০৪:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্রি‌টেনের নি‌ষিদ্ধ তা‌লিকায় থাক‌ছে ভারত।

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:৫৩:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১
  • 17

পর্যটনের বাজার টানতে এ বার সীমান্ত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ব্রিটেন। ১৯ জুলাই লকডাউন সম্পূর্ণ উঠে যাওয়ার পরে ব্রিটেনে বেড়াতে আসতে পারবেন ভ্রমণপ্রেমীরা। যদিও নির্দিষ্ট কিছু দেশের বাসিন্দা হলে তবেই। ভারত থাকছে ‘নিষিদ্ধ তালিকা’তেই।

গত মাসের ২১ তারিখ লকডাউন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ব্রিটেন। কিন্তু ডেল্টা স্ট্রেনের দাপটে তা নিষিদ্ধ হয়। ডেল্টা সংক্রমণ এখনও কমেনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও লকডাউন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তই নিতে চায় সরকার। তাদের বক্তব্য, ৬৮ শতাংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বাকিদেরও দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর পরেও সংক্রমণ হতে পারে, কিন্তু বাড়াবাড়ি হবে না। এই সাহসটুকু নিয়ে ভাইরাসকে সঙ্গে করেই বাঁচতে হবে। খোদ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ কথা জানিয়েছেন।

দেশবাসীকে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে চায় ব্রিটিশ সরকার। যেমন, মাস্ক পরা আর আবশ্যিক থাকবে না। কিন্তু প্রয়োজন মতো পরতে হবে। সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে নিজেকেই। অফিস, দোকান, কাফে, রেস্তরাঁ খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু বেশি বড় জমায়েত করা যাবে না। পর্যটনের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সবার জন্য নয়।

ব্রিটেনে প্রবেশের অনুমতি পাওয়া দেশের তালিকায় রয়েছে স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি, পর্তুগাল, জার্মানি, আমেরিকার মতো দেশগুলি। জানানো হয়েছে, ক্রমশ পরিস্থিতি অনুযায়ী এই তালিকা বাড়ানো হবে। আবার কোনও দেশে সংক্রমণ বাড়লে তাকে এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। সম্পূর্ণ টিকাকরণ হয়ে থাকলে ব্রিটেনে ঢোকার পরে কোয়রান্টিনও থাকতে হবে না। তবে এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার পরে অন্তত ১৪ দিন অতিবাহিত হতে হবে। ১৮ বছরের নীচে হলেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। কিন্তু দেশে ঢোকার সময়ে আরটি-পিসিআর টেস্ট করাতে হবে সকলকে।

ভারতকে লাল-তালিকাতে রাখা হয়েছে। ভারত থেকে ব্রিটেনে সফর করা যাবে না। একমাত্র ব্রিটিশ নাগরিক হলে তবেই ফেরা যাবে। সে ক্ষেত্রে ১০ দিন নির্দিষ্ট হোটেলে নিজের অর্থে কোয়রান্টিন থাকতে হবে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে। নিষিদ্ধ তালিকায় ভারতের সঙ্গে রয়েছে ৫০টিরও বেশি দেশ। এ সব দেশ থেকে একমাত্র ব্রিটিশ নাগরিকরাই ফিরতে পারবেন। তাঁদের কোয়রান্টিনের নিয়ম মানতে হবে।

একটি নিরাপদ তালিকাও (গ্রিন লিস্ট) তৈরি করেছে ব্রিটেন। এতে ৩০টিরও কম অঞ্চলের নাম রয়েছে। ব্রিটেন থেকে এই সব জায়গায় বেড়াতে গেলে ফেরার পরে নিভৃতবাসে থাকতে হবে না। তবে কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে এঁদেরও।

পরিবহণ মন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস আজ ‘হাউস অব কমন্স’-এ পর্যটনে ছাড়পত্রের বিষয়টি জানিয়েছেন। তাঁর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। তবে বরিস জনসন সরকারের এই ‘স্বাধীনতা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্তে খুশি নন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা ভয় পাচ্ছেন, দেশবাসী আদৌ এই স্বাধীনতার জন্য তৈরি কি? একশোর বেশি বিজ্ঞানী আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘ল্যানসেট’-এ লিখেছেন, বরিস জনসন ‘বিপজ্জনক কাজ’ করছেন। সংক্রমণকে মানিয়ে নিয়ে তার সঙ্গে বাস করতে বলার যে পরামর্শ তিনি দিয়েছেন, তা ‘অনৈতিক ও আইনবিরুদ্ধ’।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

ব্রি‌টেনের নি‌ষিদ্ধ তা‌লিকায় থাক‌ছে ভারত।

Update Time : ০৩:৫৩:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১

পর্যটনের বাজার টানতে এ বার সীমান্ত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ব্রিটেন। ১৯ জুলাই লকডাউন সম্পূর্ণ উঠে যাওয়ার পরে ব্রিটেনে বেড়াতে আসতে পারবেন ভ্রমণপ্রেমীরা। যদিও নির্দিষ্ট কিছু দেশের বাসিন্দা হলে তবেই। ভারত থাকছে ‘নিষিদ্ধ তালিকা’তেই।

গত মাসের ২১ তারিখ লকডাউন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ব্রিটেন। কিন্তু ডেল্টা স্ট্রেনের দাপটে তা নিষিদ্ধ হয়। ডেল্টা সংক্রমণ এখনও কমেনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও লকডাউন তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তই নিতে চায় সরকার। তাদের বক্তব্য, ৬৮ শতাংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। বাকিদেরও দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর পরেও সংক্রমণ হতে পারে, কিন্তু বাড়াবাড়ি হবে না। এই সাহসটুকু নিয়ে ভাইরাসকে সঙ্গে করেই বাঁচতে হবে। খোদ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ কথা জানিয়েছেন।

দেশবাসীকে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে চায় ব্রিটিশ সরকার। যেমন, মাস্ক পরা আর আবশ্যিক থাকবে না। কিন্তু প্রয়োজন মতো পরতে হবে। সে সিদ্ধান্ত নিতে হবে নিজেকেই। অফিস, দোকান, কাফে, রেস্তরাঁ খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু বেশি বড় জমায়েত করা যাবে না। পর্যটনের ক্ষেত্রেও বিধিনিষেধ তুলে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সবার জন্য নয়।

ব্রিটেনে প্রবেশের অনুমতি পাওয়া দেশের তালিকায় রয়েছে স্পেন, ফ্রান্স, ইটালি, পর্তুগাল, জার্মানি, আমেরিকার মতো দেশগুলি। জানানো হয়েছে, ক্রমশ পরিস্থিতি অনুযায়ী এই তালিকা বাড়ানো হবে। আবার কোনও দেশে সংক্রমণ বাড়লে তাকে এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। সম্পূর্ণ টিকাকরণ হয়ে থাকলে ব্রিটেনে ঢোকার পরে কোয়রান্টিনও থাকতে হবে না। তবে এ ক্ষেত্রে দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়ার পরে অন্তত ১৪ দিন অতিবাহিত হতে হবে। ১৮ বছরের নীচে হলেও একই নিয়ম প্রযোজ্য। কিন্তু দেশে ঢোকার সময়ে আরটি-পিসিআর টেস্ট করাতে হবে সকলকে।

ভারতকে লাল-তালিকাতে রাখা হয়েছে। ভারত থেকে ব্রিটেনে সফর করা যাবে না। একমাত্র ব্রিটিশ নাগরিক হলে তবেই ফেরা যাবে। সে ক্ষেত্রে ১০ দিন নির্দিষ্ট হোটেলে নিজের অর্থে কোয়রান্টিন থাকতে হবে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে। নিষিদ্ধ তালিকায় ভারতের সঙ্গে রয়েছে ৫০টিরও বেশি দেশ। এ সব দেশ থেকে একমাত্র ব্রিটিশ নাগরিকরাই ফিরতে পারবেন। তাঁদের কোয়রান্টিনের নিয়ম মানতে হবে।

একটি নিরাপদ তালিকাও (গ্রিন লিস্ট) তৈরি করেছে ব্রিটেন। এতে ৩০টিরও কম অঞ্চলের নাম রয়েছে। ব্রিটেন থেকে এই সব জায়গায় বেড়াতে গেলে ফেরার পরে নিভৃতবাসে থাকতে হবে না। তবে কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে এঁদেরও।

পরিবহণ মন্ত্রী গ্রান্ট শ্যাপস আজ ‘হাউস অব কমন্স’-এ পর্যটনে ছাড়পত্রের বিষয়টি জানিয়েছেন। তাঁর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। তবে বরিস জনসন সরকারের এই ‘স্বাধীনতা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্তে খুশি নন বিশেষজ্ঞেরা। তাঁরা ভয় পাচ্ছেন, দেশবাসী আদৌ এই স্বাধীনতার জন্য তৈরি কি? একশোর বেশি বিজ্ঞানী আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘ল্যানসেট’-এ লিখেছেন, বরিস জনসন ‘বিপজ্জনক কাজ’ করছেন। সংক্রমণকে মানিয়ে নিয়ে তার সঙ্গে বাস করতে বলার যে পরামর্শ তিনি দিয়েছেন, তা ‘অনৈতিক ও আইনবিরুদ্ধ’।