রাজধানীর দক্ষিণখানে ১০ তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সানাজানা মোসাদ্দিকার (২১) আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে তার বাবা শাহীন আলমকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আজ বুধবার দুপুরে ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকা থেকে আতœগোপনে থাকা আসামি শাহীন আলম আটক করা হয়।
ঘটনার পর দিন গত ২৮ আগষ্ট শিক্ষার্থী সানজানার মা উম্মেসালমা বাদি হয়ে দক্ষিনখান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় সানজানার বাবা শাহীন আলমকে আসামি করা হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি বাসসকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সানাজানা মোসাদ্দিকার বাবা শাহীন আলম (৪৮)কে ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত সানজানা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী । দক্ষিনখানের দক্ষিন মোল্লারটেক বটতলা রোডে ধানসিঁড়ি এ্যাপার্টমেন্টর একটি ফ্ল্যাটে পরিবারের সাথে সানজানা থাকতেন। দু’বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সানজানা ছিলেন সবার বড়। আতœহত্যার আগে তিনি একটি চিরকুট লিখে গেছেন। চিরকুটে ওই ছাত্রী তার বাবাকে ‘পশু ও রেপিস্ট’ বলে উল্লেখ করেন। তাকে মারধর করায় ইতোপূর্বে তিনি বাবার নামে দক্ষিনখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।
দক্ষিনখান থানা পুলিশ জানায়, গত শনিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে কাপড় শুকানোর জন্য বাসার সিকিউরিটি গার্ডের কাছ থেকে ছাদের চাবি নেন সানজানা। পরে ওই ছাত্রী ১০তলা ভবনের ছাদে ওঠে সেখান থেকে নিচে লাফিয়ে পড়েন। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে প্রথমে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার আগারগাঁওয়ে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকেল সাড়ে চার টার দিকে সানজানাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের লোকজন জনিয়েছেন, সানজানার বাবা শাহীন আলম পাঁচ বছর আগে তাদেরকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে দু’পরিবারের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। এরপর সানজানার মা দু’মাস আগে স্বামীকে ডিভোর্স দেন। এরপর শাহীন আলম সানজানার বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফিসসহ আনুষঙ্গিক খরচ দেওয়া বন্ধ করে দেন।
আত্মহত্যার আগে একটি চিরকুট লিখে গেছেন ওই শিক্ষার্থী । চিকুটটি উদ্ধার করেছে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমার বাবা দায়ী। একটা ঘরে পশুর সাথে থাকা যায়। কিন্তু অমানুষের সাথে না। একজন অত্যাচারী রেপিস্ট, যে কাজের মেয়েকেও ছাড়ে নাই। আমি তার করুণ ভাগ্যের সূচনা’।
Leave a Reply