রাজধানীর অভিজাতত এলাকা বনানী-গুলশানের একেবারে কেন্দ্রস্থলে কড়াইল বস্তি। মূলত টিএন্ডটি, গণপূর্ত ও ওয়াসার ৯৩একর জমি অবৈধভাবে দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ৪০ হাজার ঘরবাড়ি ও দোকানপাট। জমির মালিক সরকার হলেও এখানে নিয়ন্ত্রণ প্রভাবশালীদের। যাদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে ভাড়া থাকেন রিক্সাচালক, পোশাক শ্রমিকসহ নিম্ন আয়ের মানুষ।
সারাদেশের বিদ্যুত- গ্যাস-পানির সমস্যা থাকলেও কড়াইল বস্তি কোনো সমস্যাই নেই। রাত-দিন জ্বলছে আলো, চলচছে টিভি, ফ্রিজ এমনকি এসিও। অবশ্য মাঝে মাঝে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের চেষ্টা করে। পরিণতিতে অবৈধ দখলদারদের হাতে লাঞ্ছনা-ধোলাইয়ের শিকার হতে হয় বিদ্যুত, ওয়াসা ও তিতাস গ্যাসের কর্মীদের।
বস্তিবাসীরা জানালেন, তাদের প্রতি ঘরে বিদ্যুৎ থাকলেও কোনো ধরনের মিটার নেই। একইভাবে পানি ও গ্যাসের সুবিধাও পান তারা। বিনিময়ে প্রতি মাসে একটা নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দিতে হয়। বস্তিতে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া থেকে শুরু করে টাকা তোলার কাজটি জোনায়েদ ও ইয়াকুব নামের দুই ব্যক্তি করে থাকে।
চাঁদাবাজির বিভিন্ন খাতের হিসেব বলছে, এ বস্তিতে গ্যাস, পানি ও বিদ্যুৎ ছাড়াও অবৈধ বানানো ঘর এবং দোকান ভাড়া থেকে প্রতি মাসে আদায় করা হয় ১০ কোটি টাকার মতো। প্রশ্ন হলো বস্তি থেকে অবৈধভাবে উপার্জন করা কোটি কোটি টাকা যায় কোথায়? বস্তিবাসীর অনেকে তা জানলেও মুখ খুলতে রাজি নন। পুলিশ বলছে, সম্প্রতি আল আমিনের হত্যাকাণ্ড বস্তিতে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই গ্রুপের দন্দ্বের জের।
কড়াইল বস্তির ঘর-দোকানের ভাড়া ও ইউটিলিটি সেবার অর্থ আদায় নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করেই বাড়ছে হত্যার মতো অপরাধ।
কড়াইল বস্তির ঘর-দোকানের ভাড়া ও ইউটিলিটি সেবার অর্থ আদায় নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করেই বাড়ছে হত্যার মতো অপরাধ। ইউনিট কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে কাউন্সিলর মফিজ ও আওয়ামী লীগ নেতা কাদের খানের দন্দ্ব এখন ওপেন সিক্রেট। নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
এ বিষয়ে উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাদের খানের নম্বরে ফোন করে তাকে পাওয়া যায়নি। কথা হয় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজুর রহমানের সাথে। তিনি দোষ চাপালেন প্রতিপক্ষের ওপর। কোটি টাকার চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কড়াইল বস্তিতে এখন পর্যন্ত সাতটি হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
Leave a Reply