০৬:১৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একের পর এক কেলেঙ্কারির জেরে অবশেষে অনাস্থা ভোটের মুখে বরিস জনসন , যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন কে?

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৯:২৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জুন ২০২২
  • 22

যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন কে?

লকডাউন ও করোনা বিধিনিষেধ ভেঙে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে মৌজ-মাস্তি। এমন একের পর এক কেলেঙ্কারির জেরে অবশেষে অনাস্থা ভোটের মুখে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোমবার (৬ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে অনাস্থা ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।

বরিস অবশ্য বলছেন, শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি। তবে অনাস্থা ভোটে হারলে তাকে নিশ্চিতভাবেই প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে। এজন্য কনজারভেটিভ পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যকে তথা পার্লামেন্টের ১৮০ জন সদস্যকে তার বিরুদ্ধে ভোট দিতে হবে।
এদিকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হতে পারেন তা নিয়ে ইতোমধ্যে জল্পনা শুরু হয়ে গেছে। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে বরিস ক্ষমতাচ্যুত হলে নির্বাচনের মাধ্যমে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বেছে নেবে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি।
তবে সেখানে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না বরিস। তবে অন্তত পাঁচ রাজনীতিক পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এ দৌড়ে অংশ নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এখানে সংক্ষেপে তাদের পরিচয় তুলে ধরা হলো-
লিজ ট্রাস
বর্তমানে বরিসের মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন লিজ ট্রাস। করজারভেটিভ পার্টির তৃণমূল পর্যায়ে বেশ জনপ্রিয় তিনি। দলের ওয়েবসাইট কনজারিভেটিভ হোমের চালানো জরিপে দলের সদস্যদের মধ্যে জনপ্রিয়তায় প্রায়ই শীর্ষে থাকেন তিনি। ট্রাস নিজেকে প্রধানমন্ত্রিত্বের জন্য বেশ সতর্কতার সঙ্গে মানসিকভাবে প্রস্তুত করছেন।
ট্রাস সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক ছবি পোস্ট করছেন। কখনও রেড কার্পেটে হাটার ছবি। আবার কখনও সাবেক নারী প্রধানমন্ত্রী ও ‘আইরন লেডি’ খ্যাত মার্গারেট থ্যাচারের অনুকরণে মাথায় স্কার্ফ পরা ছবি দিচ্ছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি ইউক্রেন রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বেশ তৎপর দেখা যাচ্ছে।
বরিসের প্রধানমন্ত্রিত্বকালের প্রথম দুই বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ৪৬ বছর বয়সী এই নারী রাজনীতিক। গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে তাকে ব্রিটেনের প্রধান আলোচক নিয়োগ করা হয়। এক জরিপ মতে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে কনজারভেটিভ সদস্যদের ১১ শতাংশের সমর্থন পেতে পারেন তিনি।
জেরেমি হান্ট
যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনের ক্ষেত্রে জেরেমি হান্ট একজন শক্তি প্রতিদ্বন্দ্বী। ২০১৯ সালে দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের সময় বরিসের কাছে হেরে যান তিনি। লিজ ট্রাসের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এছাড়া সামলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও।
গত দুই বছর ধরে হান্ট স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। জেরেমি যে প্রধানমন্ত্রী হতে চান- সে কথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। চলতি বছরের শুরুর দিকেই তিনি তার এই উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা জানান দেন। অনাস্থা ভোটে বরিসের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
ঋষি সুনাক
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই রাজনীতিক বর্তমানে বরিসের সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। বরিসের উত্তরসূরী হওয়ার ক্ষেত্রে গত বছর পর্যন্তও তাকে ’ফেভারিট’ মনে করা হত। করোনা মহামারিকালে অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য বেশি প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি।
তবে ধনী স্ত্রীর অনাবাসিক কর মর্যাদা ও এ নিয়ে জরিমানা এবং বরিসের মতো করোনা বিধিনিষেধ ভঙ্গ করায় বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এরপরও তাকে এখনও প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী মনে করা হচ্ছে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

একের পর এক কেলেঙ্কারির জেরে অবশেষে অনাস্থা ভোটের মুখে বরিস জনসন , যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন কে?

Update Time : ০৯:২৯:২২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ জুন ২০২২

লকডাউন ও করোনা বিধিনিষেধ ভেঙে বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে মৌজ-মাস্তি। এমন একের পর এক কেলেঙ্কারির জেরে অবশেষে অনাস্থা ভোটের মুখে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোমবার (৬ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে অনাস্থা ভোট হওয়ার কথা রয়েছে।

বরিস অবশ্য বলছেন, শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি। তবে অনাস্থা ভোটে হারলে তাকে নিশ্চিতভাবেই প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়তে হবে। এজন্য কনজারভেটিভ পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যকে তথা পার্লামেন্টের ১৮০ জন সদস্যকে তার বিরুদ্ধে ভোট দিতে হবে।
এদিকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কে হতে পারেন তা নিয়ে ইতোমধ্যে জল্পনা শুরু হয়ে গেছে। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন বলছে, অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে বরিস ক্ষমতাচ্যুত হলে নির্বাচনের মাধ্যমে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী বেছে নেবে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি।
তবে সেখানে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না বরিস। তবে অন্তত পাঁচ রাজনীতিক পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার এ দৌড়ে অংশ নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। এখানে সংক্ষেপে তাদের পরিচয় তুলে ধরা হলো-
লিজ ট্রাস
বর্তমানে বরিসের মন্ত্রিসভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন লিজ ট্রাস। করজারভেটিভ পার্টির তৃণমূল পর্যায়ে বেশ জনপ্রিয় তিনি। দলের ওয়েবসাইট কনজারিভেটিভ হোমের চালানো জরিপে দলের সদস্যদের মধ্যে জনপ্রিয়তায় প্রায়ই শীর্ষে থাকেন তিনি। ট্রাস নিজেকে প্রধানমন্ত্রিত্বের জন্য বেশ সতর্কতার সঙ্গে মানসিকভাবে প্রস্তুত করছেন।
ট্রাস সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একের পর এক ছবি পোস্ট করছেন। কখনও রেড কার্পেটে হাটার ছবি। আবার কখনও সাবেক নারী প্রধানমন্ত্রী ও ‘আইরন লেডি’ খ্যাত মার্গারেট থ্যাচারের অনুকরণে মাথায় স্কার্ফ পরা ছবি দিচ্ছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি ইউক্রেন রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে বেশ তৎপর দেখা যাচ্ছে।
বরিসের প্রধানমন্ত্রিত্বকালের প্রথম দুই বছর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ৪৬ বছর বয়সী এই নারী রাজনীতিক। গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্রে তাকে ব্রিটেনের প্রধান আলোচক নিয়োগ করা হয়। এক জরিপ মতে, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে কনজারভেটিভ সদস্যদের ১১ শতাংশের সমর্থন পেতে পারেন তিনি।
জেরেমি হান্ট
যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনের ক্ষেত্রে জেরেমি হান্ট একজন শক্তি প্রতিদ্বন্দ্বী। ২০১৯ সালে দলের নেতৃত্ব নির্বাচনের সময় বরিসের কাছে হেরে যান তিনি। লিজ ট্রাসের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। এছাড়া সামলেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বও।
গত দুই বছর ধরে হান্ট স্বাস্থ্য সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। জেরেমি যে প্রধানমন্ত্রী হতে চান- সে কথা তিনি নিজেই জানিয়েছেন। চলতি বছরের শুরুর দিকেই তিনি তার এই উচ্চাকাঙ্ক্ষার কথা জানান দেন। অনাস্থা ভোটে বরিসের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
ঋষি সুনাক
ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই রাজনীতিক বর্তমানে বরিসের সরকারের অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। বরিসের উত্তরসূরী হওয়ার ক্ষেত্রে গত বছর পর্যন্তও তাকে ’ফেভারিট’ মনে করা হত। করোনা মহামারিকালে অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে প্রণোদনা প্যাকেজের জন্য বেশি প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি।
তবে ধনী স্ত্রীর অনাবাসিক কর মর্যাদা ও এ নিয়ে জরিমানা এবং বরিসের মতো করোনা বিধিনিষেধ ভঙ্গ করায় বেশ সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এরপরও তাকে এখনও প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থী মনে করা হচ্ছে।