চসিক ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লায়ন ইলিয়াসের কাজে বাধা দিচ্ছেন ইউনিট আওয়ামীলীগ সভাপতি নাহিদুল ইসলাম।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ২৬ নং ওয়ার্ড এর ইউনিট আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ নাহিদুল ইসলাম মজুমদারের সাথে বর্তমান জনপ্রতিনিধি ওয়ার্ড কাউন্সিলর লায়ন মোঃ ইলিয়াসের দ্বন্দ প্রকাশ্যে রুপ নিয়েছে। সিটি কর্পোরেশান ময়লার ডাম্পিং পয়েন্ট নিয়ে সম্প্রতি এমন দ্বন্দ এলাকায় বহুল আলোচিত বিষয়।
সরজমিনে এলাকা ঘুরে ও এলাকাবাসীদের সাথে কথা বলে আমাদের জয়বিডি চট্টগ্রাম প্রতিনিধি সেলিম কৌশিক উক্ত প্রতিবেদনটি তৈরী করেন।
জানা যায়, জনাব মোঃ নাহিদুল ইসলাম মজুমদার ২৬ নং ওয়ার্ডের “গ” ইউনিট আওয়ামীলিগের বর্তমান সভাপতি ও লায়ন মোঃ ইলিয়াস ২৬ নং ওয়ার্ড থেকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত বর্তমান ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত দেড় যুগেরও বেশী সময় ধরে বি-ব্লক রোড নং ৩ এর ২নং লেইন এর শেষ মাথায় বর্তমান খালপাড় সংলগ্ন রাস্তার পাশে “তামান্না” ডম্পিং নামে পরিচিত সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত খালি জায়গায় কলোনীর সকল ময়লা আবর্জনা পরিচ্ছন্ন কর্মীরা সংগ্রহ করে জমা করেন। পরে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় উক্ত ডাম্পিং পয়েন্ট থেকে ময়লা আবর্জনা সিটি কর্পোরেশনের গাড়ী এসে নিয়ে যায় যা এভাবে নিয়মিত ভাবে কারো কোন অভিযোগ ছাড়াই স্থানটি ডাম্পিং পয়েন্ট হিসেবে দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আরও জানা যায় যে, ৩ নং রোডের ২ নং লেইনে বর্তমান ওয়ার্ডের “গ” ইউনিট আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. নাহিদুল ইসলাম মজুমদারের বহুতল বাসভবন অবস্থিত।
উল্লেখ্য, বর্তমান কাউন্সিলর লায়ন মোঃ ইলিয়াসের পূর্বে উক্ত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন বিএনপি থেকে নির্বাচিত মোঃ হাশেম এবং তারও আগে পর পর দুই বার ২৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিল হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন আওয়ামীলীগের মোঃ হোসেন। কিন্তু এতোদিন এলাকার কাউকে উক্ত ডাম্পিং পয়েন্টটি সরিয়ে নেবার বা ডাম্পিং পয়েন্টি স্থায়ীভাবে বন্ধ করা নিয়ে কোন ধরনের কাউকে প্রতিবাদ বা অভিযোগ করতে শোনা যায়নি। এমনকি নাহিদুল ইসলাম মজুমদারের বাসবভনের খুব কাছাকাছি উক্ত ডাম্পিং পয়েন্ট হওয়া সত্বেও তাকেও কখনো এ নিয়ে কোন ধরনের অভিযোগ করতে শোনা যায়নি।
এ অবস্থা হঠাৎ গত ০৬/০৯/২০২২ইং রোজ মঙ্গলবার বিপুল সংখ্যক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের নিয়ে হালিশহর “গ” ইউনিট আওয়ামী লীগে সভাপতি নাহিদুল ইসলাম মজুমদারের নেতৃত্বে এই ডাম্পিং গ্রাউন্ডের স্থান পরিবর্তন এর জন্য দাবি তোলা হয় এবং পরিচ্ছিন্ন কর্মীদের সেখানে ময়লা রাখতে বাধাগ্রস্থ করা হয়। এ অবস্থায় সেখানে তাৎক্ষনিক নাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এলাকার বহু সংখ্যক কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের বাধার মুখে আবর্জনা বহনকারী সিটি কর্পোরেশন গাড়ীকে ফিরিয়ে দেয়া হয় এবং পরিচ্ছন্ন কর্মিদের গালগালি ও তাদের সাথে মারমুখী আচরণ করে।
এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে হালিশহর থানা থেকে ফোর্স আসলে তাদেরও সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এদিকে গত ৬/৯/২০২২ ইং তারিখ থেকে ১০/৯/২০২২ ইং পর্যন্ত এলাকার ময়লা আবর্জনা প্রতিটি লেইনে জমতে থাকে। কোন পরিচ্ছন্ন কর্মি মারধরের ভয়ে ময়লা নিয়ে ডাম্পিং পয়েন্টে যেতে চাচ্ছে না। সিটি কর্পোরেশন থেকে নির্ধারিত ডাম্পিং পয়েন্ট কাউন্সিলর বা চসিকের কোন রকম অনুমতির তোয়াক্কা না করে নাহিদুল ইসলাম মজুমদার নিজ লোকজন দিয়ে পরিষ্কার “এখানে ময়লা ফেলা নিষেধ” সাইনবোর্ড বসিয়ে দেয়।
এদিকে পরিস্থিতি খারাপ অবস্থায় চলে যেতে শুরু করলে এলাকাবাসী কাউন্সিলরকে বিষয়টি অবহিত করে। কাউন্সিলর পুনরায় পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কলোনীর ময়লা পরিস্কারের জন্য পাঠালে নাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এলাকার বিপুল সংখ্যক কিশোররা পরিচ্ছন্ন কর্মীদের কাজে বাধা দেয় এবং তাদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এ অবস্থায় টানা ৫~৬ দিন ময়লা অপসারন বন্ধ থাকার পর গতকাল ১০/০৯/২০২২ ইং তারিখে মাননীয় মেয়র, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী’র নির্দেশে মেয়র মহোদয়ের পি.এস.ও প্রধান ভারপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাসেম উপস্থিত হন। সাথে ছিলেন মহিলা কাউন্সিলর হুরে আরা বেগম বিউটি, সংরক্ষিত আসন ১০, সাধারণ ওয়ার্ড ১১,২৫,২৬, চসিক।
সেখানে চসিকের কর্মকর্তা ও মহিলা কাউন্সিলর সহ প্রশাসনের ব্যক্তিরা পৌঁছালে বিএনপির কামাল পাশা উক্ত স্থানে এসে গালাগলি শুরু করেন, এবং উপস্থিত সকলের সম্মুখে গালিগালি করে কথা বলতে থাকেন। কিন্তু একটা সময় উপস্থিত সকলের পরিচয় জানতে পারলে সেখানে থেকে তিনি সটকে পরেন।
এর কিছুক্ষণ পর হালিশহর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোঃ মহিউদ্দিন এসে চসিকের লোকজনের সাথে তর্কে লিপ্ত হয়। পরবর্তিতে সেও রণেভঙ্গ দিয়ে দ্রুত সেখান থেকে সটকে পরে।
উক্ত পুরোটা সময়ে নাহিদুল ইসলামকে উপস্থিত সকলের সামনে তার সাথে থাকা এলাকার কিশোর গ্যাং সদস্যদের সাথে নিয়ে উচ্চস্বরে বিভিন্ন কথাবার্তা বলতে শোনা যায়, কিভাবে সিটি কর্পোরেশান এখানে ময়লা ফেলে তা দেখে নেবে, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু মেয়র মহোদয়ের পি.এস.ও প্রধান ভারপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল হাসেম ও দায়িত্ব প্রাপ্ত অনান্যরা সাফ জানিয়ে দেয় যে, অন্য কোথাও অবর্জনা ফেলার স্থান চসিক কর্তৃক নির্দিষ্ট না হওয়া পর্যন্ত এখানেই আবর্জনা ডাম্পিং করা হবে, এবং জনগনের যেনো কোন সমস্যা না হয় সে বিষয়ে নজর রাখা হবে।
কিন্তু হঠাৎ নাহিদুল ইসলামের “তামান্না” ডাম্পিং পয়েন্ট বন্ধ করার দাবী তোলার কারন কী?
এ বিষয়ে আমাদের প্রতিনিধি কারণ খুঁজতে গেলে বেড়িয়ে আসে কেঁচো খুঁড়তে অজগর সাপ।
বর্তমান সময়ে হঠাৎ হালিশহর “গ” ইউনিট আওয়ামীলীগ সভাপতি নাহিদুল ইসলামের প্রভাব বাড়তে শুরু করে। আগে এলাকায় বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং পরিচালনার জন্য নেতাদের দেখা গেলেও বর্তমানে এলাকার পুরো কিশোর গ্যাংটিকে নাহিদুল ইসলামকে নেতৃত্ব দিতে দেখা যাচ্ছে। তবে ইউনিট আওয়ামীলীগ সভাপতি হবার পর থেকে তার ক্ষমতার প্রভাব বাড়তে শুরু করে।
এ প্রসঙ্গে জয়বিড২৪.কম প্রতিনিধি কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতা কর্মী নেতা কর্মীদের সাথে কথা বলে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে আসে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে তথ্যগুলো তুলে ধরেছেন আমাদের প্রতিনিধি।
জানা যায়, হালিশহর “গ” ইউনিট আওয়ামীলীগ থেকে সভাপতি হবার জন্য স্থানীয় যেসব বৈধ ভোটারের প্রয়োজন ছিলো তার মধ্যে ১৮০ টি ভোট ছিলো এলাকার এবং বহিরাগত বিএনপি, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের।
উক্ত ১৮০ জনকে আওয়ামীলীগের ভোটার বানাতে সক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন কামাল পাশা নিজামী, সদস্য সচীব, জাতীয়তাবাদী কৃষকদল চট্টগ্রাম মহানগর।
নাহিদুল ইসলাম মজুমদার হালিশহর “গ” ইউনিট সভাপতি হতে নিজের সমর্থনে ১৮০ জন বিএনপি সমর্থিত সক্রিয় সদস্যদের আওয়ামীলীগের ভোটার বানিয়ে নিজেকে জয়ী করেন। উক্ত ভোটার লিষ্টটি জয়বিড২৪.কমের হাতে এসেছে। এবিষয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা জানান, নাহিদুল ইসলাম তার রাজনৈতিক জীবনে কখনোই মুজিব আদর্শের আওয়ামীলীগের কোন সমর্থিত ব্যক্তি ছিলেন না। শুধুমাত্র নিজের অবৈধ কার্যকলাপ চালিয়ে যেতে দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগের ব্যানারে নিজের সাইনবোর্ড তৈরী করে এলাকায় নিজের কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন। তার উপযুক্ত প্রমান হলো, উক্ত ২৬ নং ওয়ার্ডে গেলো ৪ টি কাউন্সিলর নির্বাচনের সবকটিতে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন। কিন্তু পূর্বের কাউন্সিলর নির্বাচনে তৎকালীন কাউন্সিলর মোঃ হোসেন কমিশনারকে সমর্থন না দিয়ে প্রকাশ্যে বিএনপি সমর্থিত মোঃ হাশেমকে সমর্থন করেন। উক্ত নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত নির্বাচিত কাউন্সিলরকে নির্বাচনের পর ফুলেল শুভেচ্ছাও দিতে দেখা গেছে। এছাড়া তৎকালীন কাউন্সিল মোঃ হাশেমকে নিয়ে নাহিদুল ইসলাম একাধিকবার নিজের বাসভবনে গোপন বৈঠকের বিষয়টি এলাকাতে ওপেন সিক্রেট। করোনা কালীন সময়ে তৎকালীন বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিল মোঃ হাশেমকে নিয়ে নাহিদুল ইসলাম ও তার বড় ভাই ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীহের ভারপ্রাপ্ত সাঃ সম্পাদক নাজিমুল ইসলাম সহ সরকারের দেয়া বিপুল পরিমান ত্রাণ আত্মসাৎয়ের অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন আওয়ামীলীগ নেতা বলেন, বর্তমান ৩ নং রোডের ২ নং লেইনের খাল পাড় সংলগ্ন অবর্জনার ডাম্পিং স্থানটি ছিলো মূল খাল পাড়ে। তখন নাহিদুল ইসলাম ও তার পরিবারের সদস্যরা পুরো মহেশ খাল পাড় দখল করে সেখানে বস্তিঘর বানিয়ে ভাড়া তুলতে শুরু করলে আবর্জনার ডাম্পিং স্থানটি বর্তমান স্থানে স্থানান্তরিত হয়। গত একযুগেরও বেশী সময় ধরে দখল করা খালপাড়টি সংস্কারের জন্য সিটি কর্পোরেশানের থেকে অবৈধ বস্তির একাংশ ভেঙ্গে ফেললে নাহিদুল ইসলাম এখন বর্তমান ডাম্পিং স্থানটি দখল করে সেখানে দোকান ও বস্তিঘর তৈরীর জন্য কুটকৌশলের আশ্রয় নেয়। বর্তমান ডাম্পিংয়ের স্থানটি দখল করতে পারলে নাহিদুল ইসলাম ২ নং লেইন সংলগ্ন হালিশহর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল ঘরটিতে তার অবৈধ কার্যকলাপে সুবিধা হবে। জানা যায়, রাতে এই স্কুল ঘরটিতে নাহিদুল ইসলাম ও শিক্ষক মোঃ মহিউদ্দিন মাস্টারের ছত্রছায়ায় জুয়ার আড্ডা বসে ,এলাকায় স্কুল ঘরটি স্কুল নয় (বিএনবি ) হোটেল নামে পরিচিত এইটি মাদক এবং দেহ ব্যাবসার আড্ডা । এ অবস্থায় বর্তামান ডাম্পিং পয়েন্টটি নাহিদুল ইসলাম দখল করতে পারলে পুরো স্কুল ঘরটিতে তার প্রভাব ও অবৈধ কার্যকলাপ আরো বৃদ্ধি পাবে।
এলাকার অনেক সাধারণ জনগন তাদের প্রতিক্রিয়ায় জানান, সম্পূর্ণ খালপাড়টি বর্তমান কাউন্সিলর লায়ন মোঃ ইলিয়াস দায়িত্ব নেবার পর হতে খালপাড়টি নিরাপদ হয়। একসময় পুরো খালপাড় জুড়ে কিশোর গ্যাংয়ের আড্ডা, সন্ধ্যার পর রাত বাড়তে শুরু করলে ছিনতাই, মাদক, উঠতি বয়সের ছেলে মেয়েদের অবৈধ কার্যকলাপ নিত্যকার ব্যাপার ছিলো। এসব অনৈতিক কাজ বন্ধ করার জন্য নাহিদুল ইসলামকে তার অবৈধ বস্তি সরিয়ে ফেলতে বললে সে আরও মারমুখো আচরণ করতো। বর্তমান কাউন্সিলরের সুন্দর ও প্লান মাফিক কাজের জন্য পুরো খালপাড়টি এখন যান চলাচলা থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের হাটা চড়ার নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করে।
নাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এতো সব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সবাই আমাকে খারাপ বলে, আমি অবৈধ ভাবে জায়গা দখল করে ভাড়া নিয়ে থাকি, জুয়ার ব্যবসা করি, সুদের ব্যবসা করি, কিন্তু এতো টাকা কি আমি একলা খাই? স্থানীয় অনেক দলীয় নেতা থেকে শুরু করে থানা পুলিশ , ডিসি শেখ হাসিনার দপ্তর পর্যন্ত ভাগের টাকা পাঠাতে হয়। তিনি আরো বলেন প্রতি মাসে থানা পুলিশের পিছে ১ লক্ষ টাকা খরচ আছে তারপর তো ………… তার বিরুদ্ধে বর্তমান ডাম্পিং পয়েন্টটি দখল করা ও এলাকায় কিশোর গ্যাং পরিচালিত করার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে নাহিদুল ইসলাম বলেন, এটি সত্য নয়, সাধারণ জনগনের চলাচলের সুবিধা ও সুস্থ পরিবেশ তৈরীর জন্য আমি আমার নৈতিক দায়িত্ব থেকে উক্ত স্থান থেকে ময়লার স্থানটি অন্যত্র স্থাপন করার জন্য দাবী জানাচ্ছি, আর আমার এলাকায় কোন কিশোর গ্যাং নাই, এলাকার কিশোররা আমাকে মামা বলে ডাকে, তারা সবাই ছাত্র, তাদের সম্পর্কে কিছু স্বার্থ সুযোগসন্ধ্যানী মানুষ বদনাম করছে। আমি এদের সবইকে খুব স্নেহ করি।
এদিকে ২৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, নাহিদুল ইসলাম আমাদের সম্মানিত কাউন্সিলর লায়ন মোঃ ইলিয়াস স্যারকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। ডাম্পিং স্থানটি সম্পর্কে ওনাকে বার বার অবগত করা হয়েছে যে, সিটি কর্পোরেশান কর্তৃক নতুন জায়গা নির্ধারিত না হওয় পর্যন্ত এখানে ডাম্পিং করা ছাড়া উপায় নাই। বরং আমাদের কাউন্সিলর স্যারও আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন যে অত্র ওয়ার্ডের সকল জনগনের সকল প্রকার অসুবিধা সমাধানে কাজ করা। কিন্তু নাহিদুল ইসলাম তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে প্রায়ই আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের মারধর করা ও কাজে বাধা প্রদান করে যাচ্ছেন।
এদিকে, এলাকার একজন প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা জানান, এভাবে হঠাৎ দীর্ঘদিন ধরে ডাম্পিং হিসেবে ব্যবহার করা জায়গাটিকে কোন আলোচনা ছাড়া কেউ গায়ের জোড়ে বন্ধ করে দেয়াটা যৌক্তিক না। যেহেতু বিষয়টি সরাসরি কাউন্সিলরের সাথে সম্পর্কিত তাই সমস্যা হলে তার সাথে গঠনমূলক আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। তবে এভাবে হঠাৎ জায়গা পরিষ্কার করে সাইন বোর্ড লাগিয়ে দেবার কোন যুক্তি নাই।
বর্তমানে এলাকাবাসী নাহিদুল ইসলামের পালন করা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ। প্রতিদিন প্রতিটি লেইনে তাদের ঔদৌত্য চলাফেরা বেড়ে গেছে। ভয়ে কেউ কিছু বলছে না। যারা এর মধ্যে প্রতিবাদ করেছেন তাদের মারধর করা, চাঁদা আদায় করে। এলাকার সাধারন জনগন এর থেকে দ্রুত সমাধান কল্পে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যক্তিদের সাহায্য চেয়েছেন।
অন্যদিকে এলাকাবাসী জানান যে, চট্টগ্রাম-১০ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য ডাঃ আসারুল আমিন দীর্ঘ দিন অসুস্থ হবার কারণে ঢাকায় অবস্থান করছেন। চিকিৎসা জনিত কারণে বিগত অনেকদিন তিনি এলাকায় না থাকতে পারায় নাহিদুল ইসলাম মজুমদার এমপি মহোদয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে এসব অবৈধ কার্যকলাপ নির্বিঘ্নে করে যেতে পারছেন। কারন এমপি মহোদয় যতোদিন এলাকায় নিয়মিত আসা যাওয়ার মধ্যে ছিলেন নাহিদুল ইসলাম এসব অপকর্ম করার সাহস করতে পারেন নি। তবে সরজমিনে দেখা যায় যে, খাল পাড়ে এখনও নাহিদুল ইসলামের যে সব অবৈধ বস্তিঘর আছে, সেখানে একাধিক ডাবল বার্ণার গ্যাস সংযোগ, পানির লাইন ও বিদ্যুৎ লাইন অবৈধ ভাবে দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছে, যা থেকে সরকার অদ্যবধি কোটি টাকার বিল থেকে বঞ্চিত হয়েছে। জনসাধারণ খালপাড়ের এই সব অবৈধ গ্যাস সংযোগ, পানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ ও বস্তি উচ্ছেদ করার জন্য জোর দাবি জানিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ।