০৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কারাগারে মৃত্যুঝুঁকিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা : রিজভী

দেশের কারাগারগুলোতে বিএনপির নেতাকর্মীরা মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, কেউ যাতে টু-শব্দও না করতে না পারে সেজন্য কারাগারের ভেতরে-বাইরে বিরোধী দলের সক্রিয় নেতাকর্মীদের ওপর নানাবিধ অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। অবর্ণনীয় পৈশাচিক কায়দায় কারাবন্দিদের নির্যাতন করা হচ্ছে। বন্দিদের চিকিৎসা না দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। অসুস্থ বন্দিদের হাত-পায়ে শিকল পরিয়ে কারা হাসপাতালে ফেলে রাখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, কারাগারে দম বন্ধ করা সেলে দিনরাত লকআপে রেখে গরু-ছাগলের খাবারের জন্য প্রযোজ্য অতি নিম্নমানের খাবার দিয়ে বন্দিদের অসুস্থ বানিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর দায় এড়ানোর জন্য গল্প সাজিয়ে মিথ্যাচার করছে। তবে জেল হেফাজতে মৃত্যুর দায় এড়াতে পারবে না কারা কর্মকর্তারা। প্রতিটি মৃত্যু ও হত্যার জন্য তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

সম্প্রতি ব্রিটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকার একটি প্রতিবেদন তুলে ধরে রিজভী বলেন, ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার পুলিশ বাহিনী সম্প্রতি ধরপাকড় চালিয়ে হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মী, সমর্থক দিয়ে বাংলাদেশের কারাগারগুলো ভরে ফেলেছে। কারাগারে তারা অসুস্থ হচ্ছেন এবং সেখানে ধুঁকে ধুঁকে মরছেন।

তিনি বলেন, দেশের ৬৮টি কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৪৩ হাজারের কম হলেও সেখানে গণমাধ্যমের হিসাবে প্রায় ৮৮ হাজার বন্দি রয়েছে। অবৈধ দখলদার সরকার তাদের দখলদারত্ব ধরে রাখার জন্য পুরো দেশকে নরকপুরীতে পরিণত করেছে। ঘরে বাইরে কোথাও নিরাপত্তা নেই। সরকারের প্রতিপক্ষদের জীবন রাষ্ট্রীয় নজরদারি বন্দুকের নলের নিচে বন্দি। দুর্বিনীত দুঃশাসনের করাল গ্রাসে দেশবাসী অজানা আশঙ্কায় আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে।

তিনি আরও বলেন, কারাগারগুলো মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। দেশের ৬৮টি কারাগার একেকটি টর্চার সেল। যেখানে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু আতঙ্কে থাকেন রাজনৈতিক বন্দিরা। গায়েবি মিথ্যা মামলায় সুস্থ সবল নেতাকর্মীদের ধরে নির্যাতন করে কারাগারে নিক্ষেপের পর লাশ বানিয়ে বের করা হচ্ছে। কারাগার থেকে বের হচ্ছে লাশের সারি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপির নেতাকর্মীসহ চলতি বছরে জেল হেফাজতে প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে জেল হেফাজতে ৯৩ জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সর্বোচ্চ। গত বছর জেল হেফাজতে মৃত্যু হয় ৬৫ জনের, যাদের বেশির ভাগই বিএনপির নেতাকর্মী। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেও ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মম নির্যাতন করে অসুস্থ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে পেঁয়াজ-রসুন এবং ডাল-চালের দাম নিয়ে নৈরাজ্য চলছে। সেদিকে সরকারের বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই। ব্যবসায়ীরা যেমন খুশি দাম নির্ধারণ করছেন। সরকারের কোনো বিধিবিধান তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। সরকার যদি নির্বাচিত হতো বা জনগণের ভোটের প্রয়োজন পড়তো তাহলে দলীয় ব্যবসায়ীদের হাতের বাজারের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিত না।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

গরমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে হাইকোর্টের আদেশ: আপিল করবে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

কারাগারে মৃত্যুঝুঁকিতে বিএনপির নেতাকর্মীরা : রিজভী

Update Time : ০৯:২৩:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

দেশের কারাগারগুলোতে বিএনপির নেতাকর্মীরা মৃত্যুর ঝুঁকিতে রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, কেউ যাতে টু-শব্দও না করতে না পারে সেজন্য কারাগারের ভেতরে-বাইরে বিরোধী দলের সক্রিয় নেতাকর্মীদের ওপর নানাবিধ অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। অবর্ণনীয় পৈশাচিক কায়দায় কারাবন্দিদের নির্যাতন করা হচ্ছে। বন্দিদের চিকিৎসা না দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। অসুস্থ বন্দিদের হাত-পায়ে শিকল পরিয়ে কারা হাসপাতালে ফেলে রাখা হচ্ছে।

তিনি বলেন, কারাগারে দম বন্ধ করা সেলে দিনরাত লকআপে রেখে গরু-ছাগলের খাবারের জন্য প্রযোজ্য অতি নিম্নমানের খাবার দিয়ে বন্দিদের অসুস্থ বানিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর দায় এড়ানোর জন্য গল্প সাজিয়ে মিথ্যাচার করছে। তবে জেল হেফাজতে মৃত্যুর দায় এড়াতে পারবে না কারা কর্মকর্তারা। প্রতিটি মৃত্যু ও হত্যার জন্য তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

সম্প্রতি ব্রিটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকার একটি প্রতিবেদন তুলে ধরে রিজভী বলেন, ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার পুলিশ বাহিনী সম্প্রতি ধরপাকড় চালিয়ে হাজার হাজার বিরোধী নেতাকর্মী, সমর্থক দিয়ে বাংলাদেশের কারাগারগুলো ভরে ফেলেছে। কারাগারে তারা অসুস্থ হচ্ছেন এবং সেখানে ধুঁকে ধুঁকে মরছেন।

তিনি বলেন, দেশের ৬৮টি কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা ৪৩ হাজারের কম হলেও সেখানে গণমাধ্যমের হিসাবে প্রায় ৮৮ হাজার বন্দি রয়েছে। অবৈধ দখলদার সরকার তাদের দখলদারত্ব ধরে রাখার জন্য পুরো দেশকে নরকপুরীতে পরিণত করেছে। ঘরে বাইরে কোথাও নিরাপত্তা নেই। সরকারের প্রতিপক্ষদের জীবন রাষ্ট্রীয় নজরদারি বন্দুকের নলের নিচে বন্দি। দুর্বিনীত দুঃশাসনের করাল গ্রাসে দেশবাসী অজানা আশঙ্কায় আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে।

তিনি আরও বলেন, কারাগারগুলো মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে। দেশের ৬৮টি কারাগার একেকটি টর্চার সেল। যেখানে প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু আতঙ্কে থাকেন রাজনৈতিক বন্দিরা। গায়েবি মিথ্যা মামলায় সুস্থ সবল নেতাকর্মীদের ধরে নির্যাতন করে কারাগারে নিক্ষেপের পর লাশ বানিয়ে বের করা হচ্ছে। কারাগার থেকে বের হচ্ছে লাশের সারি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপির নেতাকর্মীসহ চলতি বছরে জেল হেফাজতে প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের মধ্যে জেল হেফাজতে ৯৩ জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সর্বোচ্চ। গত বছর জেল হেফাজতে মৃত্যু হয় ৬৫ জনের, যাদের বেশির ভাগই বিএনপির নেতাকর্মী। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকেও ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে নির্মম নির্যাতন করে অসুস্থ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে পেঁয়াজ-রসুন এবং ডাল-চালের দাম নিয়ে নৈরাজ্য চলছে। সেদিকে সরকারের বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ নেই। ব্যবসায়ীরা যেমন খুশি দাম নির্ধারণ করছেন। সরকারের কোনো বিধিবিধান তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। সরকার যদি নির্বাচিত হতো বা জনগণের ভোটের প্রয়োজন পড়তো তাহলে দলীয় ব্যবসায়ীদের হাতের বাজারের নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিত না।