০৩:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিরসরাইয়ে আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ১১

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৩৪:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩
  • 22

ট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।  আজ রবিবার (০১ জানুয়ারি) ভোরে উপজেলার জোরারগঞ্জ বাজারে মুক্তিযোদ্ধা হোটেলের সামনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ দুই পক্ষের অন্তত ১১ আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা সবাই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মী।

সংঘর্ষে আহত নেতা-কর্মীরা হলেন—জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাহেদ বিন কামাল, সাধারণ সম্পাদক সেফায়েত হোসেন, ছাত্রলীগের কর্মী আবদুর রহমান (১৮), সাইফুদ্দিন রিফাত (১৭), আমজাদ হোসেন (২১), রাহুল বড়ুয়া (২৪), মো. তারেক হোসেন (২৬), মিরাজ আকবর (২০), সরোয়ার হোসেন (২২), কাউসার আহমেদ (৩০) ও যুবলীগের কর্মী রিয়াজ উদ্দিন (৩৬)। তাঁরা সবাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২২ ডিসেম্বর থেকে মিরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ১০ দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু হয়। আজ মেলার শেষ দিন। মেলার আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক ছিলেন রেজাউল করিম। তিনি জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। মেলা শেষ হওয়ার পর ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে রেজাউল করিমের অনুসারীদের সঙ্গে জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাইনুদ্দিন টিটুর অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় ছররা গুলিতে ৭ জনসহ ১১ জন আহত হন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ সাতজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রেজাউল করিম বলেন, বিজয় মেলাকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি করতে না পারায় মাইনুদ্দিন টিটুর অনুসারীরা মেলার সঙ্গে যুক্ত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন। তাঁদের ছররা গুলিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আহত হন। ওই নেতা-কর্মীদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে মাইনুদ্দিন টিটুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

অভিযোগের বিষয়ে মাইনুদ্দিন টিটু বলেন, ‘গতকাল শনিবার ভোররাতে জোরারগঞ্জ বাজারের মুক্তিযোদ্ধা হোটেলের সামনে চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের অনুসারীরা আমার কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী ছেলেদের ওপর প্রথমে হামলা করেন। পরে প্রতিরোধ করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে চেয়ারম্যানের অনুসারীদের হাতে মারধরে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী পাঁচ ছেলে আহত হয়েছেন। এ সংঘর্ষের সঙ্গে আমি কোনোভাবেই যুক্ত নই।’

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আদিত ইসমাইল বলেন, জোরারগঞ্জে মেলা এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় ১১ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে গুলিবিদ্ধ সাতজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে চার থেকে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি আমরা। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

মিরসরাইয়ে আ.লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ১১

Update Time : ০৯:৩৪:৫৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জানুয়ারী ২০২৩

ট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।  আজ রবিবার (০১ জানুয়ারি) ভোরে উপজেলার জোরারগঞ্জ বাজারে মুক্তিযোদ্ধা হোটেলের সামনে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ দুই পক্ষের অন্তত ১১ আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা সবাই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মী।

সংঘর্ষে আহত নেতা-কর্মীরা হলেন—জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাহেদ বিন কামাল, সাধারণ সম্পাদক সেফায়েত হোসেন, ছাত্রলীগের কর্মী আবদুর রহমান (১৮), সাইফুদ্দিন রিফাত (১৭), আমজাদ হোসেন (২১), রাহুল বড়ুয়া (২৪), মো. তারেক হোসেন (২৬), মিরাজ আকবর (২০), সরোয়ার হোসেন (২২), কাউসার আহমেদ (৩০) ও যুবলীগের কর্মী রিয়াজ উদ্দিন (৩৬)। তাঁরা সবাই উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২২ ডিসেম্বর থেকে মিরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে জোরারগঞ্জ আদর্শ উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ১০ দিনব্যাপী মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা শুরু হয়। আজ মেলার শেষ দিন। মেলার আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক ছিলেন রেজাউল করিম। তিনি জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। মেলা শেষ হওয়ার পর ভোররাত সাড়ে চারটার দিকে রেজাউল করিমের অনুসারীদের সঙ্গে জোরারগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাইনুদ্দিন টিটুর অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় ছররা গুলিতে ৭ জনসহ ১১ জন আহত হন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ সাতজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

রেজাউল করিম বলেন, বিজয় মেলাকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি করতে না পারায় মাইনুদ্দিন টিটুর অনুসারীরা মেলার সঙ্গে যুক্ত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেন। তাঁদের ছররা গুলিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা আহত হন। ওই নেতা-কর্মীদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করে মাইনুদ্দিন টিটুকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।

অভিযোগের বিষয়ে মাইনুদ্দিন টিটু বলেন, ‘গতকাল শনিবার ভোররাতে জোরারগঞ্জ বাজারের মুক্তিযোদ্ধা হোটেলের সামনে চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের অনুসারীরা আমার কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী ছেলেদের ওপর প্রথমে হামলা করেন। পরে প্রতিরোধ করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে চেয়ারম্যানের অনুসারীদের হাতে মারধরে আমার শুভাকাঙ্ক্ষী পাঁচ ছেলে আহত হয়েছেন। এ সংঘর্ষের সঙ্গে আমি কোনোভাবেই যুক্ত নই।’

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক আদিত ইসমাইল বলেন, জোরারগঞ্জে মেলা এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় ১১ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। আহত ব্যক্তিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে গুলিবিদ্ধ সাতজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার করা নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে চার থেকে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি আমরা। তবে এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’