লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে চার প্রার্থীর মধ্যে দুইজন ভোট বর্জন করেছেন। তাদের মধ্যে জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ রাকিব হোসেন রোববার দুপুর দেড়টার দিকে ও জাকের পার্টির শামছুল করিম খোকন বেলা ২টার দিকে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবে এসে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ রাকিব হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ৯০ ভাগ কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্ট বের করে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন। এ ছাড়া তারা জাল ভোট দিচ্ছে। সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রগুলো ভোটার শূন্য, অথচ ভিতরে গিয়ে দেখা যায় ভোট পড়েছে। তাহলে এসব ভোট কারা দিচ্ছে। এই প্রার্থী আরও বলেন, এই নির্বাচনের নামে আমাদের সঙ্গে প্রতারণা হচ্ছে। তাই এ ভোট বর্জন করলাম।
অন্যদিকে জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী মো. শামছুল করিম খোকন বলেন, শুরু থেকে প্রশাসন আমাদের সুষ্ঠু ভোটের আশ্বাস দিয়েছিলো। কিন্তু এখন প্রশাসন নীরব। তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের লোকজন জাল ভোট দিচ্ছে।
তাদের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রে বল প্রয়োগ করছে। তাই ভোটের পরিবেশ না থাকায় আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে ভোট বর্জন করলাম।
জাল ভোট ও অনিয়মের বিষয়ে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লা আঞ্চলিক কর্মকর্তা ফরহাদ হোসেন বলেন, একজন প্রার্থী আমাদের কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছে। সে বিষয়টি আমরা দেখছি। আমরা অনেক কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছি। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপনির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা। তিনি বলেন, আমাকে পরাজিত করতে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভোটার তালিকায় গড়মিল করাসহ আমার ভোটারদেরকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আশুগঞ্জের কয়েকটি কেন্দ্রে প্রকাশ্যে নৌকার প্রার্থীর সমর্থকরা ভোট ছাপিয়ে ফেলছে। অন্তত ৭টি কেন্দ্রে সুক্ষ্ম কারচুপি চলেছে। জিয়াউল হক মৃধা অভিযোগ করে বলেন, সরাইলের প্রায় সবকটি ইউনিয়নের ভোট কেন্দ্রগুলোতে সরবরাহকৃত ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণ। সুক্ষ্ম কারচুপির অংশ হিসেবে ইচ্ছাকৃতভাবেই এটি করা হয়েছে। এ ছাড়া আশুগঞ্জের শরীফপুর, আন্দিদিল, যাত্রাপুর, বড়তল্লা, টেকেরপাড়, চরচারতলা ও নাওঘাট কেন্দ্রে নৌকার জাল ভোট দেয়া হয়েছে। শরীফপুর কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বাতিলের দাবি করছি বলে জানান।
অভিযোগ সম্পর্কে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসককে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। যেহেতু নির্বাচনী ব্যস্ততা সময় কম, তাই লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়নি।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, ভোটার তালিকা ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন কমিশন থেকে যে তালিকা আমাদের দেয়া হয়েছে, সেই তালিকাই আমরা ভোটের সরঞ্জামের সঙ্গে কেন্দ্রগুলোতে পাঠিয়েছি। কয়েকটি কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।