সাংবাদিক শিরিন আবু আকলেহ হত্যায় ব্যবহৃত বুলেট য্ক্তুরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেবে ফিলিস্তিন। গত মাসে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে খবর সংগ্রহের সময় ইসরাইলী বাহিনীর গুলীতে নিহত হন এই ফিলিস্তিনী-আমেরিকান সাংবাদিক।
ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষের জেনারেল প্রসিকিউটর আকরাম আল-খাতিব গত শনিবার যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্তা সংস্থাকে সংক্ষেপে বলেন, ‘ওই বুলেটটি পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তরে রাজি হয়েছি আমরা’। ফিলিস্তিনী কর্তৃপক্ষ, অনেক মানবাধিকার গোষ্ঠী এবং সংবাদমাধ্যমগুলো প্রাথমিকভাবে তদন্ত করে দেখেছে যে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবু আকলেহ ইসরাইলি সেনাবাহিনীর গুলীতেই প্রাণ হারান।
বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, জেরুজালেমে জন্ম নেওয়া শিরিনকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। ব্যালিস্টিক এবং ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সবুজ টিপযুক্ত বুলেটটি মূলত বর্ম ছিদ্র করার জন্য ডিজাইন করা এবং ‘এম৪ রাইফেলে ব্যবহৃত হয়েছিল। বুলেটটি তার মাথা থেকে বের করা হয়েছিল।
বুলেটটি থ্রিডি মডেল ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং বিশেষজ্ঞদের মতে এটি ছিল ৫.৫৬ মিমি ক্যালিবার। এই ধরণের বুলেট সাধারণত ইসরাইলি বাহিনী ব্যবহার করে। বুলেটটি যুক্তরাষ্ট্রে ডিজাইন ও তৈরি করা হয়েছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। উল্লেখ্য, জেনিন শহরে ইসরাইলি অভিযানের খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন শিরীন আবু আকলেহ। এ সময় দখলদার বাহিনীর গুলিবর্ষণের শিকার হন তিনি। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানায় কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেকে দেশ।
মা-বাবা আটকের পর গাড়িতে দুই ফিলিস্তিনী শিশুর কান্না : গাড়ি নিয়ে জেরুজালেমে ঢুকেছিলেন এক ফিলিস্তিনী দম্পতি। সঙ্গে ছিল তাদের দুই সন্তান। জেরুসালেমে ঢোকার পরপরই ইসরাইলের পুলিশ ওই দম্পতিকে আটক করে। গাড়িতে পড়ে থাকে তাদের দুই সন্তান। বাবা-মাকে এভাবে দেখে তারা কাঁদতে শুরু করে। এ রকম একটি ভিডিও অনলাইন মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ইসরাইলের পুলিশের দাবি, আটক ওই নারীর জেরুজালেমে ঢোকার অনুমতি ছিল না। এ জন্য ওই নারী ও তার স্বামীকে আটক করেছে তারা। তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম এ খবর জানিয়ে বলেছে, দুই শিশুর মধ্যে একটি নবজাতক। মা-বাবাকে পুলিশের হাতে আটক হতে দেখে গাড়িতে কাঁদছিল তারা।
টুইটারে পোস্ট হওয়া ভিডিও চিত্রে শিশু দুটিকে কাঁদতে শোনা যাচ্ছিল। এর মধ্যে বড় শিশুটি ‘বাবা, বাবা’ বলে কাঁদছিল। এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন এক ব্যক্তি। তাকে বলতে শোনা যায় ‘সৃষ্টিকর্তাই আমার প্রত্যক্ষদর্শী।’ এরপর তিনি গাড়ির দরজা খোলেন। অনেকে ভিডিওটির মন্তব্যের ঘরে দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ভিডিও ফুটেজে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাকে ট্যাগ করে একজন লিখেছেন, ‘হে মানুষ, আফগানিস্তানে নারী অধিকার রক্ষায় সোচ্চার মানুষ ও মুসলিম বিশ্ব, এই ঘটনায় আপনাদের উদ্যোগ কী, আমি দেখতে চাই।’
আরেকজন বিদ্রূপ করে লেখেন, ‘ইউক্রেনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে চাচ্ছে না ইসরাইল। কী দারুণ এক ব্যাপার না!’