দেশের বিভিন্ন স্থানে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে দলের সাংগঠনিক কর্মকান্ডের চাইতে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোকেই অগ্রাধিকার দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
আজ রোববার (১৯ জুন) বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সিলেট-সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় এক যৌথসভার পর দলের জাতীয় ত্রাণ কমিটির প্রধান স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সাহেব আমাদেরকে নির্দেশনা দিয়েছেন যে, বন্যা পরিস্থিতির বিষয় আমরা যেন সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেই। তাই সাংগঠনিক কাজ-কর্মের চাইতে এখন আমাদের একমাত্র অগ্রাধিকার ভানবাসি মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের জন্য কাজ করা। এটা আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশ।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু জানান, সিলেট মহানগর, সুনামগঞ্জ পৌরসভা, ছাতকসহ বিভিন্ন এলাকায় আমাদের দলের নেতা-কর্মীরা রিলিফ অপারেশন শুরু করেছে। সিলেটে তারা এখন পর্যন্ত ১০ হাজার লোকের কাছে খাবার পৌঁছিয়ে দিয়েছে। বড় বড় নৌকা ভাড়া করে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে। সেখানে প্রায় আমাদের শ’ খানেক নৌকা কাজ করছে। ছাতকে বন্যাকবলিত এলাকায় আমাদের নেতা-কর্মীরা নিজেরা টাকা তুলে মানুষের মাঝে বিতরণ করেছে। এভাবে বিএনপি গণমানুষের দল হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এবারের বন্যা পরিস্থিতিকে আমরা তিনভাবে ভাগ করেছি। প্রথমত- এখন যারা পানিবন্দি মানুষজন আছেন তাদেরকে উদ্ধার করে তাদের কাছে খাবার পৌঁছিয়ে দেয়া। দ্বিতীয়ত-বন্যার পানি চলে গেলে মানুষজনের গৃহনির্মাণ, তাদের মাঝে খাবার ও ঔষধপত্র বিতরণ করা। তৃতীয়ত-কৃষি জমি তলিয়ে গেছে বন্যায়। পানি নেমে গেলে যাতে কৃষকরা চাষাবাদ করতে পারে, সেজন্য কৃষকের বীজতলা তৈরি করে তাদের সরবরাহ করা। এছাড়া ড্যাব ও জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন রোগ-বালাইয়ের চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ বিতরণ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করবে। আমরা চেষ্টা করব সকল বন্যার্তদের পাশে পৌঁছানোর।
সভায় দলের সব অঙ্গসংগঠনকে আলাদা আলাদাভাবে স্টিয়ারিং কমিটি করে প্রতিটি সংগঠনের ত্রাণ কার্যক্রম তদারিক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান টুকু।
বৈঠকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ, মহাসচিব ডা. আব্দুস সালাম, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।