০৩:৩৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বন্যার্তদের সাহায্যার্থে সরকারের কোনো তৎপরতা জনগণের কাছে দৃশ্যমান হয়নি। জামায়াতে ইসলামী

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:২২:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২
  • 21

সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে সিলেট, সুনামগগঞ্জ, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে বন্যাদুর্গত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান। শুক্রবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগ থেকে এক বিবৃতি প্রকাশের মাধ্যমে এ আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে সংগঠনের আমির বলেন, শতাব্দির রেকর্ড ভঙ্গ করে সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে লাখো জনতা। আমি মহান আল্লাহর দরবারে বন্যাকবলিত মানুষের জন্য নতশিরে সাহায্য ভিক্ষা করছি। তিনি বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জে মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে ফের ভয়াবহ বন্যা শুরু হয়েছে। সিলেটের কোনো মানুষ অতীতে এমন ভয়াবহ বন্যার কথা স্মরণ করতে পারছেন না। এবারের বন্যায় প্রধান প্রধান সড়ক আর নদীপথ সবই একাকার। সুনামগঞ্জ শহর পুরোটা ও সিলেট শহরের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ভয়াবহ বন্যার ফলে চার জেলাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়ে পড়ে। তলিয়ে যাওয়া এলাকাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ। শহরের রাস্তাগুলোতে মাঝারি আকারের নৌকা চলছে। গ্রাম এলাকার বেশিরভাগ মানুষ পর্যাপ্ত নৌকার অভাবে বন্যার পানিতে গৃহবন্দী হয়ে আছেন। শিশু-আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সকলেই এখন পানির মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের বন্যার অবস্থাও একই রকম। বন্যার পানিতে বাড়িঘর ও জমির ফসল ডুবে যাওয়ায় মানুষ দিশেহারা হয়ে আছে। অব্যাহতভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশু নিয়ে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ছে। বন্যাকবলিত অঞ্চলে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করছে। পানিবাহিত নানা রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদ-নদীর ভাঙনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বন্যার্তদের সাহায্যার্থে কোনো তৎপরতা জনগণের কাছে দৃশ্যমান হয়নি। সরকারের এ নীরব ভূমিকা জনগণকে বিস্মিত করছে। সরকারের উচিত দ্রুত জনগণের পাশে দাঁড়ানো।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, গভীর বেদনার বিষয় যে, এখন পর্যন্ত এ বিষয়টি সরকারের কাছে কোনো গুরুত্বই পায়নি। তাহলে কি সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর সরকারের চোখ খুলবে? অবিলম্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে পানিবন্দী জনগণকে উদ্ধার ও পর্যাপ্ত ত্রাণ তৎপরতা চালানোর জন্য আমি সরকারের প্রতি বিশেষভাবে আহ্বান জানাচ্ছি। মনে রাখতে হবে যে, এ জেলা চারটিও বাংলাদেশের অংশ। তিনি জানান, এই কঠিন পরিস্থিতিতে মজলুম সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য ৫০ লাখ টাকার ত্রাণ সহায়তা ঘোষণা করছি। একই সাথে সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বশীল ও কর্মী ভাইদেরকে বন্যার্তদের সাহায্যার্থে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সমাজের সামর্থবান ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছে আমাদের অনুরোধ, মানবিক এই বিপর্যয়ে যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালন করুন। আসুন, সবাই মিলে মহান প্রভুর দরবারে এ কঠিন বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ধরনা দেই। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন, আমীন।

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুমকে আহ্বায়ক ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে সমন্বয়ক করে ২২ সদস্যের ত্রাণ কমিটি গঠন করেছে সংগঠনটি।

এছাড়াও কমিটির সদস্য হিসেবে অন্যদের মধ্যে আছেন সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির জনাব মোহাম্মাদ ফখরুল ইসলাম, সিলেট দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার আমির অধ্যক্ষ আবদুল হান্নান, সিলেট উত্তর সাংগঠনিক জেলার আমির হাফিজ আনোয়ার হোসেন খান, সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা তোফায়েল আহমাদ খান প্রমুখ

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

বন্যার্তদের সাহায্যার্থে সরকারের কোনো তৎপরতা জনগণের কাছে দৃশ্যমান হয়নি। জামায়াতে ইসলামী

Update Time : ১০:২২:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জুন ২০২২

সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে সিলেট, সুনামগগঞ্জ, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে বন্যাদুর্গত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান। শুক্রবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগ থেকে এক বিবৃতি প্রকাশের মাধ্যমে এ আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে সংগঠনের আমির বলেন, শতাব্দির রেকর্ড ভঙ্গ করে সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে লাখো জনতা। আমি মহান আল্লাহর দরবারে বন্যাকবলিত মানুষের জন্য নতশিরে সাহায্য ভিক্ষা করছি। তিনি বলেন, সিলেট ও সুনামগঞ্জে মাত্র দেড় মাসের ব্যবধানে ফের ভয়াবহ বন্যা শুরু হয়েছে। সিলেটের কোনো মানুষ অতীতে এমন ভয়াবহ বন্যার কথা স্মরণ করতে পারছেন না। এবারের বন্যায় প্রধান প্রধান সড়ক আর নদীপথ সবই একাকার। সুনামগঞ্জ শহর পুরোটা ও সিলেট শহরের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ভয়াবহ বন্যার ফলে চার জেলাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হয়ে পড়ে। তলিয়ে যাওয়া এলাকাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ। শহরের রাস্তাগুলোতে মাঝারি আকারের নৌকা চলছে। গ্রাম এলাকার বেশিরভাগ মানুষ পর্যাপ্ত নৌকার অভাবে বন্যার পানিতে গৃহবন্দী হয়ে আছেন। শিশু-আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সকলেই এখন পানির মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের বন্যার অবস্থাও একই রকম। বন্যার পানিতে বাড়িঘর ও জমির ফসল ডুবে যাওয়ায় মানুষ দিশেহারা হয়ে আছে। অব্যাহতভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশু নিয়ে মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ছে। বন্যাকবলিত অঞ্চলে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করছে। পানিবাহিত নানা রোগ-ব্যাধি ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদ-নদীর ভাঙনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বন্যার্তদের সাহায্যার্থে কোনো তৎপরতা জনগণের কাছে দৃশ্যমান হয়নি। সরকারের এ নীরব ভূমিকা জনগণকে বিস্মিত করছে। সরকারের উচিত দ্রুত জনগণের পাশে দাঁড়ানো।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, গভীর বেদনার বিষয় যে, এখন পর্যন্ত এ বিষয়টি সরকারের কাছে কোনো গুরুত্বই পায়নি। তাহলে কি সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর সরকারের চোখ খুলবে? অবিলম্বে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে পানিবন্দী জনগণকে উদ্ধার ও পর্যাপ্ত ত্রাণ তৎপরতা চালানোর জন্য আমি সরকারের প্রতি বিশেষভাবে আহ্বান জানাচ্ছি। মনে রাখতে হবে যে, এ জেলা চারটিও বাংলাদেশের অংশ। তিনি জানান, এই কঠিন পরিস্থিতিতে মজলুম সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য ৫০ লাখ টাকার ত্রাণ সহায়তা ঘোষণা করছি। একই সাথে সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার দায়িত্বশীল ও কর্মী ভাইদেরকে বন্যার্তদের সাহায্যার্থে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি। সমাজের সামর্থবান ও হৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছে আমাদের অনুরোধ, মানবিক এই বিপর্যয়ে যার যার অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ দায়িত্ব পালন করুন। আসুন, সবাই মিলে মহান প্রভুর দরবারে এ কঠিন বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য ধরনা দেই। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন, আমীন।

উল্লেখ্য, ইতোমধ্যেই ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাছুমকে আহ্বায়ক ও সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে সমন্বয়ক করে ২২ সদস্যের ত্রাণ কমিটি গঠন করেছে সংগঠনটি।

এছাড়াও কমিটির সদস্য হিসেবে অন্যদের মধ্যে আছেন সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির জনাব মোহাম্মাদ ফখরুল ইসলাম, সিলেট দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার আমির অধ্যক্ষ আবদুল হান্নান, সিলেট উত্তর সাংগঠনিক জেলার আমির হাফিজ আনোয়ার হোসেন খান, সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা তোফায়েল আহমাদ খান প্রমুখ