১২:২৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের ওপর সামরিক বাহিনীর গুলিবর্ষন, বহু হতাহত।

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:১৪:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২১
  • 27

মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গনে সৈন্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর একটি সামরিক ট্রাক তুলে দিলে বেশ কয়েকজন নিহত এবং আরো বহু মানুষ আহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন সৈন্যরা এরপর ছুটে পালানো বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়, এবং অন্য অনেককে মারধর করে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ঐ বিক্ষোভ সমাবেশ শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি গাড়ি দ্রুতগতিতে জমায়েতের ভেতর ঢুকে পড়ে। নিরাপত্তা বাহিনী বেশ কজনকে আটক করেছে। খবর বিবিসির

ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে বিক্ষোভ চলার সময় ১,২০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে এবং আরও কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে বন্দি করা হয়েছে। সাম্প্রতিক এই ঘটনা নিয়ে সরকার এখনও কোন মন্তব্য করেনি, তবে এর আগে সেনা সরকার সহিংসতায় উস্কানি দেবার জন্য প্রতিবাদকারীদেরই দায়ী করেছে।

মিয়ানমারে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আজ রবিবার ইয়াঙ্গনে অন্তত তিনটি বিক্ষোভ হয়েছে।

অতীতে সৈন্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর পর থেকে প্রতিবাদকারীরা ছোট ছোট দলে সংগঠিত হয়ে বিক্ষোভ করে, যাতে হতাহতের সংখ্যা কম হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আজ ইয়াঙ্গনে প্রতিবাদকারীরা সমাবেশে ”হঠাৎ করে জড়ো হয়” এবং তারা জড়ো হবার কয়েক মিনিটের মধ্যে সৈন্যরা তাদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমাকে একটা ট্রাক ধাক্কা মারে এবং আমি ট্রাকের সামনে মাটিতে পড়ে যাই। একজন সৈন্য আমাকে রাইফেলের বাঁট দিয়ে মারে। কিন্তু আমি তাকে ঠেলে সরিয়ে দিই। তারপর সে আমাকে লক্ষ্য করে সাথে সাথে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। আমি এঁকেবেঁকে ছুটছিলাম এবং সৌভাগ্যবশত আমি পালাতে সক্ষম হই।’

জাতিসংঘ বলেছে সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হতে পারে। তবে, জাতিসংঘের দূতকে ঘটনার তদন্ত করতে কয়েকবার মিয়ানমারে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়েছে।

ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের স্বপক্ষে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা যুক্তি দেখায় এই অভিযোগ এনে যে, গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। ঐ নির্বাচনে মিয়ানমারে সেসময়কার নেত্রী অং সান সু চির দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিজয়ী হয়।

নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বলেন নির্বাচন মূলত অবাধ ও নিরপেক্ষ ছিল। মিজ সু চির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগে মামলা দায়ের করাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত বলে ব্যাপকভাবে সমালোচনা করা হয়।

এ বছরের গোড়ার দিকে শান্তিপূর্ণ নাগরিক আইন অমান্য আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের অনেকেই আত্মগোপনে চলে গেছেন অথবা সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকায় যেসব বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ঘাঁটি রয়েছে – তাদের কাছে সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

গণ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সশস্ত্র স্বেচ্ছাসেবীরা মিয়ানমারের শহর ও গ্রামে বিভিন্ন জায়গায় কয়েকশ বোমা হামলা চালিয়েছে এবং সামরিক সরকারের সাথে কাজ করছেন এমন কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে।

যেসব জায়গায় জোরালো সশস্ত্র প্রতিবাদ হয়েছে, সেসব এলাকায় সামরিক বাহিনী বড়ধরনের অভিযান চালিয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষকে জঙ্গলে পালাতে বা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে যেতে বাধ্য করেছে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

মিয়ানমারে বিক্ষোভকারীদের ওপর সামরিক বাহিনীর গুলিবর্ষন, বহু হতাহত।

Update Time : ১২:১৪:১৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২১

মিয়ানমারের বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গনে সৈন্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর একটি সামরিক ট্রাক তুলে দিলে বেশ কয়েকজন নিহত এবং আরো বহু মানুষ আহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন সৈন্যরা এরপর ছুটে পালানো বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়, এবং অন্য অনেককে মারধর করে।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ঐ বিক্ষোভ সমাবেশ শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই একটি গাড়ি দ্রুতগতিতে জমায়েতের ভেতর ঢুকে পড়ে। নিরাপত্তা বাহিনী বেশ কজনকে আটক করেছে। খবর বিবিসির

ফেব্রুয়ারির সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে বিক্ষোভ চলার সময় ১,২০০ জনের বেশি বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে এবং আরও কয়েক হাজার বিক্ষোভকারীকে বন্দি করা হয়েছে। সাম্প্রতিক এই ঘটনা নিয়ে সরকার এখনও কোন মন্তব্য করেনি, তবে এর আগে সেনা সরকার সহিংসতায় উস্কানি দেবার জন্য প্রতিবাদকারীদেরই দায়ী করেছে।

মিয়ানমারে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আজ রবিবার ইয়াঙ্গনে অন্তত তিনটি বিক্ষোভ হয়েছে।

অতীতে সৈন্যরা বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর পর থেকে প্রতিবাদকারীরা ছোট ছোট দলে সংগঠিত হয়ে বিক্ষোভ করে, যাতে হতাহতের সংখ্যা কম হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আজ ইয়াঙ্গনে প্রতিবাদকারীরা সমাবেশে ”হঠাৎ করে জড়ো হয়” এবং তারা জড়ো হবার কয়েক মিনিটের মধ্যে সৈন্যরা তাদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমাকে একটা ট্রাক ধাক্কা মারে এবং আমি ট্রাকের সামনে মাটিতে পড়ে যাই। একজন সৈন্য আমাকে রাইফেলের বাঁট দিয়ে মারে। কিন্তু আমি তাকে ঠেলে সরিয়ে দিই। তারপর সে আমাকে লক্ষ্য করে সাথে সাথে গুলি ছুঁড়তে শুরু করে। আমি এঁকেবেঁকে ছুটছিলাম এবং সৌভাগ্যবশত আমি পালাতে সক্ষম হই।’

জাতিসংঘ বলেছে সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হতে পারে। তবে, জাতিসংঘের দূতকে ঘটনার তদন্ত করতে কয়েকবার মিয়ানমারে ঢুকতে বাধা দেয়া হয়েছে।

ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের স্বপক্ষে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা যুক্তি দেখায় এই অভিযোগ এনে যে, গত বছরের সাধারণ নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। ঐ নির্বাচনে মিয়ানমারে সেসময়কার নেত্রী অং সান সু চির দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিজয়ী হয়।

নিরপেক্ষ নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা বলেন নির্বাচন মূলত অবাধ ও নিরপেক্ষ ছিল। মিজ সু চির বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগে মামলা দায়ের করাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য-প্রণোদিত বলে ব্যাপকভাবে সমালোচনা করা হয়।

এ বছরের গোড়ার দিকে শান্তিপূর্ণ নাগরিক আইন অমান্য আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদের অনেকেই আত্মগোপনে চলে গেছেন অথবা সীমান্তের নিকটবর্তী এলাকায় যেসব বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ঘাঁটি রয়েছে – তাদের কাছে সামরিক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

গণ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সশস্ত্র স্বেচ্ছাসেবীরা মিয়ানমারের শহর ও গ্রামে বিভিন্ন জায়গায় কয়েকশ বোমা হামলা চালিয়েছে এবং সামরিক সরকারের সাথে কাজ করছেন এমন কর্মকর্তাদের হত্যা করেছে।

যেসব জায়গায় জোরালো সশস্ত্র প্রতিবাদ হয়েছে, সেসব এলাকায় সামরিক বাহিনী বড়ধরনের অভিযান চালিয়ে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষকে জঙ্গলে পালাতে বা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে যেতে বাধ্য করেছে।