০৯:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুলি থেকে কোটিপতি বিপ্লব, তদন্তে নেমে বিস্মিত গোয়েন্দারা

  • Reporter Name
  • Update Time : ১১:৪৮:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • 30

বিদেশিদের নিয়ে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে কয়েক বছরে কুলি থেকে কোটিপতি বনে গেছেন গোপালগঞ্জের বিপ্লব লস্কর নামের এক যুবক। প্রতারণার টাকায় তিনি গড়েছেন বাড়ি-গাড়ি। সেই সঙ্গে তার রয়েছে নামে-বেনামে হাজারের অধিক ব্যাংক একাউন্ট। বিদেশ থেকে বন্ধুত্বের প্রলোভনে পার্সেল পাঠিয়ে প্রতারণা করা একটি চক্রের সন্ধানে মাঠে নেমে বিপ্লব লস্করের সন্ধান পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তার এমন কাণ্ডে রীতিমত বিস্মিত গোয়েন্দারা।

ডিবি জানিয়েছে- প্রতারণার মাধ্যমে টাকা কামিয়ে কুলি থেকে ‘কোটিপতি’ হয়েছেন বিপ্লব লস্কর। রাজধানীতে তার রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট। বিদেশিদের প্রতারণার শতাধিক ঘটনার সঙ্গে বিপ্লব লস্করের সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

মঙ্গলবার  (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।

‘পার্সেল প্রতারক’ চক্রের মূলহোতাসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চক্রের মূলহোতা বিপ্লব গ্রেফতার এড়াতে গাড়িতে তার সঙ্গে সবসময় নেটওয়ার্ক জ্যামার ব্যবহার করতেন। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরেও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।

এ সময় একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, ২৮টি মোবাইল, একটি কম্পিউটার, ৪৯১টি এটিএম কার্ড, ২৬টি চেক বই, তিনটি ওয়ারলেস পকেট রাউটার, একটি প্রাইভেটকার, সাড়ে ৩ লাখ জাল টাকা, নগদ ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ও ২৬৩টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, বাংলাদেশি মূলহোতা বিপ্লব লস্কর (৩৪) ও তার সহযোগী সুমন হোসেন ওরফে ইমরান (৩১), মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন (৩০), ইমরান হাসান ওরফে ইকবাল (৩০), নাজমুল হক রনি (৩০), মোসা. নুসরাত জাহান (২৪)। এছাড়া নাইজেরিয়ান নাগরিক চিডি (৪০), ইমানুয়েল (২৬), জন (৩১), অ্যাঙ্গোলিয়ান নাগরিক উইলসন ডে কনসিকাউ (৩৫), ক্যামেরুনের নাগরিক গুলগ্নি পাপিনিকে (৩২)।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদের রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের ওয়েব বেজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।

ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন,‘পার্সেল প্রতারক’ কখনও বাংলাদেশে বসে আবার কখনও দেশের বাইরে থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে পার্সেলে ডলার অথবা মূল্যবান উপহার পাঠানোর ফাঁদ পেতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। চক্রের দেশি-বিদেশি সদস্যরা বিভিন্ন পন্থায় সাধারণ মানুষের ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল সংগ্রহ করে ইউএস আর্মি, ইউএস নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। সম্পর্কের এক পর্যায়ে স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, হিরা, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার/ইউরো ইত্যাদি উপহার পাঠানোর কথা বলে ফাঁদে ফেলে।’

এরপর সেগুলো ব্যক্তির নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে ভুয়া পার্সেলের ছবি পাঠায়। প্রতারিত ব্যক্তিরা সরল বিশ্বাসে পার্সেল গ্রহণের অপেক্ষায় থাকেন। প্রতারক চক্রের কলিং বিভাগে কর্মরত বাংলাদেশি প্রতারকরা বিভিন্ন অপারেটরের নম্বর ব্যবহার করে নিজেকে কাস্টমস অফিসার পরিচয় দিয়ে জানায়, কিং এক্সপ্রেস সার্ভিস থেকে একটি পার্সেল এসেছে। পার্সেলটি ছাড়াতে কাস্টমস হাউজ ফি বাবদ মোটা অংকের টাকা পরিশোধ করতে হবে।

পার্সেল পাওয়ার আশায় কাস্টমস কর্মকর্তার দাবি করা টাকা পাঠিয়ে দেন। এরপর কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী ব্যক্তি আবারও ফোন করে জানান, বিদেশি বন্ধুর পাঠানো পার্সেলে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ডলার রয়েছে। যা ছাড়াতে আরও বেশি টাকা প্রয়োজন। এই টাকা দিতে ব্যর্থ হলে প্রতারিত ব্যক্তির নামে মানি লন্ডারিং আইনসহ অন্যান্য আইনে মামলা হবে। এভাবে মিথ্যা ভয়ভীতি দেখান।

প্রতারিত ব্যক্তিরা মামলার ভয়ে প্রতারকদের দেওয়া বিভিন্ন ব্যাংক আ্যকাউন্টে দাবিকৃত টাকা পাঠালে আবারও ফোন করে পুলিশ এবং সাংবাদিক জেনে যাওয়ায় তাদের ম্যানেজের কথা বলে আরও বড় অংকের টাকা দাবি করে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে।

প্রতারকরা তাদের দাবি করা টাকা তাদের সরবরাহকৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার শিকার ব্যক্তিকে সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লক করে দিতো।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, কুলি থেকে ‘কোটিপতি’ হয়েছেন গ্রেফতার বিপ্লব লস্কর। রাজধানীতে তার রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট। বিদেশিদের প্রতারণার শতাধিক ঘটনার সঙ্গে বিপ্লব লস্করের সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি গ্রেফতার এড়াতে গাড়িতে ও তার সঙ্গে সব সময় নেটওয়ার্ক জ্যামার ব্যবহার করতেন। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরেও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ আরও বলেন, বিদেশি প্রতারক চক্রটি গ্রেফতার নুসরাতের মতো বহু বাংলাদেশির সহায়তায় এভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। চক্রটি প্রতারণায় ব্যবহৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো বিভিন্ন ব্যক্তির পাসপোর্ট জাল করে বিভিন্ন ব্যাংকে শত শত অ্যাকাউন্ট ও ক্রেডিট কার্ড নিয়েছে। এসব ব্যাংকের চেক ও এটিএম কার্ড ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত টাকা তুলে নিতো।

আর এই টাকা তোলা ও ভাগাভাগির কাজটি করতেন বিপ্লব লস্কর। তিনি বিদেশি নম্বর ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি তদারকি করতেন। লস্করের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন সুমন হোসেন ওরফে ইমরান, মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন এবং ইমরান হাসান ইকবাল।

গ্রেফতার বিপ্লবের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর, খিলক্ষেত ও কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিংয়ের মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় শতাধিক মামলা রয়েছে। এ মামলায় তিনি একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছেন।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ: আপিল করবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

কুলি থেকে কোটিপতি বিপ্লব, তদন্তে নেমে বিস্মিত গোয়েন্দারা

Update Time : ১১:৪৮:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিদেশিদের নিয়ে প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে কয়েক বছরে কুলি থেকে কোটিপতি বনে গেছেন গোপালগঞ্জের বিপ্লব লস্কর নামের এক যুবক। প্রতারণার টাকায় তিনি গড়েছেন বাড়ি-গাড়ি। সেই সঙ্গে তার রয়েছে নামে-বেনামে হাজারের অধিক ব্যাংক একাউন্ট। বিদেশ থেকে বন্ধুত্বের প্রলোভনে পার্সেল পাঠিয়ে প্রতারণা করা একটি চক্রের সন্ধানে মাঠে নেমে বিপ্লব লস্করের সন্ধান পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। তার এমন কাণ্ডে রীতিমত বিস্মিত গোয়েন্দারা।

ডিবি জানিয়েছে- প্রতারণার মাধ্যমে টাকা কামিয়ে কুলি থেকে ‘কোটিপতি’ হয়েছেন বিপ্লব লস্কর। রাজধানীতে তার রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট। বিদেশিদের প্রতারণার শতাধিক ঘটনার সঙ্গে বিপ্লব লস্করের সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

মঙ্গলবার  (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি প্রধান) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।

‘পার্সেল প্রতারক’ চক্রের মূলহোতাসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চক্রের মূলহোতা বিপ্লব গ্রেফতার এড়াতে গাড়িতে তার সঙ্গে সবসময় নেটওয়ার্ক জ্যামার ব্যবহার করতেন। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরেও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।

এ সময় একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন, ২৮টি মোবাইল, একটি কম্পিউটার, ৪৯১টি এটিএম কার্ড, ২৬টি চেক বই, তিনটি ওয়ারলেস পকেট রাউটার, একটি প্রাইভেটকার, সাড়ে ৩ লাখ জাল টাকা, নগদ ১১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ও ২৬৩টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়।

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন, বাংলাদেশি মূলহোতা বিপ্লব লস্কর (৩৪) ও তার সহযোগী সুমন হোসেন ওরফে ইমরান (৩১), মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন (৩০), ইমরান হাসান ওরফে ইকবাল (৩০), নাজমুল হক রনি (৩০), মোসা. নুসরাত জাহান (২৪)। এছাড়া নাইজেরিয়ান নাগরিক চিডি (৪০), ইমানুয়েল (২৬), জন (৩১), অ্যাঙ্গোলিয়ান নাগরিক উইলসন ডে কনসিকাউ (৩৫), ক্যামেরুনের নাগরিক গুলগ্নি পাপিনিকে (৩২)।

সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে তাদের রাজধানীর মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (উত্তর) বিভাগের ওয়েব বেজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।

ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন,‘পার্সেল প্রতারক’ কখনও বাংলাদেশে বসে আবার কখনও দেশের বাইরে থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুত্ব গড়ে পার্সেলে ডলার অথবা মূল্যবান উপহার পাঠানোর ফাঁদ পেতে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। চক্রের দেশি-বিদেশি সদস্যরা বিভিন্ন পন্থায় সাধারণ মানুষের ফেসবুক আইডি, হোয়াটসঅ্যাপ, ই-মেইল সংগ্রহ করে ইউএস আর্মি, ইউএস নেভিসহ বিভিন্ন পরিচয় ব্যবহার করে টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। সম্পর্কের এক পর্যায়ে স্বর্ণ, মূল্যবান পাথর, হিরা, বিশাল অংকের বৈদেশিক মুদ্রা, ডলার/ইউরো ইত্যাদি উপহার পাঠানোর কথা বলে ফাঁদে ফেলে।’

এরপর সেগুলো ব্যক্তির নাম-ঠিকানা উল্লেখ করে ভুয়া পার্সেলের ছবি পাঠায়। প্রতারিত ব্যক্তিরা সরল বিশ্বাসে পার্সেল গ্রহণের অপেক্ষায় থাকেন। প্রতারক চক্রের কলিং বিভাগে কর্মরত বাংলাদেশি প্রতারকরা বিভিন্ন অপারেটরের নম্বর ব্যবহার করে নিজেকে কাস্টমস অফিসার পরিচয় দিয়ে জানায়, কিং এক্সপ্রেস সার্ভিস থেকে একটি পার্সেল এসেছে। পার্সেলটি ছাড়াতে কাস্টমস হাউজ ফি বাবদ মোটা অংকের টাকা পরিশোধ করতে হবে।

পার্সেল পাওয়ার আশায় কাস্টমস কর্মকর্তার দাবি করা টাকা পাঠিয়ে দেন। এরপর কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়দানকারী ব্যক্তি আবারও ফোন করে জানান, বিদেশি বন্ধুর পাঠানো পার্সেলে বিপুল পরিমাণ অবৈধ ডলার রয়েছে। যা ছাড়াতে আরও বেশি টাকা প্রয়োজন। এই টাকা দিতে ব্যর্থ হলে প্রতারিত ব্যক্তির নামে মানি লন্ডারিং আইনসহ অন্যান্য আইনে মামলা হবে। এভাবে মিথ্যা ভয়ভীতি দেখান।

প্রতারিত ব্যক্তিরা মামলার ভয়ে প্রতারকদের দেওয়া বিভিন্ন ব্যাংক আ্যকাউন্টে দাবিকৃত টাকা পাঠালে আবারও ফোন করে পুলিশ এবং সাংবাদিক জেনে যাওয়ায় তাদের ম্যানেজের কথা বলে আরও বড় অংকের টাকা দাবি করে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শন করতে থাকে।

প্রতারকরা তাদের দাবি করা টাকা তাদের সরবরাহকৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতারণার শিকার ব্যক্তিকে সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্লক করে দিতো।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, কুলি থেকে ‘কোটিপতি’ হয়েছেন গ্রেফতার বিপ্লব লস্কর। রাজধানীতে তার রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট ও প্লট। বিদেশিদের প্রতারণার শতাধিক ঘটনার সঙ্গে বিপ্লব লস্করের সম্পৃক্ততার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি গ্রেফতার এড়াতে গাড়িতে ও তার সঙ্গে সব সময় নেটওয়ার্ক জ্যামার ব্যবহার করতেন। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরেও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ আরও বলেন, বিদেশি প্রতারক চক্রটি গ্রেফতার নুসরাতের মতো বহু বাংলাদেশির সহায়তায় এভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা করে আসছিল। চক্রটি প্রতারণায় ব্যবহৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলো বিভিন্ন ব্যক্তির পাসপোর্ট জাল করে বিভিন্ন ব্যাংকে শত শত অ্যাকাউন্ট ও ক্রেডিট কার্ড নিয়েছে। এসব ব্যাংকের চেক ও এটিএম কার্ড ব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত টাকা তুলে নিতো।

আর এই টাকা তোলা ও ভাগাভাগির কাজটি করতেন বিপ্লব লস্কর। তিনি বিদেশি নম্বর ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি তদারকি করতেন। লস্করের সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন সুমন হোসেন ওরফে ইমরান, মোহসিন হোসেন ওরফে শাওন এবং ইমরান হাসান ইকবাল।

গ্রেফতার বিপ্লবের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর, খিলক্ষেত ও কাফরুল থানায় মানি লন্ডারিংয়ের মামলা রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে বনানী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় শতাধিক মামলা রয়েছে। এ মামলায় তিনি একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছেন।