প্রাসঙ্গিক করোনা শুরু হওয়ার মাস দুয়েক আগে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোন এক উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে কথা হচ্ছিলো। ভদ্রলোক খুব আফসোসের সাথেই বলছিলেন যে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফ্রীতে মানুষকে ঘড় উপহার দিচ্ছেন, অথচ এইসব ঘড় যারা পাবেন তাদের নির্নয় ব্যবস্থা যাদের হাতে, আমার উপজেলায় এমন বেশ কয়েকটা অভিযোগ পেয়েছি যে, যারা ঘরের যোগ্য তাদের কাছ থেকে শুধু ঘরের জন্য ২০ থেকে ৫০ হাজার, জমি সহ ঘর ৫০ থেকে ১ লাখ টাকা নিয়ে ঘর পাওয়া তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চেয়ারম্যান ভদ্রলোক আমাকে প্রশ্ন করলেন, এমন অবস্থায় ঐ গরীব মানুষটি কিভাবে মনে করবে প্রধানমন্ত্রী তাদের দুর্দশা পুরণে ঘর দিচ্ছেন? চেয়ারম্যান আরো বললো ফ্রী দেওয়া ভিজিএফ বা এমএলএস নামের তালিকায় যারা ঢুকছে তাদের কে অর্থ দিতে হয় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের। চেয়ারম্যানের প্রশ্ন উক্ত গরিব মানুষটি কেন মনে করবে যে তারা এইসব সরকার থেকে ফ্রীতে পাচ্ছেন?
চেয়ারম্যান সাহেব কে জিজ্ঞাস করলাম, আপনারা এইসব জেনেও কেন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না? উত্তরে চেয়ারম্যান সাহেব বললেন, আমি যে সৎ সেটা যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো তারা কেন বিশ্বাস করবে? আর আমার ক্ষমতাই কতটুকু? বললাম, যাই আছে পারেন তো নাকি? চেয়ারম্যান বললো সিষ্টেমে অসম্ভব কাজ এটা। ধরলে বলবে ষড়যন্ত্র, তখন আমার চেয়ার নিয়ে টানাটানি…
করোনার টিকা একদম ফ্রীতে দেওয়া শুরু হবে আগামী পরশুদিন থেকে। এর আগে গত দুইদিন আগে দক্ষিন চট্টগ্রামের এমপি সরকার দলীয় হুইপের বাড়ির পাশে টাকার বিনিময়ে ফ্রী করোনার টিকা বিক্রির একটা রিপোর্ট দেখলাম একটি উদ্দেশ্যপ্রোনদিত নিউজ পেপারে। ঘঠনার সত্যতা যদি অর্ধেকও হয়, তাহলে এটা একটা ভয়ংকর ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হবে। যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর করোনা কালীন বিভিন্ন প্রনোদনার টাকা বিতরনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কমিশন কেটে রাখার বিষয়টা এখন ওপেন সিক্রেট, যার সাথে জড়িত মাঠ পর্যায় থেকে উপজেলা প্রশাসনের সরকারী কর্তা ব্যক্তিরা। যারা অভিযোগ তুলবে সেই তারাও অনেকটা অযোগ্যতার ভিত্তিতেই নির্বাচিত হয়। প্রশ্ন হচ্ছে এমন চলমান পরিস্থিতিতে করোনার ফ্রী টিকা দেওয়ার গ্যাদারিং এ যে টাকার লেনদেন হবে না সেই বিষয়ে সরকারের নির্দিষ্ট বিভাগের প্রস্তুতি কতোটা রয়েছে ?
তাই বলছিলাম আর কি, করোনার টিকা বিতরনের সময় মাঠ পর্যায়ে টিকা বিতরন স্থল ও আশেপাশে সেনা সদস্যদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায় কি না বিষয়টা ভেবে দেখা উচিত। সুযোগের অভাবে সৎ থাকাদের দেশে এছাড়া অন্য উপায়ে গণ টিকাদান কর্মসুচি বিতর্কিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৮৫% এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নাই।