হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা ফাতেমা (রা.)-কে নিয়ে বানানো চলচ্চিত্র বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করায় সরকারি উপদেষ্টার পদ হারিয়েছেন ৪৪ বছর বয়সী ব্রিটিশ ইমাম কারী অসিম।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামবিদ্বেষ বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে সরকারের সঙ্গে কাজ করছিলেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি লিডসের মক্কা মসজিদের ইমামও।এদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই চলচ্চিত্র বন্ধের আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ায় অসিমের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ধরনের আন্দোলনকে সমর্থন করা বাকস্বাধীনতাকে অস্বীকার করার নামান্তর বলে দাবি করা হয়েছে। ইমাম অসিমকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বাধীন মতপ্রকাশের বিরোধিতা করে এমন এক প্রচারাভিযানে আপনার সাম্প্রতিক সমর্থন, সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকেই উৎসাহিত করেছে। এর অর্থ হলো সম্প্রদায়ের সম্প্রীতি প্রচারের জন্য সরকারের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে আপনি আর উপযুক্ত নন।
দেশটির হাউজিং ও কমিউনিটি বিভাগ থেকে তাকে এ চিঠি পাঠানো হয়। তবে কারী অসিম দাবি করেছেন, তিনি কোনো বিক্ষোভে অংশগ্রহণ কিংবা কোনো বিক্ষোভ আয়োজন করেননি। সরকার তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ লঙ্ঘনের যে অভিযোগ এনেছে তা ঠিক নয়। গত বুধবার বিক্ষোভের মুখে ‘লেডি অফ হ্যাভেন’ চলচ্চিত্রটি অনেক সিনেমা হলে প্রদর্শন বন্ধ হয়ে যায়। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কারি অসিম ফেসবুক পোস্টে বলেছেন, ‘চলচ্চিত্রটি নিয়ে সারা দেশের অনেক ভাই ও ইমামের সঙ্গে আমরা কাজ করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক ইমাম আন্দোলনকে সমর্থন করছেন এবং অনেকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান চাইছেন। সমস্যা সমাধানের উপায় পরিষ্কার- এর প্রদর্শন বন্ধ করতে হবে। অনেক স্থানেই আমরা সফল হয়েছি এবং ফলে কিছু সিনেমা হলে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শন বন্ধ করা হয়েছে।’ প্রতিবেদনে বলা হয়, ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মুসলিম এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের সিনেমা হলগুলোতে ‘লেডি অফ হেভেন’ প্রদর্শন বন্ধে করা এক পিটিশনে স্বাক্ষর করেছে।
উল্লেখ্য, ‘দ্য লেডি অফ হেভেন’ চলচ্চিত্রটি শিয়া বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা বিবি ফাতেমার (রা.) জীবনী নিয়ে নির্মিত। তবে সেখানে দেখানো অনেক দৃশ্যই অবমাননাকর এবং বাস্তবতার সঙ্গে তার কোনো মিল নেই। তাই সুন্নি মতাবলম্বীরা তো বটেই, শিয়া সম্প্রদায়ের বৃহদাংশই এর বিরোধিতা করেছে।