টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যবই কেজি দরে বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কাগজে-কলমে ৫৪০ কেজি বই বিক্রির কথা থাকলেও প্রায় ২০ হাজার কেজি বই বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগে জানা গেছে।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে মির্জাপুর উপজেলা পরিষদ চত্বর ও পুষ্টকামুরী গ্রামে থাকা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের গোডাউন থেকে বিপুল পরিমাণ বই বিক্রি করা হয়। বইগুলোর ক্রেতা কর্ণফুলী পেপার মিলের প্রতিনিধি শরীফ খান দুটি ট্রাক ভর্তি করে সেগুলো ঢাকায় নিয়ে গেছেন।
জানা গেছে, কর্ণফুলী পেপার মিল টেন্ডারের মাধ্যমে মির্জাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসে থাকা বিগত ২০২১ শিক্ষাবর্ষের ৫৪০ কেজি বই ১৫ টাকা কেজি দরে কিনেন। কিন্তু উপজেলা শিক্ষা অফিসার আলমগীর হোসেনের নির্দেশে শিক্ষা অফিসের সহকারী হিসাবরক্ষক মনির হোসেন, উচ্চমান সহকারী আনসার আলী এবং অফিস সহকারী খান জুয়েল উপস্থিত থেকে বিগত ২০২১ সালের বইয়ের সঙ্গে ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের বিপুল পরিমাণ পুরোনো বইও বিক্রি করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই বিপুল পরিমাণ বই কর্ণফুলী পেপার মিলের প্রতিনিধি দুটি ট্রাক ভর্তি করে ঢাকায় নিয়ে যান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বইগুলোর ওজন কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ হাজার কেজি (১৫/২০ মেট্রিক টন) হবে।
মির্জাপুর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আলমগীর হোসেন বলেন, টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা অফিসের পত্রের মাধ্যমে বিগত ২০২১ সালের আনুমানিক ৫৪০ কেজি পাঠ্যবই কর্ণফুলী পেপার মিলের মনোনীত ব্যক্তি শরীফ খানের কাছে বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। তবে ৫৪০ কেজি বই দুই ট্রাক ভর্তি করে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কার্যালয় থেকে কর্ণফুলী পেপার মিল নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১৫ টাকা কেজি দরে বিগত ২০২১ সালের ৫৪০ কেজি পাঠ্যবই কিনে নেয়। যা কর্ণফুলী পেপার মিলের মনোনীত ব্যক্তির কাছে বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ৫৪০ কেজি বই বিক্রির টাকা মহাপরিচালকের কার্যালয়ে জমা হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে, বিগত ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের বিপুল পরিমাণ বইও ওই ব্যক্তিকে দেয়া হয়েছে এবং সেগুলো তিনি দুই ট্রাক ভর্তি করে ঢাকায় নিয়ে গেছেন। এই বিপুল পরিমাণ বইয়ের টাকা কোথায় জমা হবে জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অতিরিক্ত বইগুলো অন্য উপজেলার ছিলো বলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার আলমগীর হোসেন তাকে জানিয়েছেন।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাফিজুর রহমান বলেন, বই বিক্রির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।