1. [email protected] : নিজস্ব প্রতিবেদক :
  2. [email protected] : rahad :
অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অধিকাংশের মালিক স্থানীয় এক শ্রেণীর রাজনৈতিক নেতা। | JoyBD24
মঙ্গলবার, ২৩ মে ২০২৩, ০৩:১৩ অপরাহ্ন

অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার অধিকাংশের মালিক স্থানীয় এক শ্রেণীর রাজনৈতিক নেতা।

রিপোর্টারের নাম
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২ জুন, ২০২২

সারাদেশে অলিগলিতে চিকিৎসা সেবার নামে অবাধে অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছে অসংখ্য অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশের মালিক স্থানীয় এক শ্রেণীর রাজনৈতিক নেতা, সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার, টেকনিশিয়ানসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিভিন্ন সময় বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্তৃপক্ষকে চাপ দেওয়া হলেও তা কাজে আসেনি। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা প্রভাবশালী। স্বাস্থ্য প্রশাসনকে তারা পাত্তা দেন না। ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও এমপি-মন্ত্রীদের সঙ্গে তাদের সখ্যতা থাকে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতারা একাকার হয়ে অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক চালাচ্ছেন। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও অবৈধ ব্যবসার ক্ষেত্রে তারা ঐক্যবদ্ধ। স্বাস্থ্য প্রশাসনের সঙ্গে আঁতাত করেই তারা তাদের রমরমা বাণিজ্য করে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য), সিভিল সার্জন কার্যালয় ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। তারা নিয়মিত মাসোহারা পেয়ে থাকেন অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মালিকের কাছ থেকে। এছাড়া এতো হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শনের মতো জনবলও নেই স্বাস্থ্য প্রশাসনে।

গত ২৬ মে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে তিন দিনের মধ্যে অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা জারির পর গত ২৮ মে থেকে অভিযান শুরু হয়। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে জেল-জরিমানাও করা হচ্ছে। এ অভিযান অব্যাহত আছে। চলমান অভিযানের ব্যাপারে মোবাইল কোর্ট সূত্র ও ইত্তেফাকের স্থানীয় প্রতিনিধিরা জানান, বেশিরভাগ অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এবং সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আবার কোথাও পৌর মেয়রও মালিক। তারা কোন কিছুরই তোয়াক্কা করেন না। অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক তালাবদ্ধ করা হলেও পরদিন তা আবার চালু করা হয়। আর সরকারি হাসপাতালে রোগী গেলে তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হয় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। অথচ সরকারি হাসপাতালে সব ধরনের পরীক্ষা ও চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা আছে। যা অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নেই। তারপরও সেখানে পাঠানো হয়। এক্ষেত্রে ৫০ ভাগ কমিশন পান এক শ্রেণীর ডাক্তার, নার্স, টেকনিশিয়ানসহ কর্মচারীরা। হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার থাকলেও রোগীদের অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পাঠিয়ে সেখানে অপারেশন করেন একই ডাক্তার। অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মালিকরা ইত্তেফাকের স্থানীয় প্রতিনিধিদের বলেন, লেখালেখি করে কোন লাভ হবে না। আমাদের সাথে স্বাস্থ্য প্রশাসনের যোগাযোগ আছে। তাদের আমরা নিয়মিত উত্কোচ দেই।

৮৮২ ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ৮৮২ ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ
নীলফামারী জেলায় প্রায় ২০০ অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর অধিকাংশের মালিক সরকারি হাসপাতালের এক শ্রেণীর ডাক্তার, কর্মচারী এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা। কোথাও আবার ডাক্তারের স্ত্রীরাও মালিক। অভিযান চালালে কিছুদিন এসব অবৈধ হাসপাতাল ক্লিনিক বন্ধ থাকলেও আবার চালু হয়ে যায়। কুড়িগ্রামেও দুই শতাধিক অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা যৌথভাবে এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশের মালিক। বরগুনায় ৬টা অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক তালাবন্ধ করার পরদিন আবার খোলা হয়েছে। ভোলায় অধিকাংশ অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিকের মালিক রাজনৈতিক নেতা, সরকারি হাসপাতালের এক শ্রেণীর ডাক্তার ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এক শ্রেণীর স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা এসব অধিকাংশ অবৈধ ক্লিনিক পরিচালনার নেপথ্যে রয়েছেন। সারাদেশের অধিকাংশ অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারেরর মালিক প্রভাবশালীরা। অতি সম্প্রতি ভোলায় ডা. রায়হানুল হক নামক একজন চিকিত্সক কম টেস্ট লেখেন বলে তাকে অপদস্থ করা হয়, এক পর্যায়ে তাকে বের করে দেওয়া হয়। আবার সরকারি হাসপাতালে আউটসোর্সিংয়ের কর্মচারীও রোগী ভাগিয়ে অবৈধ হাসপাতালে পাঠানোর দালালি করে আসছেন। রংপুরে অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক রয়েছে ৯৯টি। মাসের পর পর এসব অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মাসোহারা দিয়ে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে আসছে। এগুলো বন্ধ করা হলে, কয়েকদিন পরে আবার চালু করা হয়। সরকারী উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে ৩১ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে প্রদান করছে। জেলা পর্যায়ের হাসপাতালে প্রায় ৮০ ধরনের ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। সরকারিভাবে সরবরাহকৃত এসব ওষুধের ৯৫ ভাগই রোগীরা পায় না। সরকারি হাসপাতালের এসব ওষুধ বাইরে পাচার হয়ে যায়। হাসপাতালের আশপাশের ওষুধের দোকানে ওই সব ওষুধ পাওয়া যায়।

স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতেই অনুমোদনহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবায় ১১ হাজার ডায়াগনস্টিক সেন্টার কাজ করছে। এর মধ্যে অনেক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এদের কারণে যাতে সাধারণ মানুষ প্রতারিত না হয় সেদিকে আমরা নজর দিচ্ছি। আমাদের উদ্দেশ্য কাউকে হেনস্তা করা নয়, স্বাস্হ্যসেবার মান বাড়ানো।’ বুধবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন হলে ‘জাতীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, অভিযানের লক্ষ্য হচ্ছে মানহীন প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া, অথবা সতর্ক করে দেয়া যাতে তারা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঠিক করে নিতে পারে। বেসরকারি খাতের হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ব্লাড ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে জনগণ যেন প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

এছাড়া বান্দরবান প্রতিনিধি, নিয়ামতপুর (নওগাঁ) সংবাদদাতা, তিতাস (কুমিল্লা) সংবাদদাতা, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতা ও বাকেরগঞ্জ (বরিশাল) সংবাদদাতা স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে অভিযানসহ হাসপাতালগুলোর সার্বিক চিত্র পাঠিয়েছেন ।
সূত্র -ইত্তেফাক

 

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2012 joybd24
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: Joybd24