুই ট্রেনের ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে। সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে এ সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
দুর্ঘটনায় উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট। এ ছাড়া র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্য, রেলওয়ে ও জেলা পুলিশের সদস্যরাও উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছেন।ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টাফ অফিসার (মিডিয়া) শাহজাহান সিকদার বলেন, এই দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা শতাধিক হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জানা যায়, একটি মালবাহী ট্রেন ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিল, আর আন্তঃনগর এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেন যাচ্ছিল ভৈরব থেকে ঢাকায়। পরে ভৈরব রেল স্টেশনের আউটার পয়েন্টে ক্রসিংয়ে যাত্রীবাহী ট্রেনের শেষ দুই বগিতে ধাক্কা দেয় মালবাহী ট্রেনটি। এ সময় যাত্রীবাহী ট্রেনের কয়েকটি বগি উল্টে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতদের উদ্ধার কাজে এগিয়ে আসেন স্থানীয়রা। পরে ফায়ার সার্ভিস ও র্যাব সদস্যরা উদ্ধারকাজে যোগ দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উল্টে যাওয়া বগির নিচে অনেক যাত্রী চাপা পড়েছে। এ ছাড়া রেললাইনের ওপর অনেকের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম সমকালকে জানান, মালবাহী ট্রেনটি সিগন্যাল না অমান্য করায় সংঘর্ষ হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। মালবাহী ট্রেনটির ভৈরব স্টেশনের আউটারে থাকার কথা ছিল। কিন্তু ট্রেনটি সিগন্যাল অমান্য করে স্টেশনে ঢুকে যায়।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে পারেননি তিনি।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ-উদ-দৌলা জানান, এগারসিন্দুর গোধূলি ট্রেনটি ভৈরব রেলস্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার পরপরই স্টেশনের আউটারে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার পর পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে। এ দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।মো. দিদার নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমার ধারণা মানুষ আরও মারা গেছে। চাপা পরে আছে। তিনি বলেন, সারাজীবন দেখলাম এগারো সিন্দুরকে এক লাইনে দেয় আজ দিলো অন্য লাইনে। প্রথমে স্থানীয় লোকরা এগিয়ে না আসলে আরও অনেক লোক মারা যেত। তিনি বলেন, আমরা এসে দেখি গাড়ি ছিন্নভিন্ন। মানুষ পরে আছে।