০৮:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোগান্তির শেষে নেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০১:১৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুন ২০২২
  • 18

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভোগান্তির শেষে নেই। তবে ওই ভোগান্তি কমাতে নির্মাণ করা হচ্ছে তৃতীয় টার্মিনাল। পুরোদমে চলছে বিমানবন্দরের নতুন ওই টার্মিনালের নির্মাণ কাজ। ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকার প্রকল্পের আওতায় যাত্রীবাহী টার্মিনাল ভবন, রাস্তাঘাট, বিমানবন্দর এপ্রোন, পার্কিং লট, কার্গো কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী বছরের অক্টোবরের মধ্যে টার্মিনালটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৫ শতাংশ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে নতুন ওই টার্মিনালটি চালু হলে যাত্রীদের অভিজ্ঞতা বদলে যাবে বলে আশাপ্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, প্রতিবছর দেশে আট শতাংশ হারে আকাশপথের যাত্রী বাড়ছে। বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ পরিমাণ যাত্রী ধারণের সক্ষমতা নেই। এজন্য তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি নির্মাণ হলে যাত্রীদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ইতোমধ্যেই ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, যা আমাদের লক্ষ্যের চেয়েও বেশি। করোনার মধ্যেও কখনো কাজ বন্ধ করা হয়নি। যেভাবে কাজ চলছে তাতে প্রত্যাশা করছি ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যেই তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করতে পারব। আর এটি চালু হলে যাত্রীসেবা বাড়বে, বাংলাদেশ যাবে অনন্য উচ্চতায়।

জানা যায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুটি টার্মিনাল রয়েছে। এ দুটি টার্মিনাল ১ লাখ বর্গমিটার জায়গার ওপর। আর তৃতীয় যে টার্মিনাল হচ্ছে, সেটি বর্তমান দুটি টার্মিনালের দ্বিগুণের বেশি। টার্মিনালটি লন্ডনের হিথ্রো বা থাইল্যান্ডের বিমানবন্দরগুলোর মতো হবে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তিন নম্বর টার্মিনালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

সংম্লিষ্টরা জানান, তিনতলা টার্মিনাল বিশিষ্ট এই ভবনের আয়তন দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। এই ভবনটির নকশা প্রস্তুত করেছেন স্থপতি বোহানি বাহারিন। তিনি এনওসিডি-জেভি জয়েন্ট ভেনচার পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের আওতাধীন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিপিজি করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের (সিঙ্গাপুর) স্থপতি এতে ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৪টি প্রস্থান এবং ৬৪টি আগমন ইমিগ্রেশন ডেস্ক, ২৭টি ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ৪০টি স্ক্যানিং মেশিন, ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১৬টি ক্যারোসেল এবং ১১টি বডি স্ক্যানার থাকবে। ১ হাজার ২৩০টি গাড়ির জন্য নতুন গাড়ি পার্কিং সুবিধা, একটি নতুন ৬৩ হাজার বর্গ মিটার আমদানি ও রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স, ৩৭টি বিমানের জন্য একটি ৫ দশিমক ৪২ লাখ বর্গ মিটার এপ্রোন, অন্যান্যগুলির মধ্যে থাকবে। তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের পর প্রায় দুই কোটি যাত্রী ঢাকা বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু বর্তমান আকারে ঢাকা বিমানবন্দর বছরে ৮০ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের প্রধান বিমানবন্দর ঘিরে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। অনেকগুলো ভবন দৃশ্যমান হয়েছে। শুধু তাই নয়, মূল টার্মিনাল ভবনের ৬৮৬টি কলামের মধ্যে ৬৫০টির কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। কঠিন ও সময় সাপেক্ষের সব কাজই সমাপ্তির পথে। এখন দ্রুত ওঠে যাবে বাকি কাজ।

প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানান, মেট্রোরেল ১-এর পথ হচ্ছে কমলাপুর থেকে শুরু হয়ে রাজারবাগ-মালিবাগ-রামপুরা, যমুনা ফিউচার পার্ক, খিলক্ষেত হয়ে বিমানবন্দর পর্যন্ত। এটি পুরোটাই পাতালরেল। কাওলা স্টেশন থেকে ২০০ মিটারের একটি সুড়ঙ্গপথ তৈরির কাজ চলছে এখন। একই সঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে টার্মিনালে নামার জন্য সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজও চলছে। তবে নতুন টার্মিনালটি যদি পাতালরেলের আগে উদ্বোধন হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে যাত্রীরা সরাসরি টার্মিনালে চলে আসবেন। টার্মিনালে ঢুকেই যাতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে না হয়, সে জন্য থাকছে ১১৫টি চেক ইন কাউন্টার। চেক ইন পর্ব শেষ করা হলেই ইমিগ্রেশন। তৃতীয় টার্মিনালে নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ। যেটি সংযুক্ত থাকবে উড়োজাহাজের সঙ্গে। বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার তৈরি করা হচ্ছে ৬৪টি। একই সঙ্গে আগমনী ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে ৬৪টি। আপনার লাগেজ বা ব্যাগ টানার জন্য নির্মাণ করা হবে ১৬টি কনভেয়ার বেল্ট।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকল্প কর্মকর্তরা জানান, বিদেশ থেকে একজন যাত্রী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেই যাতে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালো ধারণা পান, তৃতীয় টার্মিনালটি সেভাবেই তৈরি করা হচ্ছে। সব ধরনের সুবিধা রয়েছে এ টার্মিনালে।

সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, এ প্রকল্পের কাজ আমি ব্যক্তিগতভাবে সুপারভাইজ করছি। প্রতি সপ্তাহে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ডেকে কাজের আপডেট নিচ্ছি। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, এই বিমানবন্দর বিশ্বের দৃষ্টিনন্দন ও অত্যাধুনিক বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে একটি হবে। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ অনেকাংশেই কমবে। পাশাপাশি এ বিমানবন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান আরো বলেন, তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন হলে এই বিমানবন্দরে অনেক উড়োজাহাজ আসবে রানওয়েতে। বিমানবন্দরে রানওয়ে একটি। তাই উড়োজাহাজ রানওয়েতে থাকার স্থায়িত্ব যাতে কম হয়, দ্রুততার সঙ্গে যেন তা পার্ক করতে পারে, এ জন্য দুটি অতিরিক্ত হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ের নির্মাণকাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া শাহজালাল বিমানবন্দরের নতুন রাডার স্থাপনের কাজ শুরু হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ ও সম্প্রসারণের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন এবং খসড়া মাস্টার প্ল্যান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তোলা হয়। এরপর ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর বিমানবন্দরটি নির্মাণে অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। শুরুতে টার্মিনালটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়। সবমিলে এখন প্রকল্পটির খরচ ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকারও বেশি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। বাকি ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপানের সংস্থা জাইকা।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

ভোগান্তির শেষে নেই হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ।

Update Time : ০১:১৪:৩৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুন ২০২২

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভোগান্তির শেষে নেই। তবে ওই ভোগান্তি কমাতে নির্মাণ করা হচ্ছে তৃতীয় টার্মিনাল। পুরোদমে চলছে বিমানবন্দরের নতুন ওই টার্মিনালের নির্মাণ কাজ। ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকার প্রকল্পের আওতায় যাত্রীবাহী টার্মিনাল ভবন, রাস্তাঘাট, বিমানবন্দর এপ্রোন, পার্কিং লট, কার্গো কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। আগামী বছরের অক্টোবরের মধ্যে টার্মিনালটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৫ শতাংশ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে নতুন ওই টার্মিনালটি চালু হলে যাত্রীদের অভিজ্ঞতা বদলে যাবে বলে আশাপ্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা আরো জানান, প্রতিবছর দেশে আট শতাংশ হারে আকাশপথের যাত্রী বাড়ছে। বর্তমানে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ পরিমাণ যাত্রী ধারণের সক্ষমতা নেই। এজন্য তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি নির্মাণ হলে যাত্রীদের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, ইতোমধ্যেই ৩৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে, যা আমাদের লক্ষ্যের চেয়েও বেশি। করোনার মধ্যেও কখনো কাজ বন্ধ করা হয়নি। যেভাবে কাজ চলছে তাতে প্রত্যাশা করছি ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যেই তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করতে পারব। আর এটি চালু হলে যাত্রীসেবা বাড়বে, বাংলাদেশ যাবে অনন্য উচ্চতায়।

জানা যায়, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দুটি টার্মিনাল রয়েছে। এ দুটি টার্মিনাল ১ লাখ বর্গমিটার জায়গার ওপর। আর তৃতীয় যে টার্মিনাল হচ্ছে, সেটি বর্তমান দুটি টার্মিনালের দ্বিগুণের বেশি। টার্মিনালটি লন্ডনের হিথ্রো বা থাইল্যান্ডের বিমানবন্দরগুলোর মতো হবে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তিন নম্বর টার্মিনালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।

সংম্লিষ্টরা জানান, তিনতলা টার্মিনাল বিশিষ্ট এই ভবনের আয়তন দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। এই ভবনটির নকশা প্রস্তুত করেছেন স্থপতি বোহানি বাহারিন। তিনি এনওসিডি-জেভি জয়েন্ট ভেনচার পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের আওতাধীন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিপিজি করপোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের (সিঙ্গাপুর) স্থপতি এতে ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৪টি প্রস্থান এবং ৬৪টি আগমন ইমিগ্রেশন ডেস্ক, ২৭টি ব্যাগেজ স্ক্যানিং মেশিন, ৪০টি স্ক্যানিং মেশিন, ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ, ১৬টি ক্যারোসেল এবং ১১টি বডি স্ক্যানার থাকবে। ১ হাজার ২৩০টি গাড়ির জন্য নতুন গাড়ি পার্কিং সুবিধা, একটি নতুন ৬৩ হাজার বর্গ মিটার আমদানি ও রপ্তানি কার্গো কমপ্লেক্স, ৩৭টি বিমানের জন্য একটি ৫ দশিমক ৪২ লাখ বর্গ মিটার এপ্রোন, অন্যান্যগুলির মধ্যে থাকবে। তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের পর প্রায় দুই কোটি যাত্রী ঢাকা বিমানবন্দর ব্যবহার করতে পারবেন। কিন্তু বর্তমান আকারে ঢাকা বিমানবন্দর বছরে ৮০ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারে।

সরেজমিনে দেখা যায়, দেশের প্রধান বিমানবন্দর ঘিরে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। অনেকগুলো ভবন দৃশ্যমান হয়েছে। শুধু তাই নয়, মূল টার্মিনাল ভবনের ৬৮৬টি কলামের মধ্যে ৬৫০টির কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। কঠিন ও সময় সাপেক্ষের সব কাজই সমাপ্তির পথে। এখন দ্রুত ওঠে যাবে বাকি কাজ।

প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তারা জানান, মেট্রোরেল ১-এর পথ হচ্ছে কমলাপুর থেকে শুরু হয়ে রাজারবাগ-মালিবাগ-রামপুরা, যমুনা ফিউচার পার্ক, খিলক্ষেত হয়ে বিমানবন্দর পর্যন্ত। এটি পুরোটাই পাতালরেল। কাওলা স্টেশন থেকে ২০০ মিটারের একটি সুড়ঙ্গপথ তৈরির কাজ চলছে এখন। একই সঙ্গে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে টার্মিনালে নামার জন্য সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজও চলছে। তবে নতুন টার্মিনালটি যদি পাতালরেলের আগে উদ্বোধন হয়ে যায়, সে ক্ষেত্রে যাত্রীরা সরাসরি টার্মিনালে চলে আসবেন। টার্মিনালে ঢুকেই যাতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে না হয়, সে জন্য থাকছে ১১৫টি চেক ইন কাউন্টার। চেক ইন পর্ব শেষ করা হলেই ইমিগ্রেশন। তৃতীয় টার্মিনালে নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে ১২টি বোর্ডিং ব্রিজ। যেটি সংযুক্ত থাকবে উড়োজাহাজের সঙ্গে। বহির্গমন ইমিগ্রেশন কাউন্টার তৈরি করা হচ্ছে ৬৪টি। একই সঙ্গে আগমনী ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে ৬৪টি। আপনার লাগেজ বা ব্যাগ টানার জন্য নির্মাণ করা হবে ১৬টি কনভেয়ার বেল্ট।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকল্প কর্মকর্তরা জানান, বিদেশ থেকে একজন যাত্রী হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেই যাতে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালো ধারণা পান, তৃতীয় টার্মিনালটি সেভাবেই তৈরি করা হচ্ছে। সব ধরনের সুবিধা রয়েছে এ টার্মিনালে।

সিভিল অ্যাভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান বলেন, এ প্রকল্পের কাজ আমি ব্যক্তিগতভাবে সুপারভাইজ করছি। প্রতি সপ্তাহে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ডেকে কাজের আপডেট নিচ্ছি। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, এই বিমানবন্দর বিশ্বের দৃষ্টিনন্দন ও অত্যাধুনিক বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে একটি হবে। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ অনেকাংশেই কমবে। পাশাপাশি এ বিমানবন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

বেবিচক চেয়ারম্যান আরো বলেন, তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন হলে এই বিমানবন্দরে অনেক উড়োজাহাজ আসবে রানওয়েতে। বিমানবন্দরে রানওয়ে একটি। তাই উড়োজাহাজ রানওয়েতে থাকার স্থায়িত্ব যাতে কম হয়, দ্রুততার সঙ্গে যেন তা পার্ক করতে পারে, এ জন্য দুটি অতিরিক্ত হাইস্পিড ট্যাক্সিওয়ের নির্মাণকাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া শাহজালাল বিমানবন্দরের নতুন রাডার স্থাপনের কাজ শুরু হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ ও সম্প্রসারণের প্রাথমিক সম্ভাব্যতা প্রতিবেদন এবং খসড়া মাস্টার প্ল্যান প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তোলা হয়। এরপর ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর বিমানবন্দরটি নির্মাণে অনুমোদন দেয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। শুরুতে টার্মিনালটি নির্মাণের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ৬১০ কোটি টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় ৭ হাজার ৭৮৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা বাড়ানো হয়। সবমিলে এখন প্রকল্পটির খরচ ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকারও বেশি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সরকার দিচ্ছে ৫ হাজার ২৫৮ কোটি ৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। বাকি ১৬ হাজার ১৪১ কোটি ২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ঋণ হিসেবে দিচ্ছে জাপানের সংস্থা জাইকা।