আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপনের জন্য সরকারি কর্মসূচি নির্ধারণকল্পে আজ ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোঃ ফরিদুল হক খান।
সভায় যথাযোগ্য মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য এবং উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল আজহা
উদ্যাপনের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন এবং সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জাতীয় ঈদগাহ, হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ, ঢাকায় ঈদের দিন সকাল ৮ ঘটিকায় ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আবহাওয়া প্রতিকূল বা অন্য কোনো অনিবার্য কারণে এ জামাত অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে বাণী প্রদান করবেন। এ উপলক্ষ্যে সরকারি/বেসরকারি ভবন এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় পতাকা ও ‘ঈদ মোবারক’ লিখিত ব্যনার ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যান্ড ও লাইট পোস্টে প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এছাড়া পবিত্র ঈদুল আজহা দিবাগত রাত্রিতে নির্দিষ্ট সরকারি ভবনসমূহ ও সামরিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে আলোকসজ্জা করা হবে। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সারা দেশে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ও বেসরকারি সংস্থাসমূহের প্রধানগণ জাতীয় কর্মসূচি প্রণয়ণপূর্বক পবিত্র পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপন করবে। এছাড়াও বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি গণমাধ্যমসমূহ যথাযোগ্য গুরুত্ব সহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার ও সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হবে। এছাড়াও পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপন উপলক্ষ্যে দেশের সকল হাসপাতালও কারাগার, সরকারি শিশু সদন, বৃদ্ধ নিবাস ও মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের ব্যবস্থা করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনসমূহে যথাযথভাবে পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপন করবে। এ উপলক্ষ্যে সারাদেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রক্ষার্থে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে রাষ্ট্রীয় নীতির সাথে সংগতিশীল ডকুমেন্টারি ফিল্ম ও চলচিত্র প্রদর্শন করা হবে। ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরির ক্ষেত্রে অন্যান্য মুসলিম দেশের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি, রীতি ও রেওয়াজকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন আঙ্গিকে নতুন ধারার অনুষ্ঠানমালা তৈরির অগ্রাধিকার দেয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়। ঈদের দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনাটিকিটে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সকল শিশুপার্কে প্রবেশ এবং বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে। ঈদের দিন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনাটিকিটে ঢাকা জাদুঘর, আহসান মঞ্জিল, লালবাগ কেল্লা ইত্যাদি দর্শনীয় স্থান প্রবেশ এবং তা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে। বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে শিশুদের ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। কুরবানি পরবর্তী কুরবানিকৃত পশুর বর্জ্য পদার্থ অপসারণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়, কুরবানিকৃত পশুর রক্ত ও বর্জ্য পদার্থ দ্বারা যাতে পরিবেশ দুর্গন্ধময় না হয় সে বিষয়ে সকল প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পবিত্র ঈদুল আজহার পূর্ববর্তী জুমার খুৎবায় এ বিষয়ে মুসুল্লিদের সচেতন করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা ও বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে। সভায় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আবদুল আউয়াল হাওলাদার উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ সশরীরে ও ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।