০৬:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জামায়াতে ইসলামী দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:২৯:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩
  • 26

জীবন দিয়ে হলেও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না জামায়াতে ইসলামী। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না৷

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর আরামবাগ মোড়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুজিবুর রহমান এসব কথা বলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও জামায়েতে ইসলামীর আমিরসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে অনড় ছিল জামায়াতে ইসলামী। তবে পুলিশের ব্যারিকেডের কারণে শাপলা চত্বরে যেতে পারেননি দলটির নেতা-কর্মীরা। বেলা ২টা ২০ মিনিটে নটর ডেম কলেজের সামনে সমাবেশ শুরু হয়।

পিকআপের ওপর মঞ্চ করা হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষ হয় ৩টা ১০ মিনিটে। সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন পর মুক্ত আকাশে সমাবেশ করছে জামায়াতে ইসলামী। আজ সেই ২৮ অক্টোবরে যেদিন লগি-বইঠা নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সাপের মতো পিটিয়ে হত্যা করেছিল। আমরা প্রতিশোধ নিতে চাই। তবে হত্যার বদলে হত্যা নয়। কোরআন ও সুন্নাহর আইন চালু করে প্রতিশোধ নেব।জামায়াত

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আর কোনো নির্বাচন হবে না জানিয়ে মুজিবুর রহমান বলেন, জীবন দিয়ে হলেও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আজ সমাবেশে আসার পথে দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি জামায়াতের আমিরসহ গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি জানান।

নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী সব সময় গণতন্ত্র রক্ষা, মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামে ছিল। আওয়ামী লীগ বলে, জামায়াত যুদ্ধাপরাধী দল। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলন করেছি। তখন আমরা ছিলাম হালাল, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। আর এখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি, তাই এখন স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি।’

জামায়াতে ইসলামী দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনী দল। আমরা অনেক নির্বাচনেই অংশ নিয়েছি। বয়কট করেছি ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে। কোনো ভোট, ব্যালট ডাকাতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না।’

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তাহের বলেন, শতকরা ৫০ শতাংশ ভোট না হলে সেটা নির্বাচন বলা যাবে না। শুনেছি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভালো মানুষ। দ্বিতীয় নূরুল হুদা হবেন না। আপনি প্রয়োজনে পদত্যাগ করুন।

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির শামসুল ইসলাম বলেন, ভোটবিহীন সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে। আজকে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই সরকারের বিদায় না হওয়া এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না। সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। দেশে দুর্ভিক্ষের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

আজকের সমাবেশের অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে অনড় ছিল জামায়াতে ইসলামী। বেলা ১১টার দিকে আরামবাগ মোড়ে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বড় জমায়েত দেখা যায়। তাঁরা সেখানে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

জামায়াত ঘোষিত কর্মসূচি সামনে রেখে সকালে আরামবাগ মোড়ে একটি ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। আরেকটি ব্যারিকেড দেওয়া হয় মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে নটর ডেম কলেজের দিকে যাওয়ার পথে। পুলিশি ব্যারিকেডের কারণে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা আরামবাগ মোড় পার হতে পারছিলেন না। বেলা পৌনে একটার দিকে আরামবাগ মোড়ের পুলিশি ব্যারিকেড ভাঙেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। পরে আরামবাগ মোড় থেকে নটর ডেম কলেজ পর্যন্ত এলাকার সড়কে তাঁরা অবস্থান নেন। বেলা ২টা ২০ মিনিটে আরামবাগ মোড়ে সমাবেশ শুরু করেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর আমির নুরুল ইসলাম। সমাবেশ শেষের ঘোষণা দিয়ে তিনি নেতা-কর্মীদের কমলাপুর হয়ে শাহজাহানপুর দিয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, ‘কোনো উসকানিতে পা দেবেন না। শান্তিপূর্ণভাবে চলে যাবেন। আমরা শৃঙ্খলার সঙ্গে চলে যাব।’

সমাবেশ শেষ হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই সমাবেশস্থল ফাঁকা হয়ে যায়। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান, আবদুল হালিম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ: আপিল করবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

জামায়াতে ইসলামী দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না

Update Time : ০৬:২৯:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৩

জীবন দিয়ে হলেও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না জামায়াতে ইসলামী। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না৷

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর আরামবাগ মোড়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুজিবুর রহমান এসব কথা বলেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা ও জামায়েতে ইসলামীর আমিরসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে অনড় ছিল জামায়াতে ইসলামী। তবে পুলিশের ব্যারিকেডের কারণে শাপলা চত্বরে যেতে পারেননি দলটির নেতা-কর্মীরা। বেলা ২টা ২০ মিনিটে নটর ডেম কলেজের সামনে সমাবেশ শুরু হয়।

পিকআপের ওপর মঞ্চ করা হয়। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষ হয় ৩টা ১০ মিনিটে। সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন পর মুক্ত আকাশে সমাবেশ করছে জামায়াতে ইসলামী। আজ সেই ২৮ অক্টোবরে যেদিন লগি-বইঠা নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সাপের মতো পিটিয়ে হত্যা করেছিল। আমরা প্রতিশোধ নিতে চাই। তবে হত্যার বদলে হত্যা নয়। কোরআন ও সুন্নাহর আইন চালু করে প্রতিশোধ নেব।জামায়াত

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আর কোনো নির্বাচন হবে না জানিয়ে মুজিবুর রহমান বলেন, জীবন দিয়ে হলেও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আজ সমাবেশে আসার পথে দুই শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি জামায়াতের আমিরসহ গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি জানান।

নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী সব সময় গণতন্ত্র রক্ষা, মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রামে ছিল। আওয়ামী লীগ বলে, জামায়াত যুদ্ধাপরাধী দল। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠায় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আন্দোলন করেছি। তখন আমরা ছিলাম হালাল, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি। আর এখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি, তাই এখন স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি।’

জামায়াতে ইসলামী দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনী দল। আমরা অনেক নির্বাচনেই অংশ নিয়েছি। বয়কট করেছি ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে। কোনো ভোট, ব্যালট ডাকাতির নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না।’

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তাহের বলেন, শতকরা ৫০ শতাংশ ভোট না হলে সেটা নির্বাচন বলা যাবে না। শুনেছি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ভালো মানুষ। দ্বিতীয় নূরুল হুদা হবেন না। আপনি প্রয়োজনে পদত্যাগ করুন।

অনুষ্ঠানে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির শামসুল ইসলাম বলেন, ভোটবিহীন সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে। আজকে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই সরকারের বিদায় না হওয়া এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ব না। সরকারের পায়ের তলায় মাটি নেই। দেশে দুর্ভিক্ষের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

আজকের সমাবেশের অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও শাপলা চত্বরে সমাবেশ করতে অনড় ছিল জামায়াতে ইসলামী। বেলা ১১টার দিকে আরামবাগ মোড়ে জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বড় জমায়েত দেখা যায়। তাঁরা সেখানে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

জামায়াত ঘোষিত কর্মসূচি সামনে রেখে সকালে আরামবাগ মোড়ে একটি ব্যারিকেড দেয় পুলিশ। আরেকটি ব্যারিকেড দেওয়া হয় মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে নটর ডেম কলেজের দিকে যাওয়ার পথে। পুলিশি ব্যারিকেডের কারণে জামায়াতের নেতা-কর্মীরা আরামবাগ মোড় পার হতে পারছিলেন না। বেলা পৌনে একটার দিকে আরামবাগ মোড়ের পুলিশি ব্যারিকেড ভাঙেন জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। পরে আরামবাগ মোড় থেকে নটর ডেম কলেজ পর্যন্ত এলাকার সড়কে তাঁরা অবস্থান নেন। বেলা ২টা ২০ মিনিটে আরামবাগ মোড়ে সমাবেশ শুরু করেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জামায়াতে ইসলামীর আমির নুরুল ইসলাম। সমাবেশ শেষের ঘোষণা দিয়ে তিনি নেতা-কর্মীদের কমলাপুর হয়ে শাহজাহানপুর দিয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, ‘কোনো উসকানিতে পা দেবেন না। শান্তিপূর্ণভাবে চলে যাবেন। আমরা শৃঙ্খলার সঙ্গে চলে যাব।’

সমাবেশ শেষ হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই সমাবেশস্থল ফাঁকা হয়ে যায়। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম মাছুম, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান, আবদুল হালিম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান।