০১:২৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পারমাণবিক জ্বালানি আমদানির অনুমোদন পেল বাংলাদেশ

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য পারমাণবিক জ্বালানি আমদানি ও সংরক্ষণের অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।

একই সঙ্গে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান বুরুশকে পারমাণবিক জ্বালানি পরিবহনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক আনবিক সংস্থা (আইএইএ) এর নির্দেশনা অনুযায়ী শর্ত পূরণ করায় প্রতিষ্ঠান দুটিকে এই অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিএইআরএ)।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় পাবনার একটি হোটেলে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে এই লাইসেন্স দেওয়া হয়।

এরমধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক জ্বালানি আমদানির সক্ষমতা অর্জন করল।
একই সঙ্গে পারমাণবিক জ্বালানির মালিক হলো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোজাম্মেল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন,
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাশান ফেডারেশনের রোসটেকনাজোরের ডেপুটি চেয়ারম্যান এলেক্সী ফেরাপন্তভ,
রোসাটমের ডেপুটি ডিরেক্টর মি এ ওয়াই পেত্রোভ, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অশোক কুমার পাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব
জিয়াউল হাসান, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর।

স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. সত্যজিত ঘোষ।

এ সময় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, আন্তর্জাতিক আনবিক সংস্থার (আইএইএ) প্রত্যেকটি চাওয়া আমরা পূরণ করেছি।

তারাও (আইএইএ) আমাদের সহযোগিতা করেছে, আমাদের ভুল ধরে আবার সংশোধন করে দিয়েছে, এজন্য আইএইএকে ধন্যবাদ জানাই।

এই অর্জন দেশবাসীর। সারা বাংলাদেশের মানুষের চিন্তা-চেতনা ও দরদের জন্যই আমরা এই সক্ষমতা অর্জন করেছি।
কোনো শক্তিই এই অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, এই জ্বালানি আসার সঙ্গে আমাদেরকে
আন্তর্জাতিক আনবিক সংস্থার (আইএইএ) নোটিফিকেশন করতে হয়।

আজকের অনুমোদনের মাধ্যমেই সেই সক্ষমতা অর্জন করেছি এবং পারমাণবিক জ্বালানির মালিক হলো বাংলাদেশ।

এই জ্বালানির ব্যবহার করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং নিরাপত্তা বিষয়টি তদারকি করবে বিএইআরএ।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. সত্যজিত ঘোষ বলেন,
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর অথবা অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ পারমাণবিক জ্বালানি আসবে।

এই জ্বালানি নিয়ে আসার জন্য যে আমদানি, পরিবহন ও সংরক্ষণের ৩টি লাইসেন্স দরকার, সেগুলো বিএইআরএ দিচ্ছে।
আজকের লাইসেন্স প্রদান বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরমাণু শক্তি কমিশন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট নির্মাণ করছে।
এতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা।

২০২৩ সালের মধ্যেই কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের উৎপাদনের আসার কথা ছিল।
তবে এখন পর্যন্ত রূপপুর প্রকল্পের খরচ বা মেয়াদ কোনোটাই বাড়াতে হয়নি।
২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ: আপিল করবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

পারমাণবিক জ্বালানি আমদানির অনুমোদন পেল বাংলাদেশ

Update Time : ০৭:০৫:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ জুলাই ২০২৩

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য পারমাণবিক জ্বালানি আমদানি ও সংরক্ষণের অনুমোদন পেয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন।

একই সঙ্গে রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান বুরুশকে পারমাণবিক জ্বালানি পরিবহনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক আনবিক সংস্থা (আইএইএ) এর নির্দেশনা অনুযায়ী শর্ত পূরণ করায় প্রতিষ্ঠান দুটিকে এই অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিএইআরএ)।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যায় পাবনার একটি হোটেলে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে এই লাইসেন্স দেওয়া হয়।

এরমধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ একটি মাইলফলক জ্বালানি আমদানির সক্ষমতা অর্জন করল।
একই সঙ্গে পারমাণবিক জ্বালানির মালিক হলো বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোজাম্মেল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন,
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাশান ফেডারেশনের রোসটেকনাজোরের ডেপুটি চেয়ারম্যান এলেক্সী ফেরাপন্তভ,
রোসাটমের ডেপুটি ডিরেক্টর মি এ ওয়াই পেত্রোভ, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অশোক কুমার পাল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব
জিয়াউল হাসান, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর।

স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. সত্যজিত ঘোষ।

এ সময় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেন, আন্তর্জাতিক আনবিক সংস্থার (আইএইএ) প্রত্যেকটি চাওয়া আমরা পূরণ করেছি।

তারাও (আইএইএ) আমাদের সহযোগিতা করেছে, আমাদের ভুল ধরে আবার সংশোধন করে দিয়েছে, এজন্য আইএইএকে ধন্যবাদ জানাই।

এই অর্জন দেশবাসীর। সারা বাংলাদেশের মানুষের চিন্তা-চেতনা ও দরদের জন্যই আমরা এই সক্ষমতা অর্জন করেছি।
কোনো শক্তিই এই অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, এই জ্বালানি আসার সঙ্গে আমাদেরকে
আন্তর্জাতিক আনবিক সংস্থার (আইএইএ) নোটিফিকেশন করতে হয়।

আজকের অনুমোদনের মাধ্যমেই সেই সক্ষমতা অর্জন করেছি এবং পারমাণবিক জ্বালানির মালিক হলো বাংলাদেশ।

এই জ্বালানির ব্যবহার করে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং নিরাপত্তা বিষয়টি তদারকি করবে বিএইআরএ।

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সিএসও) ড. সত্যজিত ঘোষ বলেন,
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর অথবা অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ পারমাণবিক জ্বালানি আসবে।

এই জ্বালানি নিয়ে আসার জন্য যে আমদানি, পরিবহন ও সংরক্ষণের ৩টি লাইসেন্স দরকার, সেগুলো বিএইআরএ দিচ্ছে।
আজকের লাইসেন্স প্রদান বাংলাদেশের জন্য মাইলফলক।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আওতায় পরমাণু শক্তি কমিশন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিট রাশিয়ার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয়এক্সপোর্ট নির্মাণ করছে।
এতে খরচ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা।

২০২৩ সালের মধ্যেই কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের উৎপাদনের আসার কথা ছিল।
তবে এখন পর্যন্ত রূপপুর প্রকল্পের খরচ বা মেয়াদ কোনোটাই বাড়াতে হয়নি।
২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে।