০৫:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিচারের অপেক্ষায় থমকে গেছে সরকারের ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযান।

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:২১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • 20

বিচারের অপেক্ষায় থমকে গেছে সরকারের ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযান। অভিযান কেবল ভণ্ডুল নয়, পারলে সরকারকেই ঘায়েল করে বসে। মুখ থুবড়ে পড়ে আছে ৫৫ মামলার বিচার। র‌্যাব-সিআইডি অধিকাংশ মামলার তদন্ত শেষ করলেও ধীরগতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এই সুযোগে জামিনে বেরিয়ে পড়ছে আসামিরা। স্বাক্ষীর অভাবের দোহাই দিচ্ছে রাষ্ট্রপক্ষ। দুদক বলছে, সময় লাগা স্বাভাবিক। আলোচিত আসামিরা ছাড় পেলে অপরাধীদের সাহস বাড়বে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিচারের অপেক্ষায় থমকে গেছে সরকারের ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযান।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের ৩ বছর পার হলেও ঢাকার চারটি ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসার হোতা হিসেবে নাম আসা ব্যক্তিরা ধারাছোঁয়ার বাইরে। এসব ক্লাবের নিয়মিত চাঁদাখোররাও অধরা।

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পরের বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে ক্যাসিনোবিরোধী অ্যাকশন। ওই শুদ্ধি অভিযানের সময় মন্ত্রী-এমপি-নেতাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হুঙ্কার ছিল- জড়িত কাউকে ছাড়া হবে না। খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধরা হবে নেপথ্য হোতাদেরও।

ক্যাসিনো, ঘুষ, চাঁদাবাজি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এমন কি কৃষক লীগ নেতা ও ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধিসহ ১৪ প্রভাবশালীকে পাকড়াও করা হয় শুদ্ধি অভিযানে। মামলার প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া পিলে চমকানো তথ্য রূপকথাকেও হার মানায়। তখন ক্ষমতাসীন দলেও শুদ্ধি অভিযানের আওয়াজ ওঠে। পদ খোয়াতে হয় কয়েকজনকে।

এক পর্যায়ে রহস্যজনকভাবে থমকে যায় অভিযান। জট পাকে বিচার কার্যক্রমে। র‌্যাব, সিআইডি, গোয়েন্দা পুলিশ ও দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, ক্যাসিনোর মাধ্যমে হাতানো অর্থ পাচার হয়েছে বিভিন্ন দেশে। সাফল্য আসেনি অর্থের পরিমাণ জানা ও ফেরত আনার চেষ্টায়।

সবদিকের ঢিলেঢালা পরিস্থিতিতে একে একে জামিনে বেরিয়ে আসছে ক্যাসিনোর হোতারা। কেউ আবার জামিনে বেরিয়ে করেছে শোডাউনও। এদের বিরুদ্ধে রয়েছে-অবৈধ অস্ত্র, মাদক, অর্থ পাচার, অবৈধপত্রে অর্থ উপারজনসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলা। এ নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা।বিচারের অপেক্ষায় থমকে গেছে সরকারের ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযান।

চিহ্নিতদের এভাবে ছাড়া পাওয়া ও আস্ফালন তদন্তে প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের।

তবে, আইনজীবী ও চাঞ্চল্যকর শুদ্ধি অভিযান চালানো সংস্থার সদস্যরা বলছেন, এটি আদালতের বিষয়। এদিকে, ক্যাসিনো অভিযানের পর পর্যায়ক্রমে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কয়েক ডজন কর্মকর্তাকে ডেকে পাঠানো হয় দুদক কার্যালয়ে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অর্থের বিনিময়ে টেন্ডার পাইয়ে দেয়ার বিষয়ে।

জিজ্ঞাসাবাদের পরে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। তখন ২৪ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২৫টি মামলা দায়ের করে দুদক। জব্দ করে ৫৮২ কোটি টাকা।

ঢাকঢোল পিটিয়ে চালানো শুদ্ধি অভিযানের কোনো কোনো স্বাক্ষীর ঠিকানা ভুল হওয়ায় খোঁজ মিলছে না। এ কারণে বিচার বিলম্বের অজুহাত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর। এদিকে, ক্যাসিনোকাণ্ডে আদালতে দাখিল করা তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিটে রয়েছে এমপিসহ সরকারের প্রভাবশালী অনেকের নামও।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

বিচারের অপেক্ষায় থমকে গেছে সরকারের ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযান।

Update Time : ১০:২১:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২

বিচারের অপেক্ষায় থমকে গেছে সরকারের ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযান। অভিযান কেবল ভণ্ডুল নয়, পারলে সরকারকেই ঘায়েল করে বসে। মুখ থুবড়ে পড়ে আছে ৫৫ মামলার বিচার। র‌্যাব-সিআইডি অধিকাংশ মামলার তদন্ত শেষ করলেও ধীরগতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এই সুযোগে জামিনে বেরিয়ে পড়ছে আসামিরা। স্বাক্ষীর অভাবের দোহাই দিচ্ছে রাষ্ট্রপক্ষ। দুদক বলছে, সময় লাগা স্বাভাবিক। আলোচিত আসামিরা ছাড় পেলে অপরাধীদের সাহস বাড়বে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বিচারের অপেক্ষায় থমকে গেছে সরকারের ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযান।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের ৩ বছর পার হলেও ঢাকার চারটি ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসার হোতা হিসেবে নাম আসা ব্যক্তিরা ধারাছোঁয়ার বাইরে। এসব ক্লাবের নিয়মিত চাঁদাখোররাও অধরা।

২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে পরের বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে ক্যাসিনোবিরোধী অ্যাকশন। ওই শুদ্ধি অভিযানের সময় মন্ত্রী-এমপি-নেতাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হুঙ্কার ছিল- জড়িত কাউকে ছাড়া হবে না। খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ধরা হবে নেপথ্য হোতাদেরও।

ক্যাসিনো, ঘুষ, চাঁদাবাজি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এমন কি কৃষক লীগ নেতা ও ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধিসহ ১৪ প্রভাবশালীকে পাকড়াও করা হয় শুদ্ধি অভিযানে। মামলার প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া পিলে চমকানো তথ্য রূপকথাকেও হার মানায়। তখন ক্ষমতাসীন দলেও শুদ্ধি অভিযানের আওয়াজ ওঠে। পদ খোয়াতে হয় কয়েকজনকে।

এক পর্যায়ে রহস্যজনকভাবে থমকে যায় অভিযান। জট পাকে বিচার কার্যক্রমে। র‌্যাব, সিআইডি, গোয়েন্দা পুলিশ ও দুদকের তদন্তে দেখা গেছে, ক্যাসিনোর মাধ্যমে হাতানো অর্থ পাচার হয়েছে বিভিন্ন দেশে। সাফল্য আসেনি অর্থের পরিমাণ জানা ও ফেরত আনার চেষ্টায়।

সবদিকের ঢিলেঢালা পরিস্থিতিতে একে একে জামিনে বেরিয়ে আসছে ক্যাসিনোর হোতারা। কেউ আবার জামিনে বেরিয়ে করেছে শোডাউনও। এদের বিরুদ্ধে রয়েছে-অবৈধ অস্ত্র, মাদক, অর্থ পাচার, অবৈধপত্রে অর্থ উপারজনসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলা। এ নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা।বিচারের অপেক্ষায় থমকে গেছে সরকারের ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযান।

চিহ্নিতদের এভাবে ছাড়া পাওয়া ও আস্ফালন তদন্তে প্রভাব ফেলবে বলে মন্তব্য বিশেষজ্ঞদের।

তবে, আইনজীবী ও চাঞ্চল্যকর শুদ্ধি অভিযান চালানো সংস্থার সদস্যরা বলছেন, এটি আদালতের বিষয়। এদিকে, ক্যাসিনো অভিযানের পর পর্যায়ক্রমে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কয়েক ডজন কর্মকর্তাকে ডেকে পাঠানো হয় দুদক কার্যালয়ে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অর্থের বিনিময়ে টেন্ডার পাইয়ে দেয়ার বিষয়ে।

জিজ্ঞাসাবাদের পরে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। তখন ২৪ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২৫টি মামলা দায়ের করে দুদক। জব্দ করে ৫৮২ কোটি টাকা।

ঢাকঢোল পিটিয়ে চালানো শুদ্ধি অভিযানের কোনো কোনো স্বাক্ষীর ঠিকানা ভুল হওয়ায় খোঁজ মিলছে না। এ কারণে বিচার বিলম্বের অজুহাত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর। এদিকে, ক্যাসিনোকাণ্ডে আদালতে দাখিল করা তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিটে রয়েছে এমপিসহ সরকারের প্রভাবশালী অনেকের নামও।