০৩:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দানব সরকার দেশের স্বাধীনতার মূল চেতনাকে ধ্বংস করছে : মির্জা ফখরুল

  • Reporter Name
  • Update Time : ১২:২৬:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ অক্টোবর ২০২২
  • 23

বর্তমান ‘দানব’ সরকারকে হটিয়ে দেশে ‘ন্যায়-সাম্য’ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে কেরানীগঞ্জে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসার পূজামন্ডপে পূণ্যার্থীদের শারদীয় শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তিনি এই প্রত্যয়ের কথা বলেন। দুর্গাপূজার নবমীতে বেলা ১২টায় বিএনপি মহাসচিব কেরানীগঞ্জে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসার পূজামন্ডপ পরিদর্শনে যান। পূজামন্ডপে পৌঁছালে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিমউদ্দিন মাস্টার, নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ তাকে অভ্যর্থনা জানান। বিএনপি মহাসচিব পূজামন্ডপে পূণ্যার্থীদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এর আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকের এই দিনটি যখন আমরা উপদযাপন করছি, আমাদের যখন একটা দানব সরকার নির্যাতন করছে সমগ্র দেশের মানুষকে, সেই সময়ে এই উৎসবের মধ্যেও আমাদের অনেক দুঃখ-কষ্ট নিয়ে চলতে হচ্ছে। আজকে আমরা শপথ নেবো আগামী দিনে অতি দ্রুত এই অসুরকে পরাজিত করে সত্য ও ন্যায়, সাম্য ও মানবিক মূল্যবোধকে প্রতিষ্ঠা করবো। আজকের দিনে এই হোক প্রার্থনা ও সকলের শপথ। আমি এসেছি আপনাদের সকলের কাছে বিএনপির পক্ষ থেকে, দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শারদীয় দুর্গা উৎসবের অভিনন্দন জানানোর জন্যে। এই যে শারদীয় দুর্গা উৎসব উদযাপিত হচ্ছে এখান থেকে একটাই কথা যে, দেবী দুর্গার আবির্ভাব হয়েছিল পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য, অন্যায়কে পরাজিত করে, অসুরকে পরাজিত করে এবং একই সঙ্গে অসুন্দরকে পরাজিত করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা, সত্য প্রতিষ্ঠা এবং সেই সঙ্গে একটা সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন।

মির্জা ফখরুল সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, এই বাংলাদেশের মানুষ আমরা সব সময় অসাম্প্রদায়িক একটি বাংলাদেশ নির্মাণ করার জন্য কাজ করেছি। ১৯৭১ সালে আমরা যখন যুদ্ধ করি সেই যুদ্ধে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই একযোগে এদেশে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করার জন্য, এদেশের মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম এবং পরবর্তীকালে আমরা কাজ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে ৫০ বছর পরেও আমাদের সেই যে আশা-আকাক্সক্ষা সেটা বাস্তবায়িত হতে দেখছি না। আওয়ামী লীগের সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ক্ষমতায় আসার পর থেকে গণতন্ত্রকে ধবংস করার জন্য কাজ করেছে, রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান ধবংস করার জন্য কাজ করেছে, গত কয়েক বছরে তারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণ ধবংস করে দিয়েছে। এখানে দুর্ভাগ্যজনকভাবে গণতন্ত্রের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তারা অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছে। আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছে, আমাদের অসংখ্য লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমাদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য। কিন্তু আজ ৫০ বছর পরও সেই আশা পূরণ হয়নি। দেশের জনপ্রিয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাবন্দি করে রেখেছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় আসামি করেছে। আজকে দানব সরকার আমাদের নির্যাতন করছে। দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটেছে অসত্যকে পরাজিত করে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই সাম্প্রদায়িক উসকানি, বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবালয়ে আক্রমণ, প্রতিমা ভাঙচুর, লুটপাট ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এসবের মধ্যে দুর্গাপূজার মতো বড় ধর্মীয় উৎসব দেশের জনগোষ্ঠীকে সৌহার্দ্য ও শুভেচ্ছাবোধে উদ্দীপ্ত করে। যে কোনো বড় উৎসব জাতীয় জীবনে সংস্কৃতির দ্যোতক।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের আন্দোলন চলমান। আন্দোলনে আপনারা শরিক হবেন। আমাদের আন্দোলন বর্তমান সংসদ বাতিল, সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকার, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য। সেই দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

দানব সরকার দেশের স্বাধীনতার মূল চেতনাকে ধ্বংস করছে : মির্জা ফখরুল

Update Time : ১২:২৬:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ অক্টোবর ২০২২

বর্তমান ‘দানব’ সরকারকে হটিয়ে দেশে ‘ন্যায়-সাম্য’ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে কেরানীগঞ্জে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসার পূজামন্ডপে পূণ্যার্থীদের শারদীয় শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে তিনি এই প্রত্যয়ের কথা বলেন। দুর্গাপূজার নবমীতে বেলা ১২টায় বিএনপি মহাসচিব কেরানীগঞ্জে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বাসার পূজামন্ডপ পরিদর্শনে যান। পূজামন্ডপে পৌঁছালে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিমউদ্দিন মাস্টার, নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ তাকে অভ্যর্থনা জানান। বিএনপি মহাসচিব পূজামন্ডপে পূণ্যার্থীদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এর আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকের এই দিনটি যখন আমরা উপদযাপন করছি, আমাদের যখন একটা দানব সরকার নির্যাতন করছে সমগ্র দেশের মানুষকে, সেই সময়ে এই উৎসবের মধ্যেও আমাদের অনেক দুঃখ-কষ্ট নিয়ে চলতে হচ্ছে। আজকে আমরা শপথ নেবো আগামী দিনে অতি দ্রুত এই অসুরকে পরাজিত করে সত্য ও ন্যায়, সাম্য ও মানবিক মূল্যবোধকে প্রতিষ্ঠা করবো। আজকের দিনে এই হোক প্রার্থনা ও সকলের শপথ। আমি এসেছি আপনাদের সকলের কাছে বিএনপির পক্ষ থেকে, দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে শারদীয় দুর্গা উৎসবের অভিনন্দন জানানোর জন্যে। এই যে শারদীয় দুর্গা উৎসব উদযাপিত হচ্ছে এখান থেকে একটাই কথা যে, দেবী দুর্গার আবির্ভাব হয়েছিল পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য, অন্যায়কে পরাজিত করে, অসুরকে পরাজিত করে এবং একই সঙ্গে অসুন্দরকে পরাজিত করে ন্যায় প্রতিষ্ঠা, সত্য প্রতিষ্ঠা এবং সেই সঙ্গে একটা সুন্দর পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য তিনি আবির্ভূত হয়েছিলেন।

মির্জা ফখরুল সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, এই বাংলাদেশের মানুষ আমরা সব সময় অসাম্প্রদায়িক একটি বাংলাদেশ নির্মাণ করার জন্য কাজ করেছি। ১৯৭১ সালে আমরা যখন যুদ্ধ করি সেই যুদ্ধে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাই একযোগে এদেশে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করার জন্য, এদেশের মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য আমরা যুদ্ধ করেছিলাম এবং পরবর্তীকালে আমরা কাজ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে ৫০ বছর পরেও আমাদের সেই যে আশা-আকাক্সক্ষা সেটা বাস্তবায়িত হতে দেখছি না। আওয়ামী লীগের সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে ক্ষমতায় আসার পর থেকে গণতন্ত্রকে ধবংস করার জন্য কাজ করেছে, রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান ধবংস করার জন্য কাজ করেছে, গত কয়েক বছরে তারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে সম্পূর্ণ ধবংস করে দিয়েছে। এখানে দুর্ভাগ্যজনকভাবে গণতন্ত্রের নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তারা অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছে। আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত করে রেখেছে, আমাদের অসংখ্য লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, আমাদের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা একাত্তর সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার জন্য। কিন্তু আজ ৫০ বছর পরও সেই আশা পূরণ হয়নি। দেশের জনপ্রিয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাবন্দি করে রেখেছে। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলায় আসামি করেছে। আজকে দানব সরকার আমাদের নির্যাতন করছে। দেবী দুর্গার আবির্ভাব ঘটেছে অসত্যকে পরাজিত করে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই সাম্প্রদায়িক উসকানি, বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবালয়ে আক্রমণ, প্রতিমা ভাঙচুর, লুটপাট ও চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটে বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, এসবের মধ্যে দুর্গাপূজার মতো বড় ধর্মীয় উৎসব দেশের জনগোষ্ঠীকে সৌহার্দ্য ও শুভেচ্ছাবোধে উদ্দীপ্ত করে। যে কোনো বড় উৎসব জাতীয় জীবনে সংস্কৃতির দ্যোতক।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমাদের আন্দোলন চলমান। আন্দোলনে আপনারা শরিক হবেন। আমাদের আন্দোলন বর্তমান সংসদ বাতিল, সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ সরকার, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন, মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য। সেই দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি।