বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পদ্মা সেতু কারো পৈতৃক সম্পত্তি না। এটা রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টার উদ্যোগে করা।
তিনি দাবি করেন- পদ্মা সেতুর প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। শুধু একদিকে নয়; দুই দিকেই উদ্বোধন করেন মাওয়া এবং ওই পাড়ে। সেগুলোর নাম তারা উল্লেখ করে না, বলেও না। যমুনা সেতুর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার রাতে তার পৈতৃক বাসভবনে এসে রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন- যমুনা সেতু যখন তৈরি হয়, তখন একই অবস্থা করেছে আওয়ামী লীগ। যারা এই সেতু তৈরি করলেন তাদের বাদ দিয়ে একজনের নাম একজনের মূর্তি (শেখ মুজিবুর রহমান); সবকিছু তারাই। সেতুটির কারণে নদীর নামটি পরিবর্তন হয়ে গেল। অর্থাৎ এখানে যে ক্ষমতায় যায়, তারা সবকিছু দখল করে নিতে চায়।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, অহেতুক অযৌক্তিক কিছু কথা-বার্তা বলে আওয়ামী লীগ দেশকে, জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করছে। মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতে চেষ্টা করা হচ্ছে। সংকট তো পদ্মা সেতু নয়। সংকট আমার ভোটের অধিকার। সংকট তো আমার অধিকার, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা আর ডিজিটাল অ্যাক্ট। সংকট তো অন্যায়ভাবে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া। এবিষয়গুলো নিয়ে বিএনপি কথা বলছে; মানুষ একত্রিত করে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নির্বাচনের দল। যখন এদেশে নিরপেক্ষ, নির্দলীয় সরকার গঠন হবে; সেই নির্বাচন অবশ্যই হতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। তখন বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে। বিএনপি নির্বাচনে গেলে কিছুতেই থামানো যাবে না। দলটি যখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐক্য তৈরি করছে, এই দেখে আওয়ামী লীগের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, অগ্নিকাণ্ডে যে এতগুলো মানুষের প্রাণ গেল, এতোগুলো মানুষ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন এসবের জন্য সরকার দায়ী। আবারো প্রমাণ করে এই সরকার কতটা ব্যর্থ। বর্তমান সরকার উন্নয়নের কথা মুখে বললেও তারা আধুনিক পোর্ট তৈরিতে ব্যর্থ। মানুষের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। তাই আওয়ামী লীগকে আর ক্ষমতায় রাখা যায় না। বিতাড়িত করতে না পারলে দেশের গণতন্ত্র বিপন্ন হবে, এই দেশও বিপন্ন হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে কোনো দুর্ঘটনা মোকাবেলা করা এই সরকারের সক্ষমতা নেই। সবকিছুতেই ভঙ্গুর। অসুস্থ হয়ে গিয়ে দেখা যায় হাসপাতালে অক্সিজেন ব্যবস্থা নেই। বার্ন ইউনিট নেই। আবারো প্রমাণ করলো সীতাকুণ্ডের ঘটনায় আওয়ামী লীগ সরকার পুরোপুরি ব্যর্থ। তারা মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। চট্টগ্রামে পোর্টে সত্যিকার অর্থে আধুনিক কনটেইনার প্রয়োজন। সরকার তা তৈরি করতে ব্যর্থ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ফখরুলের ছোটভাই মির্জা ফয়সাল আমিন, জেলা বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, সংগ্রামী বাংলার সম্পাদক আব্দুল লতিফসহ বিএনপির বিভিন্নস্তরের নেতাকর্মীরা।