০৩:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বাধীনতা বিরোধীদের কথায় সংবিধান পরিবর্তনের সুযোগ নেই: হানিফ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:১২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ নভেম্বর ২০২২
  • 23

যারা স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের দোসর ও পাকিস্তানের আদর্শে বিশ্বাসী, তাদের কথায় সংবিধান পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি। রবিবার (২০ নভেম্বর) নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সংবিধান মেনে যদি নির্বাচনে আসেন, আপনাদের স্বাগত। আর যদি না আসেন, সেই দায়ভার আপনাদের। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, জাতীয় সংসদ নিবাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক সেটা আমরা চাই। নির্বাচন হবে বর্তমান সরকারের অধীনে সংবিধানসম্মত উপায়ে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। নির্বাচনকে অধিক ত্রুটিমুক্ত করার কোনো পরামর্শ থাকলে দিতে পারেন। সরকার এবং নির্বাচন কমিশন অবশ্যই বিবেচনা করবে।

বিএনপিকে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই দেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করুন। আমাদের কোনো অসুবিধা নেই, কোনো বাধা নেই।

আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের শক্তি বাংলার মানুষ, এদেশের জনগণ। আপনারা মনে করছেন আপনাদের জনসভায় কিছু সুবিধাবাদী লোক, কর্মী গিয়েছে। এতেই মনে করছেন একেবারে গোটা দেশ আপনাদের হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল। বাংলার মাটির অনেক গভীরে আওয়ামী লীগের শেকড়, কোনো ভূঁইফোড় দল নয়। আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি নয় যে ধাক্কা দিলে টলমল করে পড়ে যাবে। আপনাদের মতো দল অন্দোলন করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার স্বপ্ন দুঃস্বপ্নই থাকবে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহত বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘হত্যার’ বিচার চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর জবাবে হানিফ বলেন, বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। বিচার পেতে চান? হত্যার বিচার হচ্ছে, হবে। বিচার তো চলছে। ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে পেট্রোল দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছেন, সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করেছেন। সেই সব মামলা তো আছে, বিচার চলছে। অপেক্ষা করুন এই সমস্ত হত্যার দায়ভার নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

খালেদা জিয়াকে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার পর বহু নাটক করেছেন আপনারা। হাওয়া ভবনে বসে তারেক রহমান রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। আজ তা প্রমাণিত হয়েছে। আলামত ধ্বংস করেছিলেন, হামলায় আহতদের চিকিৎসা নিতে দেননি। তিন ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রেখে মামলাও নেননি। উল্টো খালেদা জিয়া সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে আবার কে মারবে। তিনি নিজেই ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গেছেন। কি নির্লজ্জ রসিকতা, মিথ্যচার। তখন কোথায় ছিলো অপানদের কান্না। কোথায় ছিলো গণতন্ত্র, মানবতাবোধ। আর আজ আপনারা গণতন্ত্র, মানবতার কথা বলেন।

বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় কারাগারে ছিলেন। আজ শেখ হাসিনার দয়া, অনুকম্পায় বাসায় আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কাছে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নেই। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি চায় না কারণ তাদের মনেপ্রাণে দিলে আছে পাকিস্তান। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান যিনি ক্যান্টনমেন্টে বসে বন্দুকের নলের ডগায় বসে দল গঠন করেছিলেন। যে দলের জন্ম হয়েছে অবৈধ পন্থায়, সেই দল দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। এটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে।

জিয়াউর রহমান কখনো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না দাবি করে হানিফ বলেন, জিয়াউর রহমান নাকি সিলেটে যুদ্ধ করেছেন। আমি সিলেটে বহু জনসভা করেছি। সেসব জনসভায় বলেছি, এই সিলেটের রণাঙ্গনে জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছে এরকম কোনো ইতিহাস থাকে জানানোর জন্য। উনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন কোনো ইতিহাস খুঁজে পাইনি।

জিয়াউর রহমান মনেপ্রাণে পাকিস্তানের আদর্শ ধারণ করতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিয়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতা দখল করেছিলেন। তার কমকাণ্ড প্রমাণ করে তিনি পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। যার কারণে রাজাকারদের দিয়ে মন্ত্রীসভা গঠন করেছিলেন। কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আজমকে রাজনীতির সুযোগ দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা ও মা-বোনের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো নিষিদ্ধঘোষিত জামায়াতকে রাজনীতির সুযোগ করে দিয়েছেন।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে এখনো পাকিস্তানের তাবেদার রাষ্ট্র বানাতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী একাত্তর সালে রাজাকার ছিল, এখনো রাজাকার আছে। তারা এখনও এ দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। ২০১৩ সালে তাদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা কাদের মোল্লা, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসিতে দেশের মানুষ খুশি হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছিল। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী বলেছিলেন- কাদের মোল্লা, নিজামী, মুজাহিদ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পাকিস্তানের অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন। মতিউর রহমান নিজামীকে বেসামরিক সর্বোচ্চ নেসার-ই পাকিস্তান উপাধি দেয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা পাকিস্তানের পক্ষের রাজনীতিক। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও তারা পাকিস্তানের সৈনিক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না।

বিএনপি এবং জামায়াত একই মায়ের পেটের দুই ভাই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, ২০০৪ সালে ছাত্রশিবিরের এক সভায় তারেক রহমান বলেছিল- ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল একই মায়ের পেটের দুই ভাই। বিএনপি-জামায়াতও একই জায়গা থেকে সৃষ্টি। জামায়াতের ইসলামীর সৃষ্টি পাকিস্তানের মওদূদীর হাতে আর বিএএনপির সৃষ্টি করেছে তাদের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। বিএনপি-জামায়াত একে অপরের পরিপূরক। তারা কখনো বিচ্ছিন হবে না।

বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনার নেতা তারেক রহমান সন্ত্রাস ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। সিঙ্গাপুরের আদালত ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে। মার্কিন ফেডারেল আদালতে মামলা আছে। বহু হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। মানি লন্ডারিং, হত্যা, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক। একজন খুনী, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীকে নেতা বানিয়ে দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আপনারা ছিনিমিনি খেলতে চান? এই দেশের মানুষ সেই সুুযোগ দিবে না।

দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে হনিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এখন শুধু বাংলাদেশের নেত্রী নন, সারা বিশ্বের মধ্যে প্রথম পাঁচজন নেতার মধ্যে একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে চিহ্নিত। সেই শেখ হাসিনার কর্মী আমরা। আওয়ামী লীগের কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন শক্তি নেই আওয়ামী লীগকে পরাস্ত করতে পারে। বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব থাকলে দেশ উন্নয়ন-অগ্রগতিতে এগিয়ে যাবে। তারা শেখ হাসিনাকে আবারো রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

নতুন গন্তব্যে এমভি আবদুল্লাহ, ২৩ নাবিকের দেশে ফেরা নিয়ে নতুন তথ্য

স্বাধীনতা বিরোধীদের কথায় সংবিধান পরিবর্তনের সুযোগ নেই: হানিফ

Update Time : ০১:১২:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ নভেম্বর ২০২২

যারা স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকারদের দোসর ও পাকিস্তানের আদর্শে বিশ্বাসী, তাদের কথায় সংবিধান পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি। রবিবার (২০ নভেম্বর) নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, সংবিধান মেনে যদি নির্বাচনে আসেন, আপনাদের স্বাগত। আর যদি না আসেন, সেই দায়ভার আপনাদের। সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, জাতীয় সংসদ নিবাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক সেটা আমরা চাই। নির্বাচন হবে বর্তমান সরকারের অধীনে সংবিধানসম্মত উপায়ে। বর্তমান নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। নির্বাচনকে অধিক ত্রুটিমুক্ত করার কোনো পরামর্শ থাকলে দিতে পারেন। সরকার এবং নির্বাচন কমিশন অবশ্যই বিবেচনা করবে।

বিএনপিকে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাই দেশে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আপনারা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করুন। আমাদের কোনো অসুবিধা নেই, কোনো বাধা নেই।

আওয়ামী লীগের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের শক্তি বাংলার মানুষ, এদেশের জনগণ। আপনারা মনে করছেন আপনাদের জনসভায় কিছু সুবিধাবাদী লোক, কর্মী গিয়েছে। এতেই মনে করছেন একেবারে গোটা দেশ আপনাদের হয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া দল। বাংলার মাটির অনেক গভীরে আওয়ামী লীগের শেকড়, কোনো ভূঁইফোড় দল নয়। আওয়ামী লীগ কচু পাতার পানি নয় যে ধাক্কা দিলে টলমল করে পড়ে যাবে। আপনাদের মতো দল অন্দোলন করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার স্বপ্ন দুঃস্বপ্নই থাকবে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে নিহত বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘হত্যার’ বিচার চেয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এর জবাবে হানিফ বলেন, বিএনপি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগের ২৬ হাজার নেতাকর্মীকে প্রাণ দিতে হয়েছে। বিচার পেতে চান? হত্যার বিচার হচ্ছে, হবে। বিচার তো চলছে। ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে পেট্রোল দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছেন, সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস করেছেন। সেই সব মামলা তো আছে, বিচার চলছে। অপেক্ষা করুন এই সমস্ত হত্যার দায়ভার নিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

খালেদা জিয়াকে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার পর বহু নাটক করেছেন আপনারা। হাওয়া ভবনে বসে তারেক রহমান রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল। আজ তা প্রমাণিত হয়েছে। আলামত ধ্বংস করেছিলেন, হামলায় আহতদের চিকিৎসা নিতে দেননি। তিন ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রেখে মামলাও নেননি। উল্টো খালেদা জিয়া সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে আবার কে মারবে। তিনি নিজেই ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গেছেন। কি নির্লজ্জ রসিকতা, মিথ্যচার। তখন কোথায় ছিলো অপানদের কান্না। কোথায় ছিলো গণতন্ত্র, মানবতাবোধ। আর আজ আপনারা গণতন্ত্র, মানবতার কথা বলেন।

বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় কারাগারে ছিলেন। আজ শেখ হাসিনার দয়া, অনুকম্পায় বাসায় আছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের কাছে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নেই। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতি চায় না কারণ তাদের মনেপ্রাণে দিলে আছে পাকিস্তান। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান যিনি ক্যান্টনমেন্টে বসে বন্দুকের নলের ডগায় বসে দল গঠন করেছিলেন। যে দলের জন্ম হয়েছে অবৈধ পন্থায়, সেই দল দেশের জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। এটা বারবার প্রমাণিত হয়েছে।

জিয়াউর রহমান কখনো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না দাবি করে হানিফ বলেন, জিয়াউর রহমান নাকি সিলেটে যুদ্ধ করেছেন। আমি সিলেটে বহু জনসভা করেছি। সেসব জনসভায় বলেছি, এই সিলেটের রণাঙ্গনে জিয়াউর রহমান যুদ্ধ করেছে এরকম কোনো ইতিহাস থাকে জানানোর জন্য। উনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন কোনো ইতিহাস খুঁজে পাইনি।

জিয়াউর রহমান মনেপ্রাণে পাকিস্তানের আদর্শ ধারণ করতেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, জিয়া বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ক্ষমতা দখল করেছিলেন। তার কমকাণ্ড প্রমাণ করে তিনি পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। যার কারণে রাজাকারদের দিয়ে মন্ত্রীসভা গঠন করেছিলেন। কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আজমকে রাজনীতির সুযোগ দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা ও মা-বোনের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো নিষিদ্ধঘোষিত জামায়াতকে রাজনীতির সুযোগ করে দিয়েছেন।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে এখনো পাকিস্তানের তাবেদার রাষ্ট্র বানাতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী একাত্তর সালে রাজাকার ছিল, এখনো রাজাকার আছে। তারা এখনও এ দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। ২০১৩ সালে তাদের শীর্ষ পর্যায়ের নেতা কাদের মোল্লা, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদের ফাঁসিতে দেশের মানুষ খুশি হয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানের পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছিল। পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার আলী বলেছিলেন- কাদের মোল্লা, নিজামী, মুজাহিদ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পাকিস্তানের অকুতোভয় সৈনিক ছিলেন। মতিউর রহমান নিজামীকে বেসামরিক সর্বোচ্চ নেসার-ই পাকিস্তান উপাধি দেয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা পাকিস্তানের পক্ষের রাজনীতিক। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরও তারা পাকিস্তানের সৈনিক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না।

বিএনপি এবং জামায়াত একই মায়ের পেটের দুই ভাই উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই সিনিয়র নেতা বলেন, ২০০৪ সালে ছাত্রশিবিরের এক সভায় তারেক রহমান বলেছিল- ছাত্রশিবির ও ছাত্রদল একই মায়ের পেটের দুই ভাই। বিএনপি-জামায়াতও একই জায়গা থেকে সৃষ্টি। জামায়াতের ইসলামীর সৃষ্টি পাকিস্তানের মওদূদীর হাতে আর বিএএনপির সৃষ্টি করেছে তাদের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। বিএনপি-জামায়াত একে অপরের পরিপূরক। তারা কখনো বিচ্ছিন হবে না।

বিএনপি মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনার নেতা তারেক রহমান সন্ত্রাস ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত। সিঙ্গাপুরের আদালত ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছে। মার্কিন ফেডারেল আদালতে মামলা আছে। বহু হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। মানি লন্ডারিং, হত্যা, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে পলাতক। একজন খুনী, দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসীকে নেতা বানিয়ে দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আপনারা ছিনিমিনি খেলতে চান? এই দেশের মানুষ সেই সুুযোগ দিবে না।

দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে হনিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এখন শুধু বাংলাদেশের নেত্রী নন, সারা বিশ্বের মধ্যে প্রথম পাঁচজন নেতার মধ্যে একজন রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে চিহ্নিত। সেই শেখ হাসিনার কর্মী আমরা। আওয়ামী লীগের কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোন শক্তি নেই আওয়ামী লীগকে পরাস্ত করতে পারে। বাংলাদেশের শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব থাকলে দেশ উন্নয়ন-অগ্রগতিতে এগিয়ে যাবে। তারা শেখ হাসিনাকে আবারো রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে।