০২:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ফরিদগঞ্জে আখের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৪৩:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২
  • 17

জেলার ফরিদগঞ্জে আখের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। ফলন ভালো হওয়ায় বেশি দামে বিক্রির আশায় আখ চাষিরা খুব খুশি।  তাই রোদে পুড়েও লাভবান হওয়ার আশায় এ উপজেলাতে এখব চাষিরা তাদের আখ কাটছে।
এ বছর ২৭৫ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ হওয়ার কথা থাকলেও  তা বেড়ে ২৯০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আখ চাষের জন্য উপযুক্ত হলো আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুণ। আর ফরিদগঞ্জে যে কোন কৃষি উৎপাদনের জন্য বলা চলে উর্বর ভ’মির ফলে আশানুরূপ ফলন হচ্ছে। যেমন অন্য উপজেলাতে আখচাষের জন্য ১০ থেকে ১২ মাস সময় লাগলেও ফরিদগঞ্জে ৭-৮ মাসেই আখের ফলন পাওয়া যায়। আখ চাষে সার্বিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। বাজারে বেশ চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় দিন দিন আখ চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। আখের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, মিষ্টি কুমড়া ও আলু চাষ করা যায়।
উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে ঘুরে  কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আখের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে চাষিরা পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, মিষ্টি কুমড়া ও আলু জাতীয় ফসলগুলো আলাদা জমি ছাড়াই বিনা সেচে বৃষ্টির উপর নির্ভর করে চাষ করা যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে আখ ক্ষতিগ্রস্ত  হলেও সাথী ফসল থেকে আংশিক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায়। পেঁয়াজ ও রসুনের পাতায় তীব্র ঝাঁঝ থাকায় সাথী ফসল হিসেবে আখ চাষ করলে আখে পোকামাকড়ের উপদ্রব কম হয়। প্রতিটি আখ খুচরা ২০-৪০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় মানুষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায়ও সরবরাহ করা হচ্ছেএ উপজেলার আখ। আখের সঙ্গে সাথী ফসল চাষ করলে জমিতে আগাছাও কম হয়, ফলে মূল ফসলের ফলন অনেকাংশে বেড়ে যায়।
শামিম পাটওয়ারী  নামের একজন আখ চাষি বলেন, তিনি ৫০ শতক জমিতে আখ চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে ১ লক্ষ টাকা। তিনি আখ বিক্রি করেছেন ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের আখ চাষি আলাউদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, তিনি লম্বাটে জাতের পাতলা গিরার লাল রং এর আখ চাষ করেছেন। অনেকে রং  বিলাস জাতের আখ ও বলে থাকে  এ আখকে । তিনি মোট দেড় একর  জমিনের মধ্যে আখ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, আমার মোট খরচ হয়েছে দুই লক্ষ ত্রিশ হাজার  টাকার মতো। আখের দাম ভালো হওয়ায় তার এ বছর তিন  লক্ষ ৩০ হাজার  টাকার উপরে বিক্রি আসবে বলে আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আশিক জামিল মাহমুদ বলেন, উপজেলার যেসব এলাকায় আখ চাষ বেশি হচ্ছে, স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ওই এলাকার আখ চাষিদের প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনী দেওয়াসহ আখ লাগানো থেকে শুরু করে উঠানো পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে-ধাপে সার প্রয়োগ ও রোগ-বালাই নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা। কৃষকদের আরো বেশি বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করবেন বলে জানান তিনি।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

ফরিদগঞ্জে আখের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি

Update Time : ০৩:৪৩:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২

জেলার ফরিদগঞ্জে আখের বাম্পার ফলনে চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। ফলন ভালো হওয়ায় বেশি দামে বিক্রির আশায় আখ চাষিরা খুব খুশি।  তাই রোদে পুড়েও লাভবান হওয়ার আশায় এ উপজেলাতে এখব চাষিরা তাদের আখ কাটছে।
এ বছর ২৭৫ হেক্টর জমিতে আখের আবাদ হওয়ার কথা থাকলেও  তা বেড়ে ২৯০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আখ চাষের জন্য উপযুক্ত হলো আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুণ। আর ফরিদগঞ্জে যে কোন কৃষি উৎপাদনের জন্য বলা চলে উর্বর ভ’মির ফলে আশানুরূপ ফলন হচ্ছে। যেমন অন্য উপজেলাতে আখচাষের জন্য ১০ থেকে ১২ মাস সময় লাগলেও ফরিদগঞ্জে ৭-৮ মাসেই আখের ফলন পাওয়া যায়। আখ চাষে সার্বিকভাবে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। বাজারে বেশ চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় দিন দিন আখ চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। আখের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, মিষ্টি কুমড়া ও আলু চাষ করা যায়।
উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে ঘুরে  কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আখের সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে চাষিরা পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, মিষ্টি কুমড়া ও আলু জাতীয় ফসলগুলো আলাদা জমি ছাড়াই বিনা সেচে বৃষ্টির উপর নির্ভর করে চাষ করা যায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে আখ ক্ষতিগ্রস্ত  হলেও সাথী ফসল থেকে আংশিক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায়। পেঁয়াজ ও রসুনের পাতায় তীব্র ঝাঁঝ থাকায় সাথী ফসল হিসেবে আখ চাষ করলে আখে পোকামাকড়ের উপদ্রব কম হয়। প্রতিটি আখ খুচরা ২০-৪০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় মানুষের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ঢাকাসহ অন্যান্য জেলায়ও সরবরাহ করা হচ্ছেএ উপজেলার আখ। আখের সঙ্গে সাথী ফসল চাষ করলে জমিতে আগাছাও কম হয়, ফলে মূল ফসলের ফলন অনেকাংশে বেড়ে যায়।
শামিম পাটওয়ারী  নামের একজন আখ চাষি বলেন, তিনি ৫০ শতক জমিতে আখ চাষ করেছেন। তার খরচ হয়েছে ১ লক্ষ টাকা। তিনি আখ বিক্রি করেছেন ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।
বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়নের আখ চাষি আলাউদ্দিন পাটওয়ারী বলেন, তিনি লম্বাটে জাতের পাতলা গিরার লাল রং এর আখ চাষ করেছেন। অনেকে রং  বিলাস জাতের আখ ও বলে থাকে  এ আখকে । তিনি মোট দেড় একর  জমিনের মধ্যে আখ চাষ করেছেন। তিনি বলেন, আমার মোট খরচ হয়েছে দুই লক্ষ ত্রিশ হাজার  টাকার মতো। আখের দাম ভালো হওয়ায় তার এ বছর তিন  লক্ষ ৩০ হাজার  টাকার উপরে বিক্রি আসবে বলে আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আশিক জামিল মাহমুদ বলেন, উপজেলার যেসব এলাকায় আখ চাষ বেশি হচ্ছে, স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ওই এলাকার আখ চাষিদের প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনী দেওয়াসহ আখ লাগানো থেকে শুরু করে উঠানো পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে-ধাপে সার প্রয়োগ ও রোগ-বালাই নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছে মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা। কৃষকদের আরো বেশি বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে আখ চাষে উদ্বুদ্ধ করবেন বলে জানান তিনি।