০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪, ৮ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শুভ জন্মদিন বঙ্গতাজ (বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ)

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৪১:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ জুলাই ২০২১
  • 34

তাজউদ্দিন আহমেদ কোরানের হাফেজ ছিলেন। তিনি বিয়ে করেছিলেন একজন নামকরা ইসলামি স্কলারের মেয়েকে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী-নেতা ছিলেন। তাজউদ্দিন ছিলেন পাকিস্তান আন্দোলনের বিরুদ্ধে। তিনি সমাজতান্ত্রিক আদর্শে প্রভাবিত ছিলেন, কিন্তু সক্রিয় বাম রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন না। দেশভাগ উত্তর ঢাকার রাজনীতিতে কলকাতা শিক্ষিত ও কলকাতা ফেরত রাজনিতিকদের সঙ্গে ঢাকায় শিক্ষিতদের মধ্যে একটা ঠাণ্ডা বিরোধ ছিল।

আইয়ুব খান এসে রাজনীতি চর্চা নিষিদ্ধ করে দিলে অনেক আওয়ামী লীগারই রাজনীতি ছেড়ে দেন। দিয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ স্বয়ং। ছয় দফাকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠন করলেন, অবসরে চলে যাওয়া তাজউদ্দীনকে বানালেন তার ডেপুটি। তাজউদ্দীন বরাবরই ঢাকার পুরনো বিপ্লবী রাজনীতির উত্তরাধিকার বহন করতেন। বামপন্থিদের সঙ্গে তার সক্রিয় যোগাযোগ বঙ্গবন্ধু অনুমোদন করেছিলেন।

আমার ধারনা স্বাধীনতা আন্দোলনের রান আপে বামপন্থিদের চোখে চোখে রাখার কাজটা বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দীন আহমেদের মাধ্যমে করতেন, যদিও রুশপন্থিদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নিজেরও ভালো বোঝাপড়া ছিল। স্বাধীনতার আন্দোলনের প্রত্যেকটি ধাপে বঙ্গবন্ধুর আইডিয়াগুলোর এক্সিকিউশনের মূল দায়িত্ব পালন করে গেছেন তাজউদ্দীন। তাজউদ্দীনের সমান্তরালে ছাত্র আন্দোলনকে সংগঠিত করার কাজটুক বঙ্গবন্ধু সরাসরি তত্ত্বাবধান করতেন। কিন্তু তাজউদ্দীনের মেধা ও কমিটমেনটের প্রতি বেশি আস্থার কারণে যুদ্ধকালীন সরকার চালানোর কাজ পেলেন তাজউদ্দিন।

কি অসামান্য দক্ষতায় মুশতাক গঙের চক্রান্তকে হটিয়ে ভারত সরকারের সহায়তায় তাজউদ্দিন দেশকে বিজয়ের দিকে নিয়ে এলেন সে এক বিস্ময়। আবার অর্থ মন্ত্রীর পদ থেকে বাদ পড়া, সোভিয়েত প্রেসক্রিপশনে বঙ্গবন্ধুর করা বাকশালের বিরোধিতা করার মধ্য দিয়ে মূল নেতৃত্বের সঙ্গে তার দ্বিমত পোষণের ইতিহাস আমরা পাবো। কিন্তু যা আমরা পাবো না, ইতিহাসের অলিগলি তল্লাশি করেও তা হোল তার নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্যহীনতার কথা; কুচক্রীরা সকল মেধা ঢেলেও তাজউদ্দিনের বিশ্বাসঘাতকতার কোন দলিল হাজির করতে পারেনি।

তাজউদ্দিন ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছায়ার মত, বৃক্ষ মরে গেলে ছায়া যেমন মরে যায় তেমনি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর তার ছায়াও মরে যায়। বঙ্গবন্ধু আর তাজউদ্দীনকে তাই ইতিহাসও আলাদা করতে পারেনি। শুভ জন্মদিন বঙ্গতাজ; বাংলার শ্রেষ্ঠ এক সন্তানকে জন্মদিনের শ্রদ্ধা।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

শুভ জন্মদিন বঙ্গতাজ (বাংলার প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ)

Update Time : ০৫:৪১:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ জুলাই ২০২১

তাজউদ্দিন আহমেদ কোরানের হাফেজ ছিলেন। তিনি বিয়ে করেছিলেন একজন নামকরা ইসলামি স্কলারের মেয়েকে। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী-নেতা ছিলেন। তাজউদ্দিন ছিলেন পাকিস্তান আন্দোলনের বিরুদ্ধে। তিনি সমাজতান্ত্রিক আদর্শে প্রভাবিত ছিলেন, কিন্তু সক্রিয় বাম রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন না। দেশভাগ উত্তর ঢাকার রাজনীতিতে কলকাতা শিক্ষিত ও কলকাতা ফেরত রাজনিতিকদের সঙ্গে ঢাকায় শিক্ষিতদের মধ্যে একটা ঠাণ্ডা বিরোধ ছিল।

আইয়ুব খান এসে রাজনীতি চর্চা নিষিদ্ধ করে দিলে অনেক আওয়ামী লীগারই রাজনীতি ছেড়ে দেন। দিয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমেদ স্বয়ং। ছয় দফাকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠন করলেন, অবসরে চলে যাওয়া তাজউদ্দীনকে বানালেন তার ডেপুটি। তাজউদ্দীন বরাবরই ঢাকার পুরনো বিপ্লবী রাজনীতির উত্তরাধিকার বহন করতেন। বামপন্থিদের সঙ্গে তার সক্রিয় যোগাযোগ বঙ্গবন্ধু অনুমোদন করেছিলেন।

আমার ধারনা স্বাধীনতা আন্দোলনের রান আপে বামপন্থিদের চোখে চোখে রাখার কাজটা বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দীন আহমেদের মাধ্যমে করতেন, যদিও রুশপন্থিদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর নিজেরও ভালো বোঝাপড়া ছিল। স্বাধীনতার আন্দোলনের প্রত্যেকটি ধাপে বঙ্গবন্ধুর আইডিয়াগুলোর এক্সিকিউশনের মূল দায়িত্ব পালন করে গেছেন তাজউদ্দীন। তাজউদ্দীনের সমান্তরালে ছাত্র আন্দোলনকে সংগঠিত করার কাজটুক বঙ্গবন্ধু সরাসরি তত্ত্বাবধান করতেন। কিন্তু তাজউদ্দীনের মেধা ও কমিটমেনটের প্রতি বেশি আস্থার কারণে যুদ্ধকালীন সরকার চালানোর কাজ পেলেন তাজউদ্দিন।

কি অসামান্য দক্ষতায় মুশতাক গঙের চক্রান্তকে হটিয়ে ভারত সরকারের সহায়তায় তাজউদ্দিন দেশকে বিজয়ের দিকে নিয়ে এলেন সে এক বিস্ময়। আবার অর্থ মন্ত্রীর পদ থেকে বাদ পড়া, সোভিয়েত প্রেসক্রিপশনে বঙ্গবন্ধুর করা বাকশালের বিরোধিতা করার মধ্য দিয়ে মূল নেতৃত্বের সঙ্গে তার দ্বিমত পোষণের ইতিহাস আমরা পাবো। কিন্তু যা আমরা পাবো না, ইতিহাসের অলিগলি তল্লাশি করেও তা হোল তার নেতৃত্বের প্রতি আনুগত্যহীনতার কথা; কুচক্রীরা সকল মেধা ঢেলেও তাজউদ্দিনের বিশ্বাসঘাতকতার কোন দলিল হাজির করতে পারেনি।

তাজউদ্দিন ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছায়ার মত, বৃক্ষ মরে গেলে ছায়া যেমন মরে যায় তেমনি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর তার ছায়াও মরে যায়। বঙ্গবন্ধু আর তাজউদ্দীনকে তাই ইতিহাসও আলাদা করতে পারেনি। শুভ জন্মদিন বঙ্গতাজ; বাংলার শ্রেষ্ঠ এক সন্তানকে জন্মদিনের শ্রদ্ধা।