০৫:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দ্বিতীয় সন্তানও কন্যা, তাই পুকুরে ফেলে হত্যা করলেন বাবা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:১০:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • 24

প্রথম সন্তান কন্যা, প্রত্যাশা ছিল ছেলের। কিন্তু দ্বিতীয়বারেও কন্যা সন্তানের জন্ম হলে ক্ষুব্ধ হন জাকির হোসেন। এ নিয়ে বছরখানেক ধরে স্ত্রী রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করতেন জাকির। এর জের ধরে সোমবার গভীর রাতে ঘুমন্ত ১৪ মাসের শিশুকন্যা হুমায়রাকে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেন বাবা জাকির হোসেন।

মঙ্গলবার সকালে বাড়ির লোকজন শিশুটিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করলে একপর্যায়ে জাকির নিজেই দেখিয়ে দেন পুকুরের কোন পাশে মেয়েকে ফেলে দিয়েছেন তিনি। বর্বর ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের উঁচুলবাড়িয়া গ্রামে। মঙ্গলবার পুলিশ স্থানীয় পুকুর থেকে শিশু হুরায়রার মরদেহ উদ্ধার করেছে। আটকও করেছে জাকির হোসেনকে।

শেরপুর থানা পুলিশ জানায়, জাকির ও রাবেয়া দম্পতির জান্নাতি খাতুন নামে ৬ বছর বয়সী এক কন্যা রয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে রাবেয়া আরেকটি কন্যার জন্ম দেন। দ্বিতীয়বার ছেলের প্রত্যাশায় থাকা জাকির কন্যা হুমায়রার জন্মের পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ঝগড়া করতেন স্ত্রীর সাথে। কেন ছেলে সন্তান জন্ম দিলো না- তা নিয়ে বকাঝকাও করতো তাকে। সোমবার গভীর রাতে একই বিছানায় ঘুমিয়ে থাকা শিশু হুরায়রাকে তুলে নিয়ে বাড়ির বাইরে যান জাকির। এরপর জীবন্ত মেয়েকে ফেলে দেন বাড়ির পাশের একটি পুকুরে। সকালে পরিবারের সদস্যরা হুমায়রাকে চারপাশে খুঁজতে থাকলে, একপর্যায়ে জাকির জানান, তিনি নিজেই মেয়েকে পুকুরে ফেলে দিয়েছেন। পরে স্থানীয়রা জাকিরকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।

নিহত শিশুটির মা রাবেয়া খাতুন বলেন, ভোররাতে ঘুম থেকে জেগে দেখি হুমায়রা খাটের ওপর নেই। পরে পরিবারের সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে বিষয়টি জানাই। স্থানীয় প্রতিবেশী লোকজনকেও জানানো হয়। এরপর সবাই এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে আমার স্বামীকে চাপ দেন তারা। পরে মেয়েকে পুকুরে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে জাকির।

শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান জানান, শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতিও চলছে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

দ্বিতীয় সন্তানও কন্যা, তাই পুকুরে ফেলে হত্যা করলেন বাবা

Update Time : ০৭:১০:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

প্রথম সন্তান কন্যা, প্রত্যাশা ছিল ছেলের। কিন্তু দ্বিতীয়বারেও কন্যা সন্তানের জন্ম হলে ক্ষুব্ধ হন জাকির হোসেন। এ নিয়ে বছরখানেক ধরে স্ত্রী রাবেয়া খাতুনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা করতেন জাকির। এর জের ধরে সোমবার গভীর রাতে ঘুমন্ত ১৪ মাসের শিশুকন্যা হুমায়রাকে বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দেন বাবা জাকির হোসেন।

মঙ্গলবার সকালে বাড়ির লোকজন শিশুটিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করলে একপর্যায়ে জাকির নিজেই দেখিয়ে দেন পুকুরের কোন পাশে মেয়েকে ফেলে দিয়েছেন তিনি। বর্বর ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের উঁচুলবাড়িয়া গ্রামে। মঙ্গলবার পুলিশ স্থানীয় পুকুর থেকে শিশু হুরায়রার মরদেহ উদ্ধার করেছে। আটকও করেছে জাকির হোসেনকে।

শেরপুর থানা পুলিশ জানায়, জাকির ও রাবেয়া দম্পতির জান্নাতি খাতুন নামে ৬ বছর বয়সী এক কন্যা রয়েছে। গত বছরের জুলাইয়ে রাবেয়া আরেকটি কন্যার জন্ম দেন। দ্বিতীয়বার ছেলের প্রত্যাশায় থাকা জাকির কন্যা হুমায়রার জন্মের পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ঝগড়া করতেন স্ত্রীর সাথে। কেন ছেলে সন্তান জন্ম দিলো না- তা নিয়ে বকাঝকাও করতো তাকে। সোমবার গভীর রাতে একই বিছানায় ঘুমিয়ে থাকা শিশু হুরায়রাকে তুলে নিয়ে বাড়ির বাইরে যান জাকির। এরপর জীবন্ত মেয়েকে ফেলে দেন বাড়ির পাশের একটি পুকুরে। সকালে পরিবারের সদস্যরা হুমায়রাকে চারপাশে খুঁজতে থাকলে, একপর্যায়ে জাকির জানান, তিনি নিজেই মেয়েকে পুকুরে ফেলে দিয়েছেন। পরে স্থানীয়রা জাকিরকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।

নিহত শিশুটির মা রাবেয়া খাতুন বলেন, ভোররাতে ঘুম থেকে জেগে দেখি হুমায়রা খাটের ওপর নেই। পরে পরিবারের সবাইকে ঘুম থেকে ডেকে বিষয়টি জানাই। স্থানীয় প্রতিবেশী লোকজনকেও জানানো হয়। এরপর সবাই এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে আমার স্বামীকে চাপ দেন তারা। পরে মেয়েকে পুকুরে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করে জাকির।

শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান জানান, শিশুটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতিও চলছে।