একদিনের ব্যবধানে যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও কমেছে। সোমবার (১৩ জুন) প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য ৯২ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ মার্কিন মুদ্রার বিপরীতে টাকার মান ৫০ পয়সা কমানো হয়েছে।
আগের দিন রোববার (১২ জুন) ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার মান ৫০ পয়সা কমায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে গতকাল আন্তঃব্যাংকে এক ডলার বিক্রি হয় ৯২ টাকায়। এর আগে গত ৮ জুন হঠাৎ আন্তর্জাতিক মুদ্রার দাম ৫০ পয়সা কমায় বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ডলারপ্রতি বিনিময় হার দাঁড়ায় ৯১ টাকা ৫০ পয়সা।এদিন ৯২ টাকা ৫০ পয়সা দরে ১০ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে গত ২ মাসে ডলারের দাম ৬ টাকার বেশি বৃদ্ধি পেল। এতে চলতি বছর ডলারের বিপরীতে ১১ বার মান হারাল টাকা।
২০২০ সালের জুলাই থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল। কিন্তু এরপরই ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমতে থাকে। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।তবে আমদানিকারকদের কাছ থেকে প্রতি ডলারের মূল্য ৯৫ টাকার বেশি নিচ্ছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো। কিন্তু ৯৩ থেকে ৯৪ টাকা দামে রেমিট্যান্স আনছে তারা।বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, সাধারণত, আমরা ডলারের দাম নির্ধারণ করছি না। আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে যে দামে লেনদেন হচ্ছে, এর মধ্যে একটি দর বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে। সে অনুযায়ী আজ প্রতি ডলারের দাম ৯২ টাকা ৫০ পয়সা বিবেচনা করা হয়েছে।
রেমিট্যান্স আনতে ডলারের মূল্যের পরিসীমা উঠিয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে মার্কিন মুদ্রার দাম নির্ধারণ করছে ব্যাংকগুলো। এতে নিয়মিত এর দর বাড়ছে।সর্বোপরি, আরেক দফা টাকার মান অবমূল্যায়নের কারণে আমদানি ব্যয় আরও বাড়বে। এক্ষেত্রে লাভবান হবেন রপ্তানিকারকেরা। মূলত তাদের সুবিধা দিতেই স্থানীয় পর্যায়ে মুদ্রার মান কমানো হয়।করোনা মহামারি ধাক্কা কাটিয়ে না উঠতেই দানা বাঁধে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ফলে পণ্যের দাম ও জাহাজভাড়া বেড়ে যায়। এতে ইতোমধ্যে আমদানি ব্যয় ৪৪ শতাংশ বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই রপ্তানি ও প্রবাসী আয় দিয়ে তা মেটানো যাচ্ছে না। তাতে ডলার সংকট সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে ডলারের মূল্য বাড়ছেই।