০৩:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ৩০ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মাল্টা চা‌ষে সাবল‌ম্বীর ভ‌বিষ্যৎ দেখ‌ছেন চাষীরা

সাতক্ষীরার মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের উপযোগী। আর তাই দিনদিন বানিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন জেলার চাষিরা। দাম ভালো পাওয়ায় এ ফলের বাগন করে সাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরছে চাষিদের সংসারে।

জেলার তালা উপজেলার বাউখোলা গ্রামের মোহাম্মদ কাবিল শেখ, সুজনসাহা গ্রামের মোহাম্মদ খোরশেদ, ঘোনা গ্রামের গাজী ফারুক হোসেন বলেন, সাতক্ষীরায় মাল্টা চাষ শুরুরদিকে বাজার সৃষ্টি নিয়ে চাষিদের মধ্যে সংশয় ছিল। কিন্তু স্থানীয় বাজারে উৎপাদিত মাল্টার চাহিদা ও দাম পাওয়ায় চাষিদের মধ্যে এ ফলটি চাষাবাদ নিয়ে আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে। দেশব্যপী ফলটির চাহিদা থাকায় সাতক্ষীরার চাষিরা ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের পাইকারদের কাছে মাল্টা বিক্রি করছেন।

বাউখোলা গ্রামের মাল্টা চাষি কাবিল শেখ  বলেন, ‘আমার এলাকায় অনেক মাল্টা চাষি আছেন। প্রথমে বাউকুল, আপেলকুল, নারিকেলকুল চাষে ব্যাপক সফলতা পান তারা। পরে কুল চাষে সফলতা না পেয়ে ৪ বছর আগে আমার মতো সবাই মাল্টা চাষ করতে শুরু করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ৬ শতাধিক মাল্টার গাছ আছে। এর মধ্যে ৪০০ গাছে একমণ করে মাল্টা ধরেছে। বাকি ২০০টি গাছের প্রতিটি থেকে ৮ মাসে ২৫-৩০ কেজি করে মাল্টা পাওয়া যাবে। আগামী বছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ করার ইচ্ছা রয়েছে আমার।’

এই বাগানি বলেন, ‘ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার চলছে মাল্টা ও মাল্টার চারা বিক্রি করে। এতে আমি বেশ লাভবান হচ্ছি। অনান্য ফসলের তুলনায় মাল্টা চাষে খরচ কম ও লাভ বেশি। সব চেয়ে বেশি মাল্টা চাষ হয়েছে তালা, কলারোয়া ও সদর উপজেলায়।‘

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন বলেন, ‘সাতক্ষীরা জেলায় এবছর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ১১০ হেক্টর জমিতে বারি-১ জাতের মাল্টার আবাদ হয়েছে। আগামীতে জেলায় মাল্টা বাগানের পরিধি আরো বাড়বে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে মাল্টা গাছ অনেক দিন বাঁচে এবং ফলও পাওয়া যায় বেশি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণত চৈত্র-বৈশাখে ফুল আসতে শুরু করে। জেলার চাষিদের মাল্টা চাষ সম্পর্কিত সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা।’

মাল্টা চাষিরা জানান, দেশে বাণির্জ্যকভাবে মাল্টা চাষ করা গেলে একদিকে যেমন এই ফলটির আমদানি কমবে, তেমনি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও ফলপি রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

মাল্টা চা‌ষে সাবল‌ম্বীর ভ‌বিষ্যৎ দেখ‌ছেন চাষীরা

Update Time : ১২:৪৯:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ অক্টোবর ২০২২

সাতক্ষীরার মাটি ও আবহাওয়া মাল্টা চাষের উপযোগী। আর তাই দিনদিন বানিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষের দিকে ঝুঁকছেন জেলার চাষিরা। দাম ভালো পাওয়ায় এ ফলের বাগন করে সাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরছে চাষিদের সংসারে।

জেলার তালা উপজেলার বাউখোলা গ্রামের মোহাম্মদ কাবিল শেখ, সুজনসাহা গ্রামের মোহাম্মদ খোরশেদ, ঘোনা গ্রামের গাজী ফারুক হোসেন বলেন, সাতক্ষীরায় মাল্টা চাষ শুরুরদিকে বাজার সৃষ্টি নিয়ে চাষিদের মধ্যে সংশয় ছিল। কিন্তু স্থানীয় বাজারে উৎপাদিত মাল্টার চাহিদা ও দাম পাওয়ায় চাষিদের মধ্যে এ ফলটি চাষাবাদ নিয়ে আগ্রহ দিনদিন বাড়ছে। দেশব্যপী ফলটির চাহিদা থাকায় সাতক্ষীরার চাষিরা ৮০-৯০ টাকা কেজি দরে ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরের পাইকারদের কাছে মাল্টা বিক্রি করছেন।

বাউখোলা গ্রামের মাল্টা চাষি কাবিল শেখ  বলেন, ‘আমার এলাকায় অনেক মাল্টা চাষি আছেন। প্রথমে বাউকুল, আপেলকুল, নারিকেলকুল চাষে ব্যাপক সফলতা পান তারা। পরে কুল চাষে সফলতা না পেয়ে ৪ বছর আগে আমার মতো সবাই মাল্টা চাষ করতে শুরু করেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ৬ শতাধিক মাল্টার গাছ আছে। এর মধ্যে ৪০০ গাছে একমণ করে মাল্টা ধরেছে। বাকি ২০০টি গাছের প্রতিটি থেকে ৮ মাসে ২৫-৩০ কেজি করে মাল্টা পাওয়া যাবে। আগামী বছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ করার ইচ্ছা রয়েছে আমার।’

এই বাগানি বলেন, ‘ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার চলছে মাল্টা ও মাল্টার চারা বিক্রি করে। এতে আমি বেশ লাভবান হচ্ছি। অনান্য ফসলের তুলনায় মাল্টা চাষে খরচ কম ও লাভ বেশি। সব চেয়ে বেশি মাল্টা চাষ হয়েছে তালা, কলারোয়া ও সদর উপজেলায়।‘

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন বলেন, ‘সাতক্ষীরা জেলায় এবছর বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ১১০ হেক্টর জমিতে বারি-১ জাতের মাল্টার আবাদ হয়েছে। আগামীতে জেলায় মাল্টা বাগানের পরিধি আরো বাড়বে। সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে মাল্টা গাছ অনেক দিন বাঁচে এবং ফলও পাওয়া যায় বেশি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণত চৈত্র-বৈশাখে ফুল আসতে শুরু করে। জেলার চাষিদের মাল্টা চাষ সম্পর্কিত সব ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা।’

মাল্টা চাষিরা জানান, দেশে বাণির্জ্যকভাবে মাল্টা চাষ করা গেলে একদিকে যেমন এই ফলটির আমদানি কমবে, তেমনি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও ফলপি রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হবে।