কৌশল পাল্টে ফুটপাত দখলমুক্ত করার অভিযানে নামছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। এজন্য রাজধানীর সড়কগুলোকে লাল, হলুদ ও সবুজ রঙে চিহ্নিত করা হবে। লাল চিহ্নিত সড়কে হাঁটার পথে কোনো হকার বসতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দক্ষিণের মেয়র।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফুটপাত দখলের সাথে রাজনীতি ও বিরাট অংকের লেনদেন জড়িত। এই চক্র ভাঙা না গেলে কোনো কৌশলই কাজে লাগবে না।
অসংখ্য অভিযান হয়েছে। কিন্তু গুলিস্তানের ফুটপাত কখনই দখলমুক্ত করা যায়নি। সকালে উচ্ছেদ আর বিকেলেই দখল। বরাবর এমনটাই দেখেছে নগরবাসী।
দক্ষিণের নগর ভবন থেকে পা ফেলা দূরত্বে গুলিস্তান, পল্টন, বায়তুল মোকাররম। কিন্তু এসব এলাকার সব ফুটপাতই হকারদের দখলে। পথচারীদের হাঁটার কোন সুযোগ কোথাও নেই।
ফুটপাতে চাঁদাবাজি হয়। এটা এখন দিনের আলোর মতোই সত্য। একেকটা দোকান থেকে রোজ চার থেকে পাঁচশ’ টাকা চাঁদা নেয়া হয়।
কিন্তু এভাবে আর কতদিন? এবার রাশ টানতে চায় দক্ষিণের নগর প্রশাসন। পথচারীদের ফুটপাত পথচারীদেরই ফিরিয়ে দিতে চায় সংস্থাটি।
সেই সাথে দক্ষিণের সড়কগুলোকে লাল, হলুদ ও সবুজ রঙে চিহ্নিত করা হচ্ছে। লাল মানে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। ফুটপাতে কোনো হকার বসতে দেয়া হবে না। শুরু হবে গুলিস্তান থেকে।
ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, নির্দিষ্ট রাস্তায় নির্দিষ্ট সড়ক চিহ্নিত করা হবে। অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো লাল চিহ্নিত করা হবে। হলুদ ও সবুজ চিহ্নিতও করা হবে।
লাল চিহ্নিত এলাকায় সড়কে হাঁটার পথে হকার বসতে পারবে না। লাল চিহ্নিত অতি গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো থেকে হকার সরানোর অভিযান ও শুরু হবে।
এ ধরনের পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও আদৌ ফুটপাত দখলমুক্ত হবে কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছেন নগরবিদরা। অতীতের সব অভিযানের অভিজ্ঞতা থেকেই তাদের এই সংশয়।
নগরবিদ আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব ও চাঁদা বাণিজ্য বন্ধ না হলে ফুটপাত দখলমুক্ত হবে না। ফুটপাত বাণিজ্যে বড় ধরনের একটি চক্র জড়িত থাকে।
রাজধানীতে রোজই হকার বাড়ছে। অর্থনীতিতেও তাদের অবদান আছে। তাই বায়োমেট্রিক সার্ভের মাধ্যমে হকারদের একটি ডাটাবেইজ তৈরির পরামর্শও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সেই ডাটাবেইজ থেকে তথ্য নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ওয়ার্ডভিত্তিক হকার ব্যবস্থাপনা করা যাবে বলেও মনে করছেন নগরবিদরা।