১১:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে শ্রমিক-মালিকদের কোনো সম্পর্ক নেই

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:৫৪:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২
  • 16

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেছেন, বিএনপির গণসমাবেশের আগে যে ধর্মঘট করা হচ্ছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এমনকি সাধারণ শ্রমিক মালিকদের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। পুরোপুরি সরকারের নির্দেশে অতি উৎসাহী পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন আর ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা ভয় ভীতি দেখিয়ে জোর করে পরিবহন ধর্মঘট করেছে।

সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে তাকে নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রীদের বক্তব্যের জবাব দিতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী বলেন, সরকারের জোরপূর্বক এই ধর্মঘটের কারণে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে দেশের সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক, উভয় পক্ষ। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, সড়ক পরিবহন সেক্টরের মালিক-শ্রমিক কোনো পক্ষই এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ধর্মঘট চায় না, সবাই ধর্মঘটের বিরুদ্ধে। কিন্তু সরকারের চাপের মুখে, ক্ষমতাসীনদের পেশিশক্তি আর দমন-পীড়নের কাছে নিরুপায়। কোনো কোনো এলাকায় এমন ঘটনাও ঘটেছে যে, জীবন-জীবিকার তাগিদে সড়কে গাড়ি বের করলে সরকার দলীয় ক্যাডারদের দ্বারা হামলার শিকার হয়েছেন অনেক পরিবহন শ্রমিক।

তিনি বলেন, জোরপূর্বক চাপিয়ে দেয়া ধর্মঘটের কারণে সাধারণ মানুষকে নানা রকম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। জরুরি দরকারে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় যেতে পারেনি মানুষ। এমনকি, সংকটাপন্ন রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে পারেনি স্বজনরা।

বিজ্ঞাপন
এক কথায় বলা যায়, এই ধর্মঘট গণমানুষের বিপক্ষে। সরকার পরিবহন সংগঠনের নাম ব্যবহার করে শ্রমিক সংগঠনগুলোকে জনসাধারণের মাঝে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। বিরোধীদলের শান্তিপূর্ণ গণসমাবেশের আগে সমাবেশ বানচালের জন্য, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার জন্য এই ধর্মঘটের আয়োজন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ ৫ই নভেম্বর বরিশালের সমাবেশের আগে সড়ক পরিবহন ধর্মঘটের পাশাপাশি রিক্সা, সিএনজি, নৌযান এমনকি খেয়া নৌকা পর্যন্ত বন্ধ করেছিল। এতেই সরকারের উদ্দেশ্য প্রকাশ হয়ে পড়েছে। তারপরও সরকারের মন্ত্রীরা অন্যায়ভাবে আমার নামে মিথ্যাচার করছে। উপরোন্ত সেবামূলক সড়ক পরিবহন সেক্টরকে সরকার পরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সরকারের পাতানো এই ধর্মঘটের সাথে সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিকদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইতিপূর্বের দু’একটি ছোট ভুলের কারণে সরকার বড় বড় অন্যায় ধামাচাপা দিতে পারে না। ইতিপূর্বে কোনো সরকার দেশ ও জনগণকে জিম্মি করে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয় নাই।

শিমুল বিশ্বাস বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, সংবাদ সম্মেলন, এমনকি জাতীয় সংসদেও বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে পরিবহন ধমর্ঘট নিয়ে আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছেন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতারা। গত বুধবার জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে পরিবহন ধর্মঘট প্রসঙ্গে আমার নাম জড়িয়ে অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এমনকি এই ইস্যুতে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদও প্রতিনিয়ত মিথ্যা বক্তব্য দিচ্ছেন। এ ধরনের অসত্য কথা বলে নিজের দোষ গোপন করে অন্যের ওপর দোষ না চাপানোর জন্য আহবান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন শ্রমিক নেতা এম জেনারেল ইসলাম, এমকে নরেন, হুমায়ুন কবির খান, শাহাবুদ্দিন রেজা, জাহাঙ্গীর আলম, মঞ্জরুল আলম মঞ্জু, মাহবুব আলম বাদল প্রমুখ।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে শ্রমিক-মালিকদের কোনো সম্পর্ক নেই

Update Time : ০৯:৫৪:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ নভেম্বর ২০২২

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেছেন, বিএনপির গণসমাবেশের আগে যে ধর্মঘট করা হচ্ছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এমনকি সাধারণ শ্রমিক মালিকদের কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই। পুরোপুরি সরকারের নির্দেশে অতি উৎসাহী পুলিশসহ স্থানীয় প্রশাসন আর ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা ভয় ভীতি দেখিয়ে জোর করে পরিবহন ধর্মঘট করেছে।

সোমবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে তাকে নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রীদের বক্তব্যের জবাব দিতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি। বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী বলেন, সরকারের জোরপূর্বক এই ধর্মঘটের কারণে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে দেশের সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক, উভয় পক্ষ। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, সড়ক পরিবহন সেক্টরের মালিক-শ্রমিক কোনো পক্ষই এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ধর্মঘট চায় না, সবাই ধর্মঘটের বিরুদ্ধে। কিন্তু সরকারের চাপের মুখে, ক্ষমতাসীনদের পেশিশক্তি আর দমন-পীড়নের কাছে নিরুপায়। কোনো কোনো এলাকায় এমন ঘটনাও ঘটেছে যে, জীবন-জীবিকার তাগিদে সড়কে গাড়ি বের করলে সরকার দলীয় ক্যাডারদের দ্বারা হামলার শিকার হয়েছেন অনেক পরিবহন শ্রমিক।

তিনি বলেন, জোরপূর্বক চাপিয়ে দেয়া ধর্মঘটের কারণে সাধারণ মানুষকে নানা রকম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। জরুরি দরকারে এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় যেতে পারেনি মানুষ। এমনকি, সংকটাপন্ন রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে পারেনি স্বজনরা।

বিজ্ঞাপন
এক কথায় বলা যায়, এই ধর্মঘট গণমানুষের বিপক্ষে। সরকার পরিবহন সংগঠনের নাম ব্যবহার করে শ্রমিক সংগঠনগুলোকে জনসাধারণের মাঝে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে। বিরোধীদলের শান্তিপূর্ণ গণসমাবেশের আগে সমাবেশ বানচালের জন্য, জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করার জন্য এই ধর্মঘটের আয়োজন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ ৫ই নভেম্বর বরিশালের সমাবেশের আগে সড়ক পরিবহন ধর্মঘটের পাশাপাশি রিক্সা, সিএনজি, নৌযান এমনকি খেয়া নৌকা পর্যন্ত বন্ধ করেছিল। এতেই সরকারের উদ্দেশ্য প্রকাশ হয়ে পড়েছে। তারপরও সরকারের মন্ত্রীরা অন্যায়ভাবে আমার নামে মিথ্যাচার করছে। উপরোন্ত সেবামূলক সড়ক পরিবহন সেক্টরকে সরকার পরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সরকারের পাতানো এই ধর্মঘটের সাথে সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিকদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইতিপূর্বের দু’একটি ছোট ভুলের কারণে সরকার বড় বড় অন্যায় ধামাচাপা দিতে পারে না। ইতিপূর্বে কোনো সরকার দেশ ও জনগণকে জিম্মি করে কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয় নাই।

শিমুল বিশ্বাস বলেন, সম্প্রতি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, সংবাদ সম্মেলন, এমনকি জাতীয় সংসদেও বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে পরিবহন ধমর্ঘট নিয়ে আমাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করেছেন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতারা। গত বুধবার জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে পরিবহন ধর্মঘট প্রসঙ্গে আমার নাম জড়িয়ে অসত্য বক্তব্য দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এমনকি এই ইস্যুতে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদও প্রতিনিয়ত মিথ্যা বক্তব্য দিচ্ছেন। এ ধরনের অসত্য কথা বলে নিজের দোষ গোপন করে অন্যের ওপর দোষ না চাপানোর জন্য আহবান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরিবহন শ্রমিক নেতা এম জেনারেল ইসলাম, এমকে নরেন, হুমায়ুন কবির খান, শাহাবুদ্দিন রেজা, জাহাঙ্গীর আলম, মঞ্জরুল আলম মঞ্জু, মাহবুব আলম বাদল প্রমুখ।