০৮:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘রাজপথ যার দখলে নির্বাচনী ফলাফল তার নিয়ন্ত্রণে’

  • Reporter Name
  • Update Time : ০২:০৮:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২
  • 34

‘রাজপথ যার দখলে নির্বাচনী ফলাফল তার নিয়ন্ত্রণে’ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ এই প্রবাদের বিশ্বাস থেকেই ছক আঁকছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো ১৬ থেকে ১৭ মাস বাকি। অথচ এখন থেকে রাজপথ নিজেদের দখলে রাখতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত বিএনপি। দুই বৃহৎ দলকে ঘিরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো করে অগ্রসর হচ্ছে। বিএনপি ডান-বাম এবং মধ্যপস্থি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অভিন্ন দাবিতে সমান্তরাল কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মাঠ নিজেদের দখলে রাখার কৌশল গ্রহণ করেছে।

বিএনপি গণভবন ঘেরাও করতে আসলে প্রধানমন্ত্রী চায়ের দাওয়াত দেবেন এবং আন্দোলনকারীদের বাঁধা দেয়া হবে না ঘোষণা দিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের যাতে বাধা দেয়া না হয় সে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। এমনকি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রধান মিশেল ব্যাসেলেট ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মাঠের আন্দোলনে অধিক বলপ্রয়োগ না করার পরামর্শ দিয়ে গেছেন। কিন্তু গত কয়েকদিন জেলা পর্যায়ে বিএনপির কর্মসুচির ৫০টি স্পটে সরকার সমর্থিত ছাত্রলীগ, যুবলীগ হামলা করেছে। গণমাধ্যমে সেই ভয়াবহ সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। শুধু তাই নয় গণতান্ত্রিক মঞ্চ থেকে অভিযোগ করা হয় রাজপথের আন্দোলন ঠেকানোর লক্ষ্যে ক্যাসিনো সম্রাট হিসেবে পরিচিত ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে জামিন দেয়া হয়েছে। জামিন পেয়েই হাসপাতাল থেকে বের হয়েই সম্রাট রাজনৈতিক শোডাইন করেছেন।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ সমাবেশ ও পদযাত্রা কর্মসূচিতে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘নানা জায়গা বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশে এ সরকারের গুন্ডা বাহিনী ছাত্রলীগ, যুবলীগ নানাভাবে হামলা করছে এবং একই সঙ্গে রাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনীও হামলা চালাচ্ছে। হামলা করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।

এর আগে গত ১৩ আগষ্ট বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে রাজপথের ভয় দেখান? রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। নৈরাজ্যের পথ ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনের পথে হাঁটুন, নির্বাচনকে মোকাবিলা করেন। আগস্ট মাস যেতে দেন, তারপর টের পাবেন কত ধানে কত চাল। জাহাঙ্গীর কবির নানকের এই বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগ অনুসারি বুদ্ধিজীবীরা টিভির বিভিন্ন টকশোগুলোতে জানান, শোকের মাস আগষ্টে আওয়ামী লীগ মাঠের কোনো কর্মসূচি দেয় না। আগষ্ট মাস পার হলেই আওয়ামী লীগ মাঠে নামবে সে ইঙ্গিত এই বক্তব্যের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মতভেদের কারণে নির্বাচন নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি। ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, ১৩২৪ সালে বাংলা অভিযান শেষ করে দিল্লি অভিমুখে রওনা দিয়েছিলেন তৎকালের ভারতের অধিপতি, দিল্লি ও গৌড়-বাংলার সুলতান গিয়াস উদ্দিন তুঘলক। এ সময় তিনি নির্দেশনা জারি করেন, সেখানে (দিল্লি) পৌঁছে যেন নিজামউদ্দিন আউলিয়াকে আর না দেখেন। সুলতান গিয়াস উদ্দিনের অভিপ্রায় শুনে মুচকি হেসে সুফি সাধক নিজামউদ্দিন আওলিয়া বলেছিলেন, ‘হনুজ, দিল্লি দূর অস্ত’ (দিল্লি এখনো দূরে)। পথেই সুলতান গিয়াস উদ্দিন তুঘলকের মৃত্যু ঘটে।

সুফি দরবেশের ওই উক্তি ‘হনুজ, দিল্লি দূর অস্ত’ এর মতোই বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখনো বহুদূর। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু নির্বাচন নিয়েই শুরু হয়ে গেছে বিতর্ক। হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারি মাসে দায়িত্ব নিয়েই রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে মতামত গ্রহণ করেন। এতে শতকরা ৯০ ভাগই ইভিএমে ভোট না করার পরামর্শ দেন। অথচ এরই মধ্যেই ঘোষণা দেয়া হয়েছে ১৫০ আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। এ নিয়ে নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর আগে বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। এই সিইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও বেশির ভাগ দল প্রত্যাখ্যান করেছে। শুধু তাই নয় হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন যে আগের বিতর্কিত কে এম নুরুল হুদা ও কাজী রকিবউদ্দীন কমিশনের পথ ধরে হাঁটতে শুরু করেছে তা পরিষ্কার। অবশ্য বিএনপি এরই মধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে তারা নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে যাবেন না এবং নির্বাচন হতে দেবেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এ দেশে কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না নিলে সে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। আর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংবিধানের বিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সরকার সংবিধানের বাইরে এক চুলও নড়বে না। ফলে দেশের দুই বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কার্যক নির্বাচন ইস্যুতে বিপরীতমুখী অবস্থান। দুই দলের সমঝোতা ছাড়া নির্বাচনের আয়োজন কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ প্রভাবশালী শক্তিগুলো সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চাচ্ছে।

হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসি ইভিএমের ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের ঘোষণা দেয়ার পর সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বলেছে, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) একটি ‘নিকৃষ্ট যন্ত্র’। এই যন্ত্র মানুষকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। ড. বদিউল আলম মজুমদার প্রশ্ন তুলে বলেন, যে যন্ত্র মানুষকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, সেই যন্ত্র ব্যবহারের যৌক্তিকতা কী? ইভিএমে ভোট পুনর্গণনার সুযোগ নেই। ভোট নিয়ে ইসি যে তথ্য দেবে, সেটাই মেনে নিতে হবে।

‘বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ’ আওয়ামী লীগের নেতাদের এমন অপবাদের মধ্যেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি সুসংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে দলটি কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে ভিন্ন ভিন্ন প্লাটফর্মে থেকে রাজপথে অভিন্ন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার কারণে ৭টি দলের সমন্বয়ে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আত্মপ্রকাশ করে। বিএনপির সঙ্গী ২০ দলীয় জোটের শরীকরাও কেউ বিএনপির সঙ্গে কেউ বিএনপির বাইরে থেকেও আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপিও তৃর্ণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে নানা কর্মসূচি পালন করছে। গত ২২ আগস্ট থেকে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি ও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিএনপি মাঠে কর্মসূচি পালন করছে। এসব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের এসব কর্মসূচিতে অর্ধশত এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ হামলা করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি, গাইবান্দার গোবিন্দগঞ্জ, নোয়াখালীর সেনবাগ, ফেনীর ছাগলনাইয়া-ফুলগাজী, মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর, ময়মনসিংহের ফুলপুর, ত্রিশাল, বরিশালের মেহিন্দিগঞ্জে, খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি, খুলনার দৌলতপুর, টাঙ্গাইলে ঘাটাইল, সফীপুর, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া, নেত্রকোনার কেন্দুয়া, চট্টগ্রামে সন্দ্বীপ ও বাশখালী, ঝালকাঠি, যশোর, ঝিনাইদাহের শৈলকুপা, নরসিংদীর রায়পুরা, রাজশাহীর কাশিডাঙ্গাসহ প্রায় ৫০ টির অধিক জায়গায় হামলা হয়েছে। হামলা করা হয়েছে যশোরে দলের স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের বাড়িতে, জেলার সাধারণ সম্পাদক সাবেরুল ইসলাম সাবু, মিজানুর রহমান, ফেনীতে শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির বাড়িতে হামলা, টাঙ্গাইলের সফীপুরে আহমেদ আজম খানের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার সচিত্র প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এতে দেখা যায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি আয়োজিত কর্মসূচিগুলোতে আক্রমন করেছে। কোথাও কোথাও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও আন্দোলনকারীদের বেদম প্রহার করেছে। কোথাও দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন পর্যন্ত ৫০টির অধিক স্থানে হামলা হয়েছে, আহত হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক ও গ্রেফতার হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে প্রায় ২০টার মতো জায়গায়। বিএনপির কয়েকজন নেতার জানিয়েছেন, তারা ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছেন; এবং এক সময় রাজপথ দখলে নেবেন।

এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বসে নেই। বিএনপিকে মাঠ ছেড়ে দিতে নারাজ। সূত্র জানায়, বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন মোকাবিলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ। সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে মাঠে থাকবে দলটি। একই সঙ্গে যেসব ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা অভিমান করে দল থেকে দূরে সরে আছেন, তাদেরও চাঙ্গা করতে তৃণমূল পর্যায়ের কমিটিগুলো সক্রিয় করা নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড। বিএনপির যেকোনো সহিংস আন্দোলন মোকাবিলায় গঠন করা হচ্ছে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শীর্ষ পর্যায় থেকে। এমনকি নেতাকর্মীদের নিয়ে থানা, ওয়ার্ড, ইউনিট ও পাড়া-মহল্লায় আলাদা আলাদা টিম গঠনের কথাও ভাবছে ক্ষমতাসীনরা। যাতে বিএনপি আন্দোলনের নামে কারো জানমালের ক্ষতি করলে তাৎক্ষণিকভাবে জবাব দিতে পারে। বিএনপিকে মাঠে মোকাবিলার ঘোষণা গত জুলাই মাসে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজপথ কাউকে ইজারা দেয়নি। আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন বিএনপির বিদায়ের ঘণ্টা বাঁজছে। খেলা হবে; খেলা হবে, রাজনীতির মাঠে খেলা হবে। নির্বাচনের মাঠে খেলা হবে। আসুন, খেলায় আসুন, নির্বাচন আর রাজনীতির মাঠে খেলায় আসুন। আগুন নিয়ে খেলবেন না, আমরা প্রতিহত করব।

এদিকে গতকালও নারায়ণগঞ্জে বিশাল সমাবেশ করেছেন শামীম ওসমান। মাঠে বিএনপিকে মোকাবিলা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঠে নামার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। কয়েকদিন আগে দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি দলের প্রস্তুতি কেমন জানতে চেয়েছেন এবং আগামীতে আন্দোলনের নামে ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবিলার প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে বের হয়েই প্রকাশ্যে দলবল নিয়ে রাজপথে বড় ধরনের মহড়া দিয়েছেন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট। গত শুক্রবার কয়েক হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে তিনি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যান। তার গাড়ির সামনে ছিল মোটরসাইকেলের বহর। অনেক কর্মী-সমর্থক ছিলেন পিকআপে। ছুটির দিনেও তার এই মহড়ায় ধানমন্ডি এলাকায় তীব্র জানজটের সৃষ্টি হয়।

গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মসূচিতে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক বলেছেন, ক্যাসিনো, মাদক ব্যবসাসহ জঘন্য অপরাধে জড়িত অপরাধীদের নির্বাচন উপলক্ষে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। যাতে ঢাকায় তারা গুন্ডামি, মাস্তানি করেন। জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে জনগণকে ভয় দেখিয়ে দমনপীড়ন করে রাখতে চায়।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

‘রাজপথ যার দখলে নির্বাচনী ফলাফল তার নিয়ন্ত্রণে’

Update Time : ০২:০৮:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২২

‘রাজপথ যার দখলে নির্বাচনী ফলাফল তার নিয়ন্ত্রণে’ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ এই প্রবাদের বিশ্বাস থেকেই ছক আঁকছে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এখনো ১৬ থেকে ১৭ মাস বাকি। অথচ এখন থেকে রাজপথ নিজেদের দখলে রাখতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মাঠের বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত বিএনপি। দুই বৃহৎ দলকে ঘিরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মতো করে অগ্রসর হচ্ছে। বিএনপি ডান-বাম এবং মধ্যপস্থি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অভিন্ন দাবিতে সমান্তরাল কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মাঠ নিজেদের দখলে রাখার কৌশল গ্রহণ করেছে।

বিএনপি গণভবন ঘেরাও করতে আসলে প্রধানমন্ত্রী চায়ের দাওয়াত দেবেন এবং আন্দোলনকারীদের বাঁধা দেয়া হবে না ঘোষণা দিয়েছেন। আন্দোলনকারীদের যাতে বাধা দেয়া না হয় সে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। এমনকি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রধান মিশেল ব্যাসেলেট ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মাঠের আন্দোলনে অধিক বলপ্রয়োগ না করার পরামর্শ দিয়ে গেছেন। কিন্তু গত কয়েকদিন জেলা পর্যায়ে বিএনপির কর্মসুচির ৫০টি স্পটে সরকার সমর্থিত ছাত্রলীগ, যুবলীগ হামলা করেছে। গণমাধ্যমে সেই ভয়াবহ সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। শুধু তাই নয় গণতান্ত্রিক মঞ্চ থেকে অভিযোগ করা হয় রাজপথের আন্দোলন ঠেকানোর লক্ষ্যে ক্যাসিনো সম্রাট হিসেবে পরিচিত ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে জামিন দেয়া হয়েছে। জামিন পেয়েই হাসপাতাল থেকে বের হয়েই সম্রাট রাজনৈতিক শোডাইন করেছেন।

গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে গণতন্ত্র মঞ্চের বিক্ষোভ সমাবেশ ও পদযাত্রা কর্মসূচিতে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, ‘নানা জায়গা বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশে এ সরকারের গুন্ডা বাহিনী ছাত্রলীগ, যুবলীগ নানাভাবে হামলা করছে এবং একই সঙ্গে রাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনীও হামলা চালাচ্ছে। হামলা করে আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।

এর আগে গত ১৩ আগষ্ট বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগকে রাজপথের ভয় দেখান? রাজপথের ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। নৈরাজ্যের পথ ছেড়ে দিয়ে নির্বাচনের পথে হাঁটুন, নির্বাচনকে মোকাবিলা করেন। আগস্ট মাস যেতে দেন, তারপর টের পাবেন কত ধানে কত চাল। জাহাঙ্গীর কবির নানকের এই বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগ অনুসারি বুদ্ধিজীবীরা টিভির বিভিন্ন টকশোগুলোতে জানান, শোকের মাস আগষ্টে আওয়ামী লীগ মাঠের কোনো কর্মসূচি দেয় না। আগষ্ট মাস পার হলেই আওয়ামী লীগ মাঠে নামবে সে ইঙ্গিত এই বক্তব্যের মাধ্যমে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে মতভেদের কারণে নির্বাচন নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি। ইতিহাসের পাতা উল্টালে দেখা যায়, ১৩২৪ সালে বাংলা অভিযান শেষ করে দিল্লি অভিমুখে রওনা দিয়েছিলেন তৎকালের ভারতের অধিপতি, দিল্লি ও গৌড়-বাংলার সুলতান গিয়াস উদ্দিন তুঘলক। এ সময় তিনি নির্দেশনা জারি করেন, সেখানে (দিল্লি) পৌঁছে যেন নিজামউদ্দিন আউলিয়াকে আর না দেখেন। সুলতান গিয়াস উদ্দিনের অভিপ্রায় শুনে মুচকি হেসে সুফি সাধক নিজামউদ্দিন আওলিয়া বলেছিলেন, ‘হনুজ, দিল্লি দূর অস্ত’ (দিল্লি এখনো দূরে)। পথেই সুলতান গিয়াস উদ্দিন তুঘলকের মৃত্যু ঘটে।

সুফি দরবেশের ওই উক্তি ‘হনুজ, দিল্লি দূর অস্ত’ এর মতোই বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এখনো বহুদূর। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু নির্বাচন নিয়েই শুরু হয়ে গেছে বিতর্ক। হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ফেব্রুয়ারি মাসে দায়িত্ব নিয়েই রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করে মতামত গ্রহণ করেন। এতে শতকরা ৯০ ভাগই ইভিএমে ভোট না করার পরামর্শ দেন। অথচ এরই মধ্যেই ঘোষণা দেয়া হয়েছে ১৫০ আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। এ নিয়ে নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর আগে বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। এই সিইসির নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও বেশির ভাগ দল প্রত্যাখ্যান করেছে। শুধু তাই নয় হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন যে আগের বিতর্কিত কে এম নুরুল হুদা ও কাজী রকিবউদ্দীন কমিশনের পথ ধরে হাঁটতে শুরু করেছে তা পরিষ্কার। অবশ্য বিএনপি এরই মধ্যেই ঘোষণা দিয়েছে তারা নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া নির্বাচনে যাবেন না এবং নির্বাচন হতে দেবেন না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, এ দেশে কোনো দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না নিলে সে নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। আর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংবিধানের বিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সরকার সংবিধানের বাইরে এক চুলও নড়বে না। ফলে দেশের দুই বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কার্যক নির্বাচন ইস্যুতে বিপরীতমুখী অবস্থান। দুই দলের সমঝোতা ছাড়া নির্বাচনের আয়োজন কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ প্রভাবশালী শক্তিগুলো সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চাচ্ছে।

হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন ইসি ইভিএমের ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের ঘোষণা দেয়ার পর সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বলেছে, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) একটি ‘নিকৃষ্ট যন্ত্র’। এই যন্ত্র মানুষকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। ড. বদিউল আলম মজুমদার প্রশ্ন তুলে বলেন, যে যন্ত্র মানুষকে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে, সেই যন্ত্র ব্যবহারের যৌক্তিকতা কী? ইভিএমে ভোট পুনর্গণনার সুযোগ নেই। ভোট নিয়ে ইসি যে তথ্য দেবে, সেটাই মেনে নিতে হবে।

‘বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ’ আওয়ামী লীগের নেতাদের এমন অপবাদের মধ্যেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি সুসংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে দলটি কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে ভিন্ন ভিন্ন প্লাটফর্মে থেকে রাজপথে অভিন্ন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যার কারণে ৭টি দলের সমন্বয়ে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ আত্মপ্রকাশ করে। বিএনপির সঙ্গী ২০ দলীয় জোটের শরীকরাও কেউ বিএনপির সঙ্গে কেউ বিএনপির বাইরে থেকেও আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিএনপিও তৃর্ণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে নানা কর্মসূচি পালন করছে। গত ২২ আগস্ট থেকে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি ও বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিএনপি মাঠে কর্মসূচি পালন করছে। এসব জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের এসব কর্মসূচিতে অর্ধশত এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ হামলা করেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি, গাইবান্দার গোবিন্দগঞ্জ, নোয়াখালীর সেনবাগ, ফেনীর ছাগলনাইয়া-ফুলগাজী, মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর, ময়মনসিংহের ফুলপুর, ত্রিশাল, বরিশালের মেহিন্দিগঞ্জে, খাগড়াছড়ির লক্ষীছড়ি, খুলনার দৌলতপুর, টাঙ্গাইলে ঘাটাইল, সফীপুর, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া, নেত্রকোনার কেন্দুয়া, চট্টগ্রামে সন্দ্বীপ ও বাশখালী, ঝালকাঠি, যশোর, ঝিনাইদাহের শৈলকুপা, নরসিংদীর রায়পুরা, রাজশাহীর কাশিডাঙ্গাসহ প্রায় ৫০ টির অধিক জায়গায় হামলা হয়েছে। হামলা করা হয়েছে যশোরে দলের স্থায়ী কমিটির প্রয়াত সদস্য তরিকুল ইসলামের বাড়িতে, জেলার সাধারণ সম্পাদক সাবেরুল ইসলাম সাবু, মিজানুর রহমান, ফেনীতে শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির বাড়িতে হামলা, টাঙ্গাইলের সফীপুরে আহমেদ আজম খানের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার সচিত্র প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এতে দেখা যায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপি আয়োজিত কর্মসূচিগুলোতে আক্রমন করেছে। কোথাও কোথাও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও আন্দোলনকারীদের বেদম প্রহার করেছে। কোথাও দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। হামলার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এখন পর্যন্ত ৫০টির অধিক স্থানে হামলা হয়েছে, আহত হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক ও গ্রেফতার হয়েছে প্রায় দুই শতাধিক। ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে প্রায় ২০টার মতো জায়গায়। বিএনপির কয়েকজন নেতার জানিয়েছেন, তারা ধীরে ধীরে অগ্রসর হচ্ছেন; এবং এক সময় রাজপথ দখলে নেবেন।

এদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বসে নেই। বিএনপিকে মাঠ ছেড়ে দিতে নারাজ। সূত্র জানায়, বিএনপির সরকার পতনের আন্দোলন মোকাবিলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ। সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরে মাঠে থাকবে দলটি। একই সঙ্গে যেসব ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা অভিমান করে দল থেকে দূরে সরে আছেন, তাদেরও চাঙ্গা করতে তৃণমূল পর্যায়ের কমিটিগুলো সক্রিয় করা নির্দেশ দিয়েছে হাইকমান্ড। বিএনপির যেকোনো সহিংস আন্দোলন মোকাবিলায় গঠন করা হচ্ছে কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরও প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শীর্ষ পর্যায় থেকে। এমনকি নেতাকর্মীদের নিয়ে থানা, ওয়ার্ড, ইউনিট ও পাড়া-মহল্লায় আলাদা আলাদা টিম গঠনের কথাও ভাবছে ক্ষমতাসীনরা। যাতে বিএনপি আন্দোলনের নামে কারো জানমালের ক্ষতি করলে তাৎক্ষণিকভাবে জবাব দিতে পারে। বিএনপিকে মাঠে মোকাবিলার ঘোষণা গত জুলাই মাসে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজপথ কাউকে ইজারা দেয়নি। আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেছেন, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন বিএনপির বিদায়ের ঘণ্টা বাঁজছে। খেলা হবে; খেলা হবে, রাজনীতির মাঠে খেলা হবে। নির্বাচনের মাঠে খেলা হবে। আসুন, খেলায় আসুন, নির্বাচন আর রাজনীতির মাঠে খেলায় আসুন। আগুন নিয়ে খেলবেন না, আমরা প্রতিহত করব।

এদিকে গতকালও নারায়ণগঞ্জে বিশাল সমাবেশ করেছেন শামীম ওসমান। মাঠে বিএনপিকে মোকাবিলা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়াও বিভিন্ন জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঠে নামার প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। কয়েকদিন আগে দলের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি দলের প্রস্তুতি কেমন জানতে চেয়েছেন এবং আগামীতে আন্দোলনের নামে ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবিলার প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

এদিকে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে বের হয়েই প্রকাশ্যে দলবল নিয়ে রাজপথে বড় ধরনের মহড়া দিয়েছেন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাট। গত শুক্রবার কয়েক হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে তিনি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যান। তার গাড়ির সামনে ছিল মোটরসাইকেলের বহর। অনেক কর্মী-সমর্থক ছিলেন পিকআপে। ছুটির দিনেও তার এই মহড়ায় ধানমন্ডি এলাকায় তীব্র জানজটের সৃষ্টি হয়।

গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মসূচিতে গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক বলেছেন, ক্যাসিনো, মাদক ব্যবসাসহ জঘন্য অপরাধে জড়িত অপরাধীদের নির্বাচন উপলক্ষে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। যাতে ঢাকায় তারা গুন্ডামি, মাস্তানি করেন। জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে জনগণকে ভয় দেখিয়ে দমনপীড়ন করে রাখতে চায়।