০৪:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আলুর অভাবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস বিক্রি বন্ধ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৪৬:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জুলাই ২০২২
  • 27

ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস

ত্রিশ বছরের ব্যবসা গুঁটিয়ে রাশিয়া ছেড়েছে ম্যাকডোনাল্ডস। বিখ্যাত এই রেস্টুরেন্টটির বেশির ভাগ আউটলেটস কিনে নিয়েছে ‘ভুকসনো আই টোচকা’। তবে যুদ্ধের প্রভাবে রাশিয়ায় দেখা দিয়েছে ভালো মানের আলুর সংকট। আলুর অভাবে আপাতত ভুকসনোতে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস বিক্রি বন্ধ রয়েছে।

বার্গার ও নাগেটসের সঙ্গে প্রচলিত একটি সাইড ডিশ ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস। ম্যাকডোনাল্ডসের ফ্রেঞ্চ ফ্রাইসের স্বাদ এখনো লেগে আছে রাশিয়ান নাগরিকদের মুখে। সেই বাজারটিই ধরতে চেয়েছিল ভুকসনোতে। কিন্তু বিধি-বাম, আলুর সংকটে চাহিদা ও রুচিমাফিক ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। যদিও প্রতিষ্ঠানটি আশা করছে আগামী আলুর মৌসুমে আবারও বিখ্যাত এই সাইড ডিশটি জায়গা করে নিবে রুশদের খাবারের প্লেটে।
রুশ সংবাদমাধ্যম তাসের বরাত দিয়ে জানা যায়, গত বছর রাশিয়ায় আলুর উৎপাদন সন্তোষজনক ছিল না। এতে করে দেশীয় আলু দিয়ে আপাতত আর কাজ চালানো যাচ্ছে না। অন্যদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে দেশের বাইরে থেকে, বিশেষ করে পশ্চিমাদের থেকে আলু আমদানিও অনেকটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে রাশিয়ার কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে আলুর কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু রয়েছে। এক্ষেত্রে মূলত রেস্টুরেন্টগুলো যে মানের আলু চাচ্ছে, সেগুলো কম থাকায় ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস তৈরিতে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে ১৯৯০ সালে রাশিয়ায় যাত্রা শুরু করে ম্যাকডোনাল্ডস। এটিই ছিল রাশিয়ার মাটিতে প্রথম কোনো পশ্চিমা ফাস্ট ফুড কোম্পানি।

১৯৯০ সালে রাশিয়ার মস্কোর পুশকিন স্কয়ারে যেদিন ম্যাকডোনাল্ডস তাদের প্রথম আউটলেটটি চালু করে, সেদিন প্রায় ৩০ হাজার মানুষের ভিড় হয়েছিল রেস্টুরেন্টটির বাইরে।

তবে সব কিছু বদলে দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত। ফেব্রুয়ারির শেষার্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করলে, একে একে সব পশ্চিমা কোম্পানি রাশিয়া ছাড়তে শুরু করে। এত দিন ম্যাকডোনাল্ডস মাটি কামড়ে থাকলেও এবার বুঝে গেছে যে ধাঁচে যুদ্ধ চলছে, এতে করে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। চলতি বছরের ১৬ মে ম্যাকডোনাল্ডসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস কেম্পসজিনসকি বলেন, ‘রাশিয়া ও ম্যাকডোনাল্ডস একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। আমরা ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করিনি এমন দিন দেখতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, এমন দিন এসে গেছে। রাশিয়া ছাড়তে হচ্ছে আমাদের।
শুরুতে ক্ষণস্থায়ীভাবে রাশিয়াতে তাদের আউটলেটগুলো বন্ধ করলেও, একেবারে তলিতল্পা নিয়ে যে ফিরে যেতে হবে সেটি হয়তো বুঝতে পারেনি ম্যাকডোনাল্ডস। একদিকে তীব্র সরবরাহ সংকট, অন্যদিকে মানবিকতার পশ্চিমা আবেগ। দুইয়ে মিলে এ কয়মাস ধরে সুবিধা করে উঠতে পারছিল না ম্যাকডোনাল্ডস। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

আলুর অভাবে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস বিক্রি বন্ধ

Update Time : ০৫:৪৬:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জুলাই ২০২২

ত্রিশ বছরের ব্যবসা গুঁটিয়ে রাশিয়া ছেড়েছে ম্যাকডোনাল্ডস। বিখ্যাত এই রেস্টুরেন্টটির বেশির ভাগ আউটলেটস কিনে নিয়েছে ‘ভুকসনো আই টোচকা’। তবে যুদ্ধের প্রভাবে রাশিয়ায় দেখা দিয়েছে ভালো মানের আলুর সংকট। আলুর অভাবে আপাতত ভুকসনোতে ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস বিক্রি বন্ধ রয়েছে।

বার্গার ও নাগেটসের সঙ্গে প্রচলিত একটি সাইড ডিশ ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস। ম্যাকডোনাল্ডসের ফ্রেঞ্চ ফ্রাইসের স্বাদ এখনো লেগে আছে রাশিয়ান নাগরিকদের মুখে। সেই বাজারটিই ধরতে চেয়েছিল ভুকসনোতে। কিন্তু বিধি-বাম, আলুর সংকটে চাহিদা ও রুচিমাফিক ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। যদিও প্রতিষ্ঠানটি আশা করছে আগামী আলুর মৌসুমে আবারও বিখ্যাত এই সাইড ডিশটি জায়গা করে নিবে রুশদের খাবারের প্লেটে।
রুশ সংবাদমাধ্যম তাসের বরাত দিয়ে জানা যায়, গত বছর রাশিয়ায় আলুর উৎপাদন সন্তোষজনক ছিল না। এতে করে দেশীয় আলু দিয়ে আপাতত আর কাজ চালানো যাচ্ছে না। অন্যদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে দেশের বাইরে থেকে, বিশেষ করে পশ্চিমাদের থেকে আলু আমদানিও অনেকটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তবে রাশিয়ার কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, দেশে আলুর কোনো সংকট নেই। পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু রয়েছে। এক্ষেত্রে মূলত রেস্টুরেন্টগুলো যে মানের আলু চাচ্ছে, সেগুলো কম থাকায় ফ্রেঞ্চ ফ্রাইস তৈরিতে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পরে ১৯৯০ সালে রাশিয়ায় যাত্রা শুরু করে ম্যাকডোনাল্ডস। এটিই ছিল রাশিয়ার মাটিতে প্রথম কোনো পশ্চিমা ফাস্ট ফুড কোম্পানি।

১৯৯০ সালে রাশিয়ার মস্কোর পুশকিন স্কয়ারে যেদিন ম্যাকডোনাল্ডস তাদের প্রথম আউটলেটটি চালু করে, সেদিন প্রায় ৩০ হাজার মানুষের ভিড় হয়েছিল রেস্টুরেন্টটির বাইরে।

তবে সব কিছু বদলে দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত। ফেব্রুয়ারির শেষার্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করলে, একে একে সব পশ্চিমা কোম্পানি রাশিয়া ছাড়তে শুরু করে। এত দিন ম্যাকডোনাল্ডস মাটি কামড়ে থাকলেও এবার বুঝে গেছে যে ধাঁচে যুদ্ধ চলছে, এতে করে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। চলতি বছরের ১৬ মে ম্যাকডোনাল্ডসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস কেম্পসজিনসকি বলেন, ‘রাশিয়া ও ম্যাকডোনাল্ডস একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। আমরা ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করিনি এমন দিন দেখতে হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, এমন দিন এসে গেছে। রাশিয়া ছাড়তে হচ্ছে আমাদের।
শুরুতে ক্ষণস্থায়ীভাবে রাশিয়াতে তাদের আউটলেটগুলো বন্ধ করলেও, একেবারে তলিতল্পা নিয়ে যে ফিরে যেতে হবে সেটি হয়তো বুঝতে পারেনি ম্যাকডোনাল্ডস। একদিকে তীব্র সরবরাহ সংকট, অন্যদিকে মানবিকতার পশ্চিমা আবেগ। দুইয়ে মিলে এ কয়মাস ধরে সুবিধা করে উঠতে পারছিল না ম্যাকডোনাল্ডস। এর পরিপ্রেক্ষিতেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে।