০২:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ক্রি‌কেট‌কে বিদায় জানা‌লেন তা‌মিম ইকবাল

২০২২ সালের ১৭ জুলাই, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানিয়েছিলেন তামিম ইকবাল।
কাকতালীয়ভাবেই একবছর পর সেই জুলাই মাসেই ওয়ানডে ও টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি।
দেশসেরা এই ওপেনারের বিদায়ের মাধ্যমে তথাকথিত পঞ্চপাণ্ডবের আরও একজনকে হারাল বাংলাদেশের ক্রিকেট।
তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তামিম বিদায় নিলেও রেখে গেছেন নানা সুখস্মৃতি।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কেমন ছিল তামিমের ১৬ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ার :

সময়টা ২০০৫, ইংল্যান্ড অনুর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে ৭১ বলে ১১২ রানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি
হাঁকিয়ে নিজের আগমনী বার্তা দিয়েছিলেন তামিম।
সেই ম্যাচে তামিমের দুর্দান্ত শতকে ভর করে দাপুটে জয় পায় বাংলাদেশ।
সময়ের সাথে নিজেকে আরও পরিণত করেন তামিম।
শেষমেশ সুযোগ মিলে যায় জাতীয় দলের জার্সিতে খেলার।

২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারীর ৯ তারিখ, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের।
সে সময় তামিমের ব্যাটিং সামর্থ্য সম্পর্কে খুব একটা ধারণা পাওয়া না গেলেও ২০০৭
বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে তামিম দিয়েছেন সামর্থ্যের প্রমাণ।

জহির খানের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে তামিম দিয়েছিলেন
আস্থার প্রতিদান। সেই শটটি বিশ্বকাপের সেরা শটগুলোর মধ্যে অন্যতম।
এরপর বাংলাদেশের জার্সিতে আরও ২৩৯ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন তামিম।
সবমিলিয়ে ওয়ানডেতে ২৪১ ম্যাচে ৩৬.৬২ গড়ে ৮৩১৩ রান করেন।
১৪টি শতকের পাশাপাশি ৫৬টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন এই ড্যাশিং ওপেনার।

ওয়ানডের মতো টেস্টেও তামিম দিয়েছেন আস্থার প্রতিদান।
২০০৮ সালে ডানেডিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রিকেটের রাজকীয় ফরম্যাটে অভিষেক হয় তামিমের।
সাদা পোশাকে ৭০ টেস্টে ৩৮.৮৯ গড়ে ৫১৩৪ রান তার নামের পাশে। রয়েছে ১০টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৩১টি ফিফটি।
টেস্টে তার সর্বোচ্চ ২০৬ রান।
তবে নানা সময়ে চোটের কারণে ক্যারিয়ারের বেশ কয়েকটি টেস্টে খেলা হয়নি তার।

২০০৭ এর সেপ্টেম্বরে কেনিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় তামিমের।
ওয়ানডে ও টেস্টের তুলনায়, তামিমের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার অনেকটাই সাদামাটা।
ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তামিম।
টি-টোয়েন্টিতে ৭৮ ম্যাচে ২৪.০৮ গড়ে ১৭৫৮ রান করেন তিনি।
এই ফরম্যাটে একমাত্র সেঞ্চুরিটি হাঁকান ভারতের ধর্মশালায় ২০১৬ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে ওমানের বিপক্ষে।

তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটার তামিম।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তামিমের সেঞ্চুরির সংখ্যা মোট ২৫টি।
বাংলাদেশের আর কোনো ক্রিকেটারের যা নেই।
এ ছাড়া সব সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ চার (১৭৫৩টি) ও ছয় (১৮৮টি) হাঁকিয়েছেন এই বাঁহাতি ওপেনার।

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সুযোগ ছিল ওয়ানডে ফরম্যাটে ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করার।
তবে অবসরের ঘোষণার মাধ্যমে সেই সুযোগ হাতছাড়া করলেন তামিম।
আসন্ন ভারত বিশ্বকাপ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল তামিমের।
অধিনায়ক হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দেবেন, মেন্টর হিসেবে মাশরাফীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন; আরও কত কি…, তবে কে জানত
অভিমানী তামিম বিশ্বকাপের ঠিক তিন মাস আগে এভাবে নিজেকে গুটিয়ে নেবেন তামিম।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ: আপিল করবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ক্রি‌কেট‌কে বিদায় জানা‌লেন তা‌মিম ইকবাল

Update Time : ০৫:০৮:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০২৩

২০২২ সালের ১৭ জুলাই, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানিয়েছিলেন তামিম ইকবাল।
কাকতালীয়ভাবেই একবছর পর সেই জুলাই মাসেই ওয়ানডে ও টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি।
দেশসেরা এই ওপেনারের বিদায়ের মাধ্যমে তথাকথিত পঞ্চপাণ্ডবের আরও একজনকে হারাল বাংলাদেশের ক্রিকেট।
তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তামিম বিদায় নিলেও রেখে গেছেন নানা সুখস্মৃতি।

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কেমন ছিল তামিমের ১৬ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ার :

সময়টা ২০০৫, ইংল্যান্ড অনুর্ধ্ব-১৯ দলের বিপক্ষে ৭১ বলে ১১২ রানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি
হাঁকিয়ে নিজের আগমনী বার্তা দিয়েছিলেন তামিম।
সেই ম্যাচে তামিমের দুর্দান্ত শতকে ভর করে দাপুটে জয় পায় বাংলাদেশ।
সময়ের সাথে নিজেকে আরও পরিণত করেন তামিম।
শেষমেশ সুযোগ মিলে যায় জাতীয় দলের জার্সিতে খেলার।

২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারীর ৯ তারিখ, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় তামিমের।
সে সময় তামিমের ব্যাটিং সামর্থ্য সম্পর্কে খুব একটা ধারণা পাওয়া না গেলেও ২০০৭
বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে তামিম দিয়েছেন সামর্থ্যের প্রমাণ।

জহির খানের বলে ডাউন দ্য উইকেটে এসে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে তামিম দিয়েছিলেন
আস্থার প্রতিদান। সেই শটটি বিশ্বকাপের সেরা শটগুলোর মধ্যে অন্যতম।
এরপর বাংলাদেশের জার্সিতে আরও ২৩৯ টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেন তামিম।
সবমিলিয়ে ওয়ানডেতে ২৪১ ম্যাচে ৩৬.৬২ গড়ে ৮৩১৩ রান করেন।
১৪টি শতকের পাশাপাশি ৫৬টি অর্ধশতক হাঁকিয়েছেন এই ড্যাশিং ওপেনার।

ওয়ানডের মতো টেস্টেও তামিম দিয়েছেন আস্থার প্রতিদান।
২০০৮ সালে ডানেডিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রিকেটের রাজকীয় ফরম্যাটে অভিষেক হয় তামিমের।
সাদা পোশাকে ৭০ টেস্টে ৩৮.৮৯ গড়ে ৫১৩৪ রান তার নামের পাশে। রয়েছে ১০টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৩১টি ফিফটি।
টেস্টে তার সর্বোচ্চ ২০৬ রান।
তবে নানা সময়ে চোটের কারণে ক্যারিয়ারের বেশ কয়েকটি টেস্টে খেলা হয়নি তার।

২০০৭ এর সেপ্টেম্বরে কেনিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয় তামিমের।
ওয়ানডে ও টেস্টের তুলনায়, তামিমের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ার অনেকটাই সাদামাটা।
ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তামিম।
টি-টোয়েন্টিতে ৭৮ ম্যাচে ২৪.০৮ গড়ে ১৭৫৮ রান করেন তিনি।
এই ফরম্যাটে একমাত্র সেঞ্চুরিটি হাঁকান ভারতের ধর্মশালায় ২০১৬ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে ওমানের বিপক্ষে।

তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরি করা বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাটার তামিম।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তামিমের সেঞ্চুরির সংখ্যা মোট ২৫টি।
বাংলাদেশের আর কোনো ক্রিকেটারের যা নেই।
এ ছাড়া সব সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ চার (১৭৫৩টি) ও ছয় (১৮৮টি) হাঁকিয়েছেন এই বাঁহাতি ওপেনার।

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সুযোগ ছিল ওয়ানডে ফরম্যাটে ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করার।
তবে অবসরের ঘোষণার মাধ্যমে সেই সুযোগ হাতছাড়া করলেন তামিম।
আসন্ন ভারত বিশ্বকাপ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল তামিমের।
অধিনায়ক হিসেবে দলকে নেতৃত্ব দেবেন, মেন্টর হিসেবে মাশরাফীকে সঙ্গে নিয়ে যাবেন; আরও কত কি…, তবে কে জানত
অভিমানী তামিম বিশ্বকাপের ঠিক তিন মাস আগে এভাবে নিজেকে গুটিয়ে নেবেন তামিম।