১১:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ যে কোনো গরিব দেশ না তা দেখানোর জন্য ১ হাজার কোটি টাকা জলে

  • Reporter Name
  • Update Time : ১০:২৮:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০২২
  • 23

একটি আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপোতে অংশগ্রহণ নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। নেদারল্যান্ডসের আলমেয়ার শহরে চলমান ওই এক্সপোতে মন্ত্রণালয়ের প্রায় শতাধিক কর্মকর্তা পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করছেন। ডলার সাশ্রয় ও রিজার্ভ ধরে রাখতে সরকার বর্তমানে হার্ডলাইনে। ঠিক এমন সংকটময় মুহূর্তে এক্সপোর পেছনে অর্থ ব্যয় কতোটুকু যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যা গড়িয়েছে উচ্চ আদালত পর্যন্ত। যদিও এই মেলায় অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয় একবছর আগে। গত ১৩ই এপ্রিল ফ্লোরিয়েড এক্সপো-২০২২ শীর্ষক এই মেলা শুরু হয়। যা শেষ হবে ৯ই অক্টোবর। বাংলাদেশের পক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয়ের  একক কোনো আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার মেলায় এটাই প্রথম অংশগ্রহণ। এই আয়োজনে অংশ নিতে ইতিমধ্যে কৃষিমন্ত্রী, সচিবসহ মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ দপ্তরসমূহের প্রায় শতাধিক কর্মকর্তা নেদারল্যান্ডস ঘুরে এসেছেন।অপেক্ষায় রয়েছেন আরও অনেকে। সূত্র জানিয়েছে, অতি উৎসাহী কিছু কর্মকর্তার আগ্রহে এই ব্যয়বহুল এক্সপোতে এবার বাংলাদেশ অংশ নিয়েছে। যদিও মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা বিরোধিতা করেছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই এক্সপোতে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ দপ্তরসমূহের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতি দশদিনের জন্য দায়িত্ব পালন শেষে আবার দেশে ফিরে আসছেন তারা। দায়িত্বপালনকালে প্যাভিলিয়নে অধিকাংশ সময় তারা থাকছেন না।

বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীদের মধ্যে যারা তথ্যের জন্য আসছেন তারা খালি হাতেই ফিরে যাচ্ছেন। বাংলাদেশি পণ্য এবং প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কোনো বিশেষ প্রকাশনাও সেখানে নেই। বিশ্বব্যাপী এক্সপো আয়োজন হয়ে থাকে মূলত বিজনেস নেটওয়ার্কিংয়ের জন্য। কিন্তু বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে এমন কিছু নেই যা দেখে দর্শনার্থীরা এদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে। প্রাইভেট সেক্টরের যেসব প্রতিষ্ঠানকে এক্সপোতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেগুলোর অধিকাংশই অপরিচিত। এবারের এক্সপো’র মূল উদ্দেশ্য পাটের ব্যবহার সম্প্রসারণ। কিন্তু বাংলাদেশের পাটপণ্য নিয়ে কাজ করে এমন প্রসিদ্ধ কোনো প্রতিষ্ঠান এক্সপোতে খুঁজে পাননি দর্শনার্থীরা। এক্সপোতে অংশ নিয়েছেন এমন কয়েকজন কর্মকর্তা ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, প্যাভিলিয়নে হাতেগোনা ৪/৫টি প্রতিষ্ঠানের পণ্য দেখা গেছে। অথচ ২৮শে এপ্রিল কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এতে অংশ নিচ্ছে। অন্যান্য দেশের প্যাভিলিয়নে কৃষি গবেষক ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন। সেখানে বাংলাদেশের কোনো গবেষক বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। যেসব কর্মকর্তাকে প্যাভিলিয়নে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে তাদের মধ্যে অনেকেরই কৃষির বিষয়ে কারিগরি জ্ঞান নেই। মন্ত্রণালয়ে তারা প্রশাসনিক কাজে নিয়োজিত।

দশদিন পরপর কর্মকর্তা বদল হওয়ায় যেমন সরকারের খরচ বাড়ছে তেমনি এক্সপোতে তথ্য প্রদানে বিভ্রাট হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, এক্সপোতে পাঠানোর জন্য প্রায় ২০০ জনের একটি তালিকা প্রাথমিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারাংশ আকারে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেই তালিকা ছোট করা হয়। এই তালিকায় কারা কোন যোগ্যতায় থাকছেন তা নির্ধারণের কোনো মাপকাঠি করা হয়নি। ফলে এক্সপোতে একজন মালীকে পাঠানোর পর তার ওয়ার্ক পারমিট না থাকায় বিপত্তি ঘটে। যেসব বেসরকারি পর্যায়ের উদ্যোক্তা এক্সপোতে অংশ নিয়েছেন তাদের বেশির ভাগই প্যাভিলিয়নে শুধুমাত্র হাজিরা দিয়ে বাইরে ঘোরাঘুরি করেছেন। এক্সপোর মূল যে কাজ বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে  যোগাযোগ স্থাপন সেই কাজটিই তারা করেননি।  অপর একজন কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, প্যাভিলিয়নে পণ্য বিক্রির কোনো ব্যবস্থা নেই। এক্সপোতে যেসব পণ্য প্রদর্শন করা হয়েছে সেগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের। বাংলাদেশি পণ্যের কোনো লিফলেট, ফ্লায়ার বা ব্রোশিউর রাখা হয়নি। যেসব বুকলেট রাখা হয়েছে সেগুলো অতি নিম্নমানের। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রায় শতাধিক কর্মকর্তার নামে এক্সপো উপলক্ষে সরকারি আদেশ (জিও) জারি করা হয়েছে। জিও অনুসারে, কোনো কোনো কর্মকর্তা এক্সপোতে গিয়েছেন শিক্ষা সফরের কথা বলে।

আবার ভিন্ন প্রকল্পের অধীনে সফরের কথা বলে অনেক কর্মকর্তা জিও ইস্যু করিয়েছেন। জিওতে নেদারল্যান্ডস সফরের কথা থাকলেও তারা এক্সপোতে অংশ নেয়ার বিষয়টি গোপন রেখেছেন। নিজ খরচে এক্সপোতে যাওয়ার শর্তে কোনো কোনো কর্মকর্তার স্বামী বা স্ত্রীর নামে জিও ইস্যু করা হয়েছে। ১২ই মে’র পর সরকারি খরচে বিদেশ সফরের পর অবশ্য কোনো কর্মকর্তার স্বামী কিংবা স্ত্রীর নাম জিওতে দেখা যায়নি। এক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোক্তা সেজে অনেকেই এক্সপোতে সফর করেছেন। মন্ত্রীর ব্যক্তিগত একজন কর্মকর্তাও এই প্রক্রিয়ায় এক্সপোতে ঘুরতে গেছেন। এক্সপো আয়োজনের দায়িত্বে থাকা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলমের কাছে অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে ফোন রেখে দেন। অধিদপ্তরের ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন’ প্রকল্পের পরিচালক এবং এক্সপো আয়োজক কমিটির সদস্য মেহেদী মাসুদ বলেন, এত বড় আয়োজনকে যারা খাটো করে দেখছে তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নয়ন চায় না।

এই এক্সপো থেকে একদিনে বা এক বছরে কোনো ফল আসবে না। আগামী ২০ বছর নাগাদ এর ফল পাওয়া যাবে। এখানে সাময়িক ব্যবসায়িক কোনো উদ্দেশ্য নেই। বাংলাদেশ যে কোনো গরিব দেশ না তা দেখানোর জন্য এই আসরে আমরা অংশ নিয়েছি। প্রতিদিন প্রায় ৭০০ থেকে ১২০০ দর্শনার্থী বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন দেখতে আসে দাবি করে মেহেদী মাসুদ বলেন, আমরা শুধু ফল, সবজি উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ না, বরং নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করছি তা বিশ্বকে জানাতে চাই। দর্শনার্থীরা প্যাভিলিয়নে রাখা মন্তব্য বইয়ে বাংলাদেশের প্রশংসা করছে। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে এধরনের আয়োজনে অংশ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। কর্মকর্তাদের বাছাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বচ্ছ বাছাই প্রক্রিয়ার কারণে নিজ প্রকল্পের ৩২ কর্মকর্তার জিও বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

বাংলাদেশ যে কোনো গরিব দেশ না তা দেখানোর জন্য ১ হাজার কোটি টাকা জলে

Update Time : ১০:২৮:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০২২

একটি আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার এক্সপোতে অংশগ্রহণ নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। নেদারল্যান্ডসের আলমেয়ার শহরে চলমান ওই এক্সপোতে মন্ত্রণালয়ের প্রায় শতাধিক কর্মকর্তা পর্যায়ক্রমে দায়িত্ব পালন করছেন। ডলার সাশ্রয় ও রিজার্ভ ধরে রাখতে সরকার বর্তমানে হার্ডলাইনে। ঠিক এমন সংকটময় মুহূর্তে এক্সপোর পেছনে অর্থ ব্যয় কতোটুকু যৌক্তিক তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যা গড়িয়েছে উচ্চ আদালত পর্যন্ত। যদিও এই মেলায় অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয় একবছর আগে। গত ১৩ই এপ্রিল ফ্লোরিয়েড এক্সপো-২০২২ শীর্ষক এই মেলা শুরু হয়। যা শেষ হবে ৯ই অক্টোবর। বাংলাদেশের পক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয়ের  একক কোনো আন্তর্জাতিক হর্টিকালচার মেলায় এটাই প্রথম অংশগ্রহণ। এই আয়োজনে অংশ নিতে ইতিমধ্যে কৃষিমন্ত্রী, সচিবসহ মন্ত্রণালয় ও এর অধীনস্থ দপ্তরসমূহের প্রায় শতাধিক কর্মকর্তা নেদারল্যান্ডস ঘুরে এসেছেন।অপেক্ষায় রয়েছেন আরও অনেকে। সূত্র জানিয়েছে, অতি উৎসাহী কিছু কর্মকর্তার আগ্রহে এই ব্যয়বহুল এক্সপোতে এবার বাংলাদেশ অংশ নিয়েছে। যদিও মন্ত্রণালয়ের কিছু কর্মকর্তা বিরোধিতা করেছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই এক্সপোতে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং এর অধীনস্থ দপ্তরসমূহের কর্মকর্তারা দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতি দশদিনের জন্য দায়িত্ব পালন শেষে আবার দেশে ফিরে আসছেন তারা। দায়িত্বপালনকালে প্যাভিলিয়নে অধিকাংশ সময় তারা থাকছেন না।

বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীদের মধ্যে যারা তথ্যের জন্য আসছেন তারা খালি হাতেই ফিরে যাচ্ছেন। বাংলাদেশি পণ্য এবং প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কোনো বিশেষ প্রকাশনাও সেখানে নেই। বিশ্বব্যাপী এক্সপো আয়োজন হয়ে থাকে মূলত বিজনেস নেটওয়ার্কিংয়ের জন্য। কিন্তু বাংলাদেশ প্যাভিলিয়নে এমন কিছু নেই যা দেখে দর্শনার্থীরা এদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে। প্রাইভেট সেক্টরের যেসব প্রতিষ্ঠানকে এক্সপোতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেগুলোর অধিকাংশই অপরিচিত। এবারের এক্সপো’র মূল উদ্দেশ্য পাটের ব্যবহার সম্প্রসারণ। কিন্তু বাংলাদেশের পাটপণ্য নিয়ে কাজ করে এমন প্রসিদ্ধ কোনো প্রতিষ্ঠান এক্সপোতে খুঁজে পাননি দর্শনার্থীরা। এক্সপোতে অংশ নিয়েছেন এমন কয়েকজন কর্মকর্তা ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, প্যাভিলিয়নে হাতেগোনা ৪/৫টি প্রতিষ্ঠানের পণ্য দেখা গেছে। অথচ ২৮শে এপ্রিল কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন প্রায় ২০টি প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন এতে অংশ নিচ্ছে। অন্যান্য দেশের প্যাভিলিয়নে কৃষি গবেষক ও কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন। সেখানে বাংলাদেশের কোনো গবেষক বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। যেসব কর্মকর্তাকে প্যাভিলিয়নে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে তাদের মধ্যে অনেকেরই কৃষির বিষয়ে কারিগরি জ্ঞান নেই। মন্ত্রণালয়ে তারা প্রশাসনিক কাজে নিয়োজিত।

দশদিন পরপর কর্মকর্তা বদল হওয়ায় যেমন সরকারের খরচ বাড়ছে তেমনি এক্সপোতে তথ্য প্রদানে বিভ্রাট হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, এক্সপোতে পাঠানোর জন্য প্রায় ২০০ জনের একটি তালিকা প্রাথমিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারাংশ আকারে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেই তালিকা ছোট করা হয়। এই তালিকায় কারা কোন যোগ্যতায় থাকছেন তা নির্ধারণের কোনো মাপকাঠি করা হয়নি। ফলে এক্সপোতে একজন মালীকে পাঠানোর পর তার ওয়ার্ক পারমিট না থাকায় বিপত্তি ঘটে। যেসব বেসরকারি পর্যায়ের উদ্যোক্তা এক্সপোতে অংশ নিয়েছেন তাদের বেশির ভাগই প্যাভিলিয়নে শুধুমাত্র হাজিরা দিয়ে বাইরে ঘোরাঘুরি করেছেন। এক্সপোর মূল যে কাজ বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে  যোগাযোগ স্থাপন সেই কাজটিই তারা করেননি।  অপর একজন কর্মকর্তা অভিযোগ করেছেন, প্যাভিলিয়নে পণ্য বিক্রির কোনো ব্যবস্থা নেই। এক্সপোতে যেসব পণ্য প্রদর্শন করা হয়েছে সেগুলো অত্যন্ত নিম্নমানের। বাংলাদেশি পণ্যের কোনো লিফলেট, ফ্লায়ার বা ব্রোশিউর রাখা হয়নি। যেসব বুকলেট রাখা হয়েছে সেগুলো অতি নিম্নমানের। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রায় শতাধিক কর্মকর্তার নামে এক্সপো উপলক্ষে সরকারি আদেশ (জিও) জারি করা হয়েছে। জিও অনুসারে, কোনো কোনো কর্মকর্তা এক্সপোতে গিয়েছেন শিক্ষা সফরের কথা বলে।

আবার ভিন্ন প্রকল্পের অধীনে সফরের কথা বলে অনেক কর্মকর্তা জিও ইস্যু করিয়েছেন। জিওতে নেদারল্যান্ডস সফরের কথা থাকলেও তারা এক্সপোতে অংশ নেয়ার বিষয়টি গোপন রেখেছেন। নিজ খরচে এক্সপোতে যাওয়ার শর্তে কোনো কোনো কর্মকর্তার স্বামী বা স্ত্রীর নামে জিও ইস্যু করা হয়েছে। ১২ই মে’র পর সরকারি খরচে বিদেশ সফরের পর অবশ্য কোনো কর্মকর্তার স্বামী কিংবা স্ত্রীর নাম জিওতে দেখা যায়নি। এক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোক্তা সেজে অনেকেই এক্সপোতে সফর করেছেন। মন্ত্রীর ব্যক্তিগত একজন কর্মকর্তাও এই প্রক্রিয়ায় এক্সপোতে ঘুরতে গেছেন। এক্সপো আয়োজনের দায়িত্বে থাকা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলমের কাছে অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ততার কথা বলে ফোন রেখে দেন। অধিদপ্তরের ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন’ প্রকল্পের পরিচালক এবং এক্সপো আয়োজক কমিটির সদস্য মেহেদী মাসুদ বলেন, এত বড় আয়োজনকে যারা খাটো করে দেখছে তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নয়ন চায় না।

এই এক্সপো থেকে একদিনে বা এক বছরে কোনো ফল আসবে না। আগামী ২০ বছর নাগাদ এর ফল পাওয়া যাবে। এখানে সাময়িক ব্যবসায়িক কোনো উদ্দেশ্য নেই। বাংলাদেশ যে কোনো গরিব দেশ না তা দেখানোর জন্য এই আসরে আমরা অংশ নিয়েছি। প্রতিদিন প্রায় ৭০০ থেকে ১২০০ দর্শনার্থী বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন দেখতে আসে দাবি করে মেহেদী মাসুদ বলেন, আমরা শুধু ফল, সবজি উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ না, বরং নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করছি তা বিশ্বকে জানাতে চাই। দর্শনার্থীরা প্যাভিলিয়নে রাখা মন্তব্য বইয়ে বাংলাদেশের প্রশংসা করছে। বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে এধরনের আয়োজনে অংশ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ। কর্মকর্তাদের বাছাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বচ্ছ বাছাই প্রক্রিয়ার কারণে নিজ প্রকল্পের ৩২ কর্মকর্তার জিও বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।