চলমান আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করে জনগণকে রাষ্ট্রের মালিকানা ফেরত দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর যে বক্তব্য দিয়েছেন তা দেশের ১৮ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে। তিনি শেখ হাসিনাকে স্তুতি আর প্রশংসার বন্যায় ভাসিয়েছেন। তার বক্তৃতা শুনে তার সম্পর্কে যারা অবগত তারা রীতিমতো বিস্মিত-হতবাক। দেশের নাগরিক সমাজসহ জনগণ হতভম্ব।
তিনি বলেন, এম জে আকবরের মন্তব্য কর্তৃত্বসুলভ ও বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌম ইচ্ছাকে অসম্মানের শামিল। বাংলাদেশ কোনো স্যাটেলাইট স্টেট নয়। বাংলাদেশের জনগণ কোনো দেশের প্রোটেক্টরেট নয়। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ। বর্তমানে দেশের মানুষ গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা বঞ্চিত। চলমান আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করে জনগণকে রাষ্ট্রের মালিকানা ফেরত দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, এম জে আকবর বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মুক্তি সংগ্রামের নেতা। অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে দেখছি, তার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ভালোভাবেই এগিয়ে চলেছে এবং গণতন্ত্র শক্তিশালী হচ্ছে। শেখ হাসিনা জাতিকে শুধু উন্নয়নের দিকে নয়, চারটি মাত্রাবিশিষ্ট আধুনিকতার দিকে নিয়ে গেছেন। বাংলাদেশকে যারা নিষেধাজ্ঞার ভয় দেখাচ্ছে, তারা ভুলে যাচ্ছে যে বাংলাদেশ এখন ভীতু দেশ নয়। ভয় দেখালেই ভয় পাবে, এটা কাজে দেবে না।’ তার মতো একজন প্রাজ্ঞ সাংবাদিক ও রাজনীতিক কী করে সবকিছু জেনেশুনেও একনায়কতন্ত্রের পক্ষে, ১৮ কোটি বাংলাদেশির বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কথা বলেন।
এম জে আকবরের উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনসমর্থনহীন শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকা আপনাাদের কী স্বার্থ নিশ্চিত করে? আপনাদের সমর্থনে শেখ হাসিনা এদেশে নিষ্ঠুর বর্বরতা চালাচ্ছেন। দখলদার শেখ হাসিনা দীর্ঘ দেড় দশকে বহুমাত্রিক লুটপাটের আধুনিকীকরণ করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা ফিলিপাইনের ক্যাসিনোতে ঘুরে বেড়ায় শেখ হাসিনার তথাকথিত উন্নয়নের সরকারের বদান্যতায়।
তিনি বলেন, এম জে আকবরের বক্তব্য বাংলাদেশের জনগণকে অবজ্ঞার শামিল। ভারত কি তাহলে বাংলাদেশের জনগণকে উপেক্ষা করে শুধু আওয়ামী লীগকেই বন্ধুত্বের বন্ধনে আঁকড়ে রাখতে চায়? আমরা তো ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাই না। বাংলাদেশি নাগরিকরা অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সমমর্যাদার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়াতে বিশ্বাস করে।
তিনি আরও বলেন, আমরা বিশ্বাস করি আওয়ামী লীগের ভোট চুরির দোসর হবে না ভারত। প্রতিবেশী হিসেবে ভারত এদেশের ১৮ কোটি মানুষের গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের পক্ষে দাঁড়াবে- এটাই বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে।