০৮:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন সাবেক স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসপুত্র

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:০৯:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০২২
  • 30

ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন সাবেক স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসপুত্র ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। বংবং নামেই বেশি পরিচিত তিনি। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রাজধানী ম্যানিলায় শপথের মধ্যে দিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুয়ার্তের জায়গা নিলেন তিনি। এর আগে গত ১৯ জুন নতুন ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রদ্রিগোর মেয়ে সারা দুতার্তে।আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যানিলার ন্যাশনাল মিউজিয়ামে শপথ নেন মার্কোস জুনিয়র। এ সময় তার স্ত্রীসহ তিন সন্তান উপস্থিত ছিলেন। শপথ উপলক্ষে ছিল কুচকাওয়াজ প্রদর্শন অনুষ্ঠান। ফাইটার জেট প্রদর্শনীও ছিল এই আয়োজনে। যেকোনো অপ্রতিকর পরিস্থিতি এড়াতে রাজধানীজুড়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা হয়।

শপথের আগে মালাকানাং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বংবংকে স্বাগত জানান বিদায়ী প্রেসিডেন্ট দুতের্তে। এসময় তার পরণে ছিল ঐতিহ্যবাহী সাদা শার্ট। দুতের্তের পরণেও ছিল সাদা শার্ট। তবে শার্টের কলারের কাছের বোতাম খোলা, হাতা গোটানো।

গত মাসে ফিলিপিন্সের জাতীয় নির্বাচনে লেনি রব্রেদোকে হারিয়ে ৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তিনি। এতে ৩৬ বছর পর আবারো দেশটিতে ক্ষমতায় আসলো মার্কোস পরিবার। ১৯৮৬ সালে এক জনপ্রিয় অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় পরিবারটি।

কয়েকদিন আগেই কর ফাঁকির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন মার্কোস জুনিয়র। কিন্তু তারপরও তার প্রেসিডেন্ট হতে কোনো বাধা নেই বলে রায় দিয়েছে ম্যানিলার সুপ্রিম কোর্ট।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বংবংয়ের এই দায়িত্বগ্রহণের মধ্যদিয়ে স্বৈরশাসক মার্কোস পরিবারের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারে কয়েক দশক ধরে যে চেষ্টা চলছিল তা পূর্ণতা পেলো। তার বাবা ফার্দিনান্দ মার্কোস ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত ফিলিপিন্সের নেতৃত্বে ছিলেন। তার ওই শাসনকাল জরুরি অবস্থা, ব্যাপক মানবাধিকার লংঘন, দুর্নীতি ও দারিদ্র্যের আমল হিসেবে কুখ্যাত।

মার্কোসের শাসনের অবসান ঘটে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে এলে ২৮ বছর বয়সী বংবংসহ পুরো মার্কোস পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়ে হাওয়াইয়ে আশ্রয় নেয়। ১৯৯১ সালে দেশে ফেরার পর থেকে মার্কোস জুনিয়র তার বাবার শাসনামলকে সমৃদ্ধি ও উন্নতির ‘সোনালী সময়’ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগ্রাসী প্রচারণায় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে যান বংবং। তিনি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সেই তরুণ ভোটারদের কাছে, স্বৈরশাসকের সময়কাল দেখার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা যাদের নেই।

রানিং মেট হিসেবে সারা যুক্ত হওয়ায় বংবংয়ের নির্বাচনী প্রচার আরও গতি পায়। মার্কোস-সারা জোটবদ্ধ হওয়ায় দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দুই অঞ্চল, মার্কোসদের উত্তর ফিলিপিন্স আর দুতের্তের দক্ষিণ মিন্দানাও দ্বীপ, একীভূত হয়ে দেশটির রাজনীতিতে বিরাট শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন সাবেক স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসপুত্র

Update Time : ১১:০৯:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জুন ২০২২

ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন সাবেক স্বৈরশাসক ফার্দিনান্দ মার্কোসপুত্র ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র। বংবং নামেই বেশি পরিচিত তিনি। বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) রাজধানী ম্যানিলায় শপথের মধ্যে দিয়ে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুয়ার্তের জায়গা নিলেন তিনি। এর আগে গত ১৯ জুন নতুন ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট রদ্রিগোর মেয়ে সারা দুতার্তে।আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যানিলার ন্যাশনাল মিউজিয়ামে শপথ নেন মার্কোস জুনিয়র। এ সময় তার স্ত্রীসহ তিন সন্তান উপস্থিত ছিলেন। শপথ উপলক্ষে ছিল কুচকাওয়াজ প্রদর্শন অনুষ্ঠান। ফাইটার জেট প্রদর্শনীও ছিল এই আয়োজনে। যেকোনো অপ্রতিকর পরিস্থিতি এড়াতে রাজধানীজুড়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা হয়।

শপথের আগে মালাকানাং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বংবংকে স্বাগত জানান বিদায়ী প্রেসিডেন্ট দুতের্তে। এসময় তার পরণে ছিল ঐতিহ্যবাহী সাদা শার্ট। দুতের্তের পরণেও ছিল সাদা শার্ট। তবে শার্টের কলারের কাছের বোতাম খোলা, হাতা গোটানো।

গত মাসে ফিলিপিন্সের জাতীয় নির্বাচনে লেনি রব্রেদোকে হারিয়ে ৬০ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তিনি। এতে ৩৬ বছর পর আবারো দেশটিতে ক্ষমতায় আসলো মার্কোস পরিবার। ১৯৮৬ সালে এক জনপ্রিয় অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় পরিবারটি।

কয়েকদিন আগেই কর ফাঁকির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন মার্কোস জুনিয়র। কিন্তু তারপরও তার প্রেসিডেন্ট হতে কোনো বাধা নেই বলে রায় দিয়েছে ম্যানিলার সুপ্রিম কোর্ট।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বংবংয়ের এই দায়িত্বগ্রহণের মধ্যদিয়ে স্বৈরশাসক মার্কোস পরিবারের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারে কয়েক দশক ধরে যে চেষ্টা চলছিল তা পূর্ণতা পেলো। তার বাবা ফার্দিনান্দ মার্কোস ১৯৬৫ সাল থেকে ১৯৮৬ পর্যন্ত ফিলিপিন্সের নেতৃত্বে ছিলেন। তার ওই শাসনকাল জরুরি অবস্থা, ব্যাপক মানবাধিকার লংঘন, দুর্নীতি ও দারিদ্র্যের আমল হিসেবে কুখ্যাত।

মার্কোসের শাসনের অবসান ঘটে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে। লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে এলে ২৮ বছর বয়সী বংবংসহ পুরো মার্কোস পরিবার দেশ ছেড়ে পালিয়ে হাওয়াইয়ে আশ্রয় নেয়। ১৯৯১ সালে দেশে ফেরার পর থেকে মার্কোস জুনিয়র তার বাবার শাসনামলকে সমৃদ্ধি ও উন্নতির ‘সোনালী সময়’ হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আগ্রাসী প্রচারণায় জনপ্রিয়তার তুঙ্গে উঠে যান বংবং। তিনি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় সেই তরুণ ভোটারদের কাছে, স্বৈরশাসকের সময়কাল দেখার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা যাদের নেই।

রানিং মেট হিসেবে সারা যুক্ত হওয়ায় বংবংয়ের নির্বাচনী প্রচার আরও গতি পায়। মার্কোস-সারা জোটবদ্ধ হওয়ায় দুই প্রভাবশালী রাজনৈতিক পরিবারের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দুই অঞ্চল, মার্কোসদের উত্তর ফিলিপিন্স আর দুতের্তের দক্ষিণ মিন্দানাও দ্বীপ, একীভূত হয়ে দেশটির রাজনীতিতে বিরাট শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়।