যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোভুক্ত দেশসমূহ রাশিয়াকে ভৌগোলিকভাবে ঘিরে ফেলার ছক কষছে বলে দীর্ঘদিনের অভিযোগ মস্কোর। তারই অন্যতম পদক্ষেপ ছিল মৌখিক চুক্তি ভেঙে ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত করার প্রক্রিয়া। যে প্রেক্ষিতে ইউক্রেনে অভিযান চালায় রাশিয়া।
এবার রুশ আক্রমণের ২০তম দিনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যত স্বীকার করে নিলেন যে, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন ন্যাটো সামরিক জোটের সদস্য হবে না। এটা দেশবাসীর মেনে নেয়া উচিত।
মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে তাৎপর্যপূর্ণ এ মন্তব্য করলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্টের এই ঘোষণার পর থেকেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে- তাহলে কী ক্রমশ আপসের পথেই হাঁটছে ইউক্রেন?
মূলত, রুশ সেনারা রাজধানী কিয়েভের যত কাছে পৌঁছাচ্ছে, ততই তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন ধরা পড়ছে জেলেনস্কির বক্তব্যে। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত ন্যাটো-ইউক্রেন সম্পর্ক থেকেই ইউক্রেনে-রুশ আগ্রাসনের সূচনা। তবে জেলেনস্কির সর্বশেষ বক্তব্যে চলমান বিপর্যয়ের মধ্যেই উঁকি দিচ্ছে আশার আলো।
প্রসঙ্গত, রুশ আগ্রাসনের একেবারে শুরু থেকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনকে ন্যাটো সদস্যভুক্ত করার আবেদন-নিবেদন জারি রেখেছিলেন। কিন্তু সদস্যপদ তো দূরের কথা, ইউক্রেনকে শুধুমাত্র অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেই দায় সেরেছে সামরিক জোটটি।
অথচ ইউক্রেনের এই ন্যাটো ঘনিষ্ঠতা নিয়েই আপত্তি ছিল মস্কোর! যার প্রেক্ষিতে হামলা এবং চলমান পরিস্থিতিতে ক্রমশ ন্যাটোর সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছে ইউক্রেনের।
অন্যদিকে রাশিয়ার আগ্রাসনের তেজকে মোকাবিলা করে বেশি দিন যে কিয়েভ ধরে রাখা যাবে না, তাও বুঝতে পারছেন জেলেনস্কি। এই প্রেক্ষিতেই ন্যাটো নিয়ে অমন তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন তিনি।
এদিকে কিয়েভের দিকে এক পা এক পা করে এগোচ্ছে বিশাল রুশ বাহিনী। আগ্রাসনের ২০তম দিনে কিয়েভকে কেন্দ্র করে বোমাবর্ষণের তীব্রতাও ক্রমশ বাড়ছে। এতে অন্তত পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
কিয়েভ কর্তৃপক্ষের দাবি, রুশ বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে ভেঙে পড়েছে একাধিক বহুতল ভবন। ধ্বংসস্তূপের নীচে ঠিক কত জন চাপা পড়েছেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। সূত্র- বিবিসি, আল-জাজিরা