গত ১২ সেপ্টেম্বর’২০২২ ইং তারিখে joybd24.com নামে একটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত “ভূমি দস্যু ইউনিট আওয়ামীলীগ সভাপতি নাহিদুল ইসলামের কাছে অসহায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন” শিরোনামে প্রতিবেদনটির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন হালিশহর “গ” ইউনিট আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ নাহিদুল ইসলাম মজুমদার।
তিনি “বঙ্গবন্ধু স্মৃতিসংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার” প্যাডে উক্ত প্রতিবাদ পত্র আমাদের জয়বিডি ইমেইলে পাঠানো হয়।
এদিকে নাহিদুল ইসলামকে নিয়ে প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদ করেন বড় ভাই নাজিমুল ইসলাম চৌধুরী। দলীয় প্যাডে প্রতিবাদ পত্র টি দেখতে ক্লিক করুন
১৭/০৯/২০২২ ইং তারিখের উক্ত প্রতিবাদ পত্রটিতে নাহিদুল ইসলামের নিজের স্বাক্ষর ছাড়াও আরও স্বাক্ষর দিয়েছেন যুগ্ম আহবায়ক মোঃ ফরহাদ উদ্দিন জিতু। উল্লেখ্য যে, নাহিদুল ইসলাম মজুমদার “বঙ্গবন্ধু স্মৃতিসংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার” এর পাল্টা পাল্টি কমিটির সচিব ও ফরহাদ উদ্দিন জিতু উক্ত সংগঠনের যুগ্ম আহবায়ক।
নিচে নাহিদুল ইসলাম মজুমদারের প্রতিবাদ পত্রটি হুবুহু তুলে ধরা হলোঃ
আমি মোঃ নাহিদুল ইসলাম মজুমদার বর্তমান হালিশহর ২৬ নং ওয়ার্ড ‘গ’ ইউনিট আওয়ামীলীগ নির্বাচিত সভাপতি। গত ১২ সেপ্টেম্বর Joybd24.com নামে একটি অনলাইন পোর্টাল আমাকে নিয়ে “ভূমি দস্যু ইউনিট আওয়ামীলীগ সভাপতি নাহিদুল ইসলামের কাছে অসহায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন” নামক শিরোনামে মিথ্যা, বানোয়াট, প্রতিহিংসামূলক, কুরুচিপূর্ণ তথ্য সম্বলিত একটি খবর পরিবেশন করে যা দেখে আমি ব্যথিত, আশ্চর্যান্বিত। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
অত্র বি-ব্লক এলাকায় আমার যথেষ্ট সুনাম আছে। আমি ছাত্র জীবন থেকে সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। এলাকার মানুষের সুখে-দুখে আমি এবং আমার পরিবারের সকলে সব সময় সাধারণ জনগণের পাশে থেকে কাজ করি যা অত্র এলাকার সকলেই জানেন। কিন্তু সম্প্রতি ৪ নং রোডের ২ নং লেনের সাধারণ আবাসিক বাসার সামনে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার সকল ময়লা আবর্জনা ডাম্পিং করা হচ্ছে। এ অবস্থায় এলাকার সাধারণ জনগণ বহুবার সিটি কর্পোরেশন এবং সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর কে অবহিত করেও কোন ধরনের পরিত্রাণ না পাওয়ায় তারা সকলে আমাকে অনুরোধ করেন বিষয়টি সুরাহা করার জন্য। যেহেতু এলাকার সাধারণ জনগণকে নিয়ে আমার কর্মকাণ্ড সে কারণে উক্ত স্থান হতে ময়লার ডাম্পিং পয়েন্টটি স্থানান্তর করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য আমি এলাকাবাসী সকলকে নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আরও উল্লেখ্য যে, ডাম্পিং পয়েন্টের পাশেই একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে যেখানে এলাকার কোমলমতি শিশুরা পড়াশোনা করছে। দীর্ঘদিন এখানে ময়লা ডাম্পিং করার কারণে স্কুল হতে প্রতিবছর ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কমতে থাকে আবর্জনার দুর্গন্ধের কারনে।
আমার রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা আমার ব্যবসায়িক ও পারিবারিক সুনামের প্রতি এলাকার কিছু প্রভাবশালী মহল ঈর্ষান্বিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারে নামে। আমাদের পারিবারিক ব্যবসা সম্পত্তি যা কিছু আছে সব কিছু আমার ছোট ভাই কুয়েত এম্বেসির বর্তমান একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম মজুমদার এর কষ্টার্জিত বৈদেশিক রেমিটেন্স অর্থে গড়া। ছোট ভাইয়ের কষ্টার্জিত রেমিটেন্স অর্থে ২ নং লেইনে আমাদের এর একটি ডাবল ইউনিট ৫ তলা বাড়ি, ২নং রোডে ১টি ৬ তলা ভবন, ৫ ও ৬ নং লেইনে দুটি ৬ তলা ভবন, নয়াবাজার সরাইপাড়া কিছু সম্পত্তি, কয়েকটি গাড়ি, সবকিছুই আমার ছোট ভাই তৌহিদুল ইসলামের প্রবাসে অর্জিত অর্থে গড়া। কিন্তু এগুলো নিয়েও তারা মিথ্যে অপপ্রচার চালিয়ে যে, আমাদের সকল সম্পদ অবৈধ উপায়ে করা।
২ নং রোডের ছয় তল ভবনের নিচে আমার নিজের একটি অফিস আছে, যেখান থেকে আমি আমার কনস্ট্রাকশন, ডেভলপার, জমি ক্রয়-বিক্রয়, স্বল্প সুদে ঋণদান কর্মসূচি, ট্রান্সপোর্ট সহ আরও কিছু ব্যবসা পরিচালনা করে থাকি। আমার এই সকল ব্যবসার কার্যক্রমের কারণে এলাকার কয়েকশত বেকার যুবক-যুবতিদের কর্মসংস্থান হয়েছে। এলাকায় অনেক সমস্যা নিয়ে অনেকেই আমার অফিসে আসেন ভালো পরামর্শের জন্য, আমি তাদেরকে ভালো পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে থাকি। এসব কিছুই হচ্ছে আমার প্রতি এলাকাবাসীদের ভালোবাসা ও সুনামের কারণে।
এছাড়া বি-ব্লক এস ক্লাবের মোড়ে নিজ উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে এবং বর্তমান প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত করার জন্য “বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংসদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার” নামে একটি ক্লাব ঘর প্রতিষ্ঠা করি। ক্লাব ঘরটিতে এলাকার কিশোর যুবকরা সেখানে বসে বিভিন্ন ধরনের বই পত্র পড়ে সময় কাটায়।
আমার শ্রদ্ধেয় বড় ভাই জনাব নাজিমুল ইসলাম মজুমদার হালিশহর ২৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
এইসব সামগ্রিক কর্মকাণ্ড নিয়ে আমি আমার এলাকাবাসীদের কে নিয়ে যখন গঠনমূলক সমাজ গঠনে নিজেকে উৎসর্গ করে যাচ্ছি, ঠিক তখনই আমার রাজনৈতিক এবং সমাজ সেবামূলক কর্মকান্ডে একটি মহল আমার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক সুনামকে ক্ষুন্ন করার জন্য নোংরা ও তাদের নীচ কর্মকান্ডে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমি এসব মিথ্যা বানোয়াট আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি আমার উক্ত প্রতিবাদ পত্র সংবাদ মাধ্যমে ছাপানোর জন্য দাবী জানাচ্ছি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এসব স্বার্থান্বেষী মহলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করছি। অন্যথায় আমি তাদের বিরুদ্ধে মানহানীর মামলা সহ সকল ধরনের প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহনে বাধ্য হবো।”
কিন্তু তিনি তার প্রতিবাদ পত্রে গত ১২ সেপ্টেম্বর জয়বিডিতে প্রকাশিত তার বিরুদ্ধে আনীত অনেক অভিযোগের বিষয়ে কোন কিছু উল্লেখ করেননি। বিশেষ করে দুই যুগেরও বেশী সময় ধরে সিটি কর্পোরেশনের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে বস্তি ঘর তৈরী করে ভাড়া দেওয়া, অবৈধ গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইন ব্যবহার করার অভিযোগের বিষয়ে কোন কথাই উল্লেখ করেননি।
নাহিদুল ইসলামের মাল্টিপারপাস থেকে সুদে ঋণ নিয়ে সর্বশান্ত এক ভুক্তভূগীর সাথে আমাদের প্রতিনিধির ফোনালাপ। বর্তমানে এই ভুক্তভুগী ব্যক্তি নাহিদুল ইসলাম ও তার পালিত কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ে নিজের সব কিছু ফেলে চট্টগ্রাম থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ঐ ভুক্তভুগী তার পরিবার নিয়ে নিজের দেশের বাড়ী পর্যন্ত যেতে পারছেন না। আমাদের প্রতিনিধির সাথে ভুক্তভুগী ঐ ব্যক্তির ফোনালাপ শুনতে এখানে ক্লিক করুন।
লাল দাগ চিহ্নিত ব্যক্তি তৌহিদুল ইসলাম মজুমদারের অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালেও সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদন করা হয়।
তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানববন্ধনের ভিডিও ও গোপন ফোনালাপ শোনার জন্য এখানে মানবন্ধন ও ফোনলাপ ক্লিক করুন।
এটিকে নাহিদুল ইসলামের মাল্টিপারপাস থেকে সুদে টাকা নিয়ে অনেকেই হয়েছেন সর্বশান্ত কিংবা ভয়ে হালিশহর বি ব্লক থেকে চির দিনের জন্য চলে যেতে হয়েছে। এ সম্পর্কিত একজন ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎ আমাদের প্রতিনিধি ফোনে জানতে চান।
নাহিদুল ইসলামের ভয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যাবার বিষয়টির ফোনালাপ শুনতে এখানে ক্লিক করুন।
এদিকে তিনি তার ছোট ভাই কুয়েতে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত তৌহিদুল ইসলামের কথা প্রতিবাদ পত্রে তুলে ধরেছেন। তিনি লিখেছেন, তার ভাই তৌহিদুল ইসলামের আয়ে তাদের পারিবারিক সম্পত্তির সিংহভাগ অর্জিত।
নাহিদুল ইসলাম তার প্রতিবাদপত্রে তৌহিদুল ইসলামকে কুয়েতে বাংলাদেশ দুতাবাসের একজন প্রভাবশালী কর্মকর্তা বলে উল্লেখ করলেও মূলতঃ তৌহিদুল ইসলাম দুতাবাসের একজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা। তৌহিদুল ইসলামের কাজ হলো কুয়েতে কোন বাংলাদেশী প্রবাসীর মৃত্যু হলে সে মৃত ব্যক্তির লাশ কফিন বক্স করে দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। দুতাবাসের একজন তৃতীয় শ্রেণীর চাকুরে হয়ে সে কিভাবে দেশে ৪~৫ কোটি টাকার সম্পত্তি করতে পারে তা প্রশ্ন স্বাপেক্ষ।
বিপুল পরিমান অবৈধ অর্থ উপার্জনের মূল উৎস হলো অনৈতিক ও জোড় করে ভয় ভীতি দেখিয়ে প্রবাসীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে তৌহিদুল ইসলাম বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন। এই সংক্রান্ত তৌহিদুল ইসলাম নামে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। দূতাবাসে চাকুরীর কারণে প্রবাসীদের সাথে দূর্ণীতি, আর্থিক প্রতারনা, ভিসা নিয়ে ব্যবসা, মোটা অংকের টাকার জন্য প্রবাসীদের পাসপোর্ট আটকে রেখে ব্লেকমেইল করা, টাকা দিতে না পারলে প্রবাসীদের ভিসা বাতিল করিয়ে দেশে ফেরৎ পাঠিয়ে অনেক প্রবাসীকে সর্বসান্ত করা, এমন অনেক প্রমাণিত অভিযোগ রয়েছে তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভূগী অসংখ্য প্রবাসী তৌহিদুল ইসলামের রোষানলে পরে সব হারিয়ে দেশে এসে তার শাস্তির দাবীতে মানববন্ধন পর্যন্ত করে। এসংক্রান্ত অনেক নিউজ জাতীয় পত্রিকা সহ দেশের জনপ্রিয় টিভি চ্যানেলগুলোতে প্রচারিত হয়েছে।
এসব বিষয়ে জানতে চেয়ে আমাদের প্রতিনিধি বারবার ফোন করলেও নাহিদুল ইসলাম মোবাইল রিসিভ করেননি।