বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু এবং তার স্ত্রীর ওপর হামলা হয়েছে। শনিবার বিকালে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের বিপুলাসার বাজারে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর গুরুতর অবস্থায় বরকত উল্লাহ বুলু, তার স্ত্রীসহ আহতদেরকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। হামলায় স্থানীয় বিপুলাসার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ হোসেনসহ অন্তত ৭ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
জানা গেছে, সস্ত্রীক বাড়ি থেকে ঢাকা ফেরার পথে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে বিকাল ৫টার দিকে বিপুলাসার বাজারে পৌঁছালে স্থানীয় বিএনপি নেতা সাবেক চেয়ারম্যান শরীফ হোসেনের অনুরোধে যাত্রা বিরতি করেন। এ সময় বাজারের মক্কা হোটেলে তারা চা-নাস্তা খেতে বসলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাদের উপর হামলা চালায়। এতে বরকত উল্লাহ বুলু, তার স্ত্রী ও বিপুলাসার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ হোসেনও রক্তাক্ত জখম হন।
বরকত উল্লাহ বুলুর ছেলে জানান, ‘নোয়াখালী থেকে ঢাকায় ফেরার পথে হামলায় মা ও বাবা দু’জনই গুরুতর আহত হয়েছেন। জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের শতাধিক নেতাকর্মী এ হামলা করেছে। তাদের ওপর লোহার রড ও লাঠিসোটা দিয়ে হামলা করা হয়। এতে আমার বাবার মাথা ফেটে রক্ত ঝরে, সম্ভবত তার ডান হাত ভেঙে গেছে।’ তিনি আরও জানান, সঙ্গে থাকা আরও ৪ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তারা হলেন মোস্তফা রাজু ফারুক ও গাড়ি চালক আলী।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহ সুলতান খোকন বলেন, শনিবার বিকালে নোয়াখালী থেকে সস্ত্রীক ঢাকায় ফিরছিলেন বরকত উল্লাহ বুলু।
পথে গাড়ির চাকা পাংচার হলে তিনি স্থানীয় বিএনপি নেতা শরীফ হোসেনকে ফোন দেন। এ সময় শরীফ সাহেব চা খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। তারা চা-নাস্তা খেয়ে বের হওয়ার সময় স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা, লোহার রড নিয়ে হামলা চালায়। স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে কুমিল্লায় আনা হয়। রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সরওয়ার জাহান দোলন জানান, নোয়াখালী থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে বিপুলাসার বাজারে একটি চা দোকানে মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শরীফ হোসেনসহ চা খাচ্ছিলেন বরকত উল্লাহ বুলু। এ সময় তাদের উপর হামলা করা হয়।
তবে মনোহরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘বরকত উল্লাহ বুলুর ওপর হামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। এ ঘটনায় আমাদের নেতাকর্মী জড়িত বলে মনে হচ্ছে না। আমি একটু আগে হামলার কথা শুনলাম। ঢাকায় অবস্থান করায় এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানি না।’
এ বিষয়ে নাথেরপেটুয়া ফাঁড়ি ইনচার্জ জাফর ইকবাল বলেন, কে বা কারা হামলা চালিয়েছে জানি না। খবর পেয়ে নাথেরপেটুয়া ভূঁইয়া মেডিকেলে বরকত উল্লাহ সাহেবকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পরে তিনি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা করেন।
মনোহরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আলম বলেন, তিনি কোনো ইনফরমেশন ছাড়াই স্থানীয় মক্কা হোটেলে এক বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে চা খাচ্ছিলেন। এ সময় হামলা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে কে বা কারা হামলা চালিয়েছে তা আমরা জানি না। আমাদের কাছে এ বিষয়ে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করছি আমরা।