০৭:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যৌন সম্পর্কে অতিষ্ঠ হয়ে ডায়নাকে খুন করেন লাদেন

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ অগাস্ট ২০২২
  • 18

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগ এলাকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক তৃতীয় লিঙ্গের মাকসুদুর রহমান ডায়না (৪৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, শারীরিক সম্পর্কে অতিষ্ঠ হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন শোয়েব আক্তার লাদেন নামের এক যুবক। ডায়নার বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতে লাদেন।

বুধবার (৩১ আগস্ট) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার জিয়াউল আহসান তালুকদার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

জিয়াউল আহসান বলেন, “গত ১৬ আগস্ট মাকসুদুর রহমান খুন হন। হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১০ দিন পর ২৭ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগের একতলা বাড়ির ভেতরে কক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।”

মাকসুদুর সমকামী ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “শোয়েব কয়েক বছর ধরে মাকসুদুরের বাসায় কাজ করত। যখনই প্রয়োজন হতো, তখনই শোয়েবকে ডাকতেন মাকসুদুর। এভাবেই তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাকসুদুর ওই বাসায় একাই বসবাস করতেন। তার পরিবারের অন্য সদস্যরা দেশের বাইরে থাকেন।”

জিয়াউল আহসান বলেন, “হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে শোয়েব বিয়ে করে। বিয়ের পরও শোয়েবকে বাসায় ডেকে সমকামিতায় বাধ্য করতেন মাকসুদুর। বিয়ের বিষয়েও আপত্তি জানিয়েছিলেন। টাকাপয়সা দিয়ে শোয়েবকে ম্যানেজ করতেন। ১৬ আগস্ট বাসার টেবিলে থাকা হাতুড়ি দিয়ে মাকসুদুরের মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায় শোয়েব। পরে সেখানেই মাকসুদুরের মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘ওই বাসায় প্রতিবেশী কারও যাতায়াত ছিল না। ফলে বিষয়টি কেউ টের পায়নি। ঘটনার ১০ দিন পর লাশ উদ্ধার করা হয়।’

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাকছুদুর রহমান ওরফে ডায়না আমেরিকা প্রবাসী। ২ বছর আগে তিনি দেশে এসেছেন। গোলাপবাগে তার নিজস্ব একতলা বাড়িতে একা থাকতেন। তাকে টাকার জন্য লাদেন নামের এক লোক প্রায় সময় ভয়ভীতি দেখাত। ১৬ আগস্ট লাদেনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়।

মাকছুদুর রহমানের ফুপাত ভাই জামাল হোসেন জানান, শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় গোলাপবাগ এলাকার লোকজন ফোনে জানায় ৭/৮ দিন ধরে মাকছুদুর রহমানকে দেখা যায়নি। মাকছুদুর রহমানের বাসা থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। আমরা এ খবর পেয়ে তার বাসায় এসে দেখি ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। পরে যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশকে জানাই। পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

এর আগে, সোমবার (২৯ আগস্ট) শেরপুরের নালিতাবাড়ী থেকে শোয়েবকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

যৌন সম্পর্কে অতিষ্ঠ হয়ে ডায়নাকে খুন করেন লাদেন

Update Time : ০৬:৫৬:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ অগাস্ট ২০২২

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগ এলাকায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক তৃতীয় লিঙ্গের মাকসুদুর রহমান ডায়না (৪৮) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, শারীরিক সম্পর্কে অতিষ্ঠ হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন শোয়েব আক্তার লাদেন নামের এক যুবক। ডায়নার বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতে লাদেন।

বুধবার (৩১ আগস্ট) ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার জিয়াউল আহসান তালুকদার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

জিয়াউল আহসান বলেন, “গত ১৬ আগস্ট মাকসুদুর রহমান খুন হন। হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১০ দিন পর ২৭ আগস্ট যাত্রাবাড়ীর গোলাপবাগের একতলা বাড়ির ভেতরে কক্ষ থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।”

মাকসুদুর সমকামী ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “শোয়েব কয়েক বছর ধরে মাকসুদুরের বাসায় কাজ করত। যখনই প্রয়োজন হতো, তখনই শোয়েবকে ডাকতেন মাকসুদুর। এভাবেই তাদের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাকসুদুর ওই বাসায় একাই বসবাস করতেন। তার পরিবারের অন্য সদস্যরা দেশের বাইরে থাকেন।”

জিয়াউল আহসান বলেন, “হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে শোয়েব বিয়ে করে। বিয়ের পরও শোয়েবকে বাসায় ডেকে সমকামিতায় বাধ্য করতেন মাকসুদুর। বিয়ের বিষয়েও আপত্তি জানিয়েছিলেন। টাকাপয়সা দিয়ে শোয়েবকে ম্যানেজ করতেন। ১৬ আগস্ট বাসার টেবিলে থাকা হাতুড়ি দিয়ে মাকসুদুরের মাথায় আঘাত করে পালিয়ে যায় শোয়েব। পরে সেখানেই মাকসুদুরের মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘ওই বাসায় প্রতিবেশী কারও যাতায়াত ছিল না। ফলে বিষয়টি কেউ টের পায়নি। ঘটনার ১০ দিন পর লাশ উদ্ধার করা হয়।’

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মাকছুদুর রহমান ওরফে ডায়না আমেরিকা প্রবাসী। ২ বছর আগে তিনি দেশে এসেছেন। গোলাপবাগে তার নিজস্ব একতলা বাড়িতে একা থাকতেন। তাকে টাকার জন্য লাদেন নামের এক লোক প্রায় সময় ভয়ভীতি দেখাত। ১৬ আগস্ট লাদেনের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করা হয়।

মাকছুদুর রহমানের ফুপাত ভাই জামাল হোসেন জানান, শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় গোলাপবাগ এলাকার লোকজন ফোনে জানায় ৭/৮ দিন ধরে মাকছুদুর রহমানকে দেখা যায়নি। মাকছুদুর রহমানের বাসা থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। আমরা এ খবর পেয়ে তার বাসায় এসে দেখি ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। পরে যাত্রাবাড়ি থানা পুলিশকে জানাই। পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

এর আগে, সোমবার (২৯ আগস্ট) শেরপুরের নালিতাবাড়ী থেকে শোয়েবকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে।