১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৩ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দেশে দেশে পালিত পবিত্র আশুরা

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৪:৩৭:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ অগাস্ট ২০২২
  • 25

কালো কাপড়ে ছেয়ে গেছে কারবালা প্রান্তর

আজ ১০ মহররম। পবিত্র আশুরা। কারবালার শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনাবহুল এ দিনটি মুসলমানদের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। দিবসটি পালনে প্রতিবছরের মতো এ বছরও রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল শুরু করেছে শিয়া মুসলমানরা।

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর ইমামবাড়া হোসেনী দালান থেকে সকাল ১০টায় এ তাজিয়া মিছিল শুরু হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এবারের তাজিয়া মিছিল আজিমপুর, নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, সায়েন্সল্যাব, জিগাতলা ও ধানমন্ডি ২ নম্বর গিয়ে শেষ হয়।

শিয়া মুসলমানরা খালি পায়ে কালো কাপড় পরে মিছিল করেছেন। ফোরাত নদীর তীরের কারবালার মর্মান্তিক ঘটনাকে স্মরণ করে হায় হোসেন, হায় হোসেন মাতম ও বুক চাপড়ে মিছিল করতে দেখা গেছে।মিছিলে ছিল ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইনের দুটি প্রতীকী ঘোড়া।

আশুরা উপলক্ষে রাজধানীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিলকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরা নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া সতর্কাবস্থানে রয়েছেন গোয়েন্দা সদস্যরা।

তবে হোসেনি দালান ছাড়াও মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বকশিবাজার, লালবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকেও তাজিয়া মিছিল বের হওয়ার কথা রয়েছে।

ইসলামি পরিভাষায়, মহররমের ১০ তারিখকে ‘আশুরা’ বলে। সৃষ্টির শুরু থেকে এ দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

হিজরি ৬১ সনের (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ) ১০ মহররম ইরাকের কুফা নগরের অদূরে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে সঙ্গী-সাথিসহ নির্মমভাবে শহীদ হন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রা.)। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইমাম হুসাইন (রা.)-এর আত্মত্যাগের এই ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। এদিন মুসলমানরা ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে দিবসটি পালন করছেন।

এদিকে, পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিল নির্বিঘ্ন করতে এবং নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

রোববার (৭ আগস্ট) ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত তাজিয়া মিছিলে পাইক দলভুক্ত ব্যক্তিবর্গ দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি নিয়ে অংশগ্রহণ করে, যা ক্ষেত্রবিশেষে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। যা ধর্মপ্রাণ মানুষ ও নগরবাসীর মনে আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টিসহ জননিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ। তাছাড়া মহররম মাসে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আঁতশবাজি ও পটকা ফোটানো হয়, যা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাজিয়া মিছিলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি বহন এবং আঁতশবাজি ও পটকা ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন ডিএমপি কমিশনার।

এই আদেশ তাজিয়া মিছিল শুরু হতে শেষ সময় পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

Tag :
About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

দেশে দেশে পালিত পবিত্র আশুরা

Update Time : ০৪:৩৭:০১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ অগাস্ট ২০২২

আজ ১০ মহররম। পবিত্র আশুরা। কারবালার শোকাবহ ও হৃদয়বিদারক ঘটনাবহুল এ দিনটি মুসলমানদের কাছে ধর্মীয়ভাবে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। দিবসটি পালনে প্রতিবছরের মতো এ বছরও রাজধানীতে তাজিয়া মিছিল শুরু করেছে শিয়া মুসলমানরা।

মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) রাজধানীর ইমামবাড়া হোসেনী দালান থেকে সকাল ১০টায় এ তাজিয়া মিছিল শুরু হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এবারের তাজিয়া মিছিল আজিমপুর, নীলক্ষেত, নিউমার্কেট, সায়েন্সল্যাব, জিগাতলা ও ধানমন্ডি ২ নম্বর গিয়ে শেষ হয়।

শিয়া মুসলমানরা খালি পায়ে কালো কাপড় পরে মিছিল করেছেন। ফোরাত নদীর তীরের কারবালার মর্মান্তিক ঘটনাকে স্মরণ করে হায় হোসেন, হায় হোসেন মাতম ও বুক চাপড়ে মিছিল করতে দেখা গেছে।মিছিলে ছিল ইমাম হাসান ও ইমাম হোসাইনের দুটি প্রতীকী ঘোড়া।

আশুরা উপলক্ষে রাজধানীতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও ঐতিহ্যবাহী তাজিয়া মিছিলকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব সদস্যরা নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া সতর্কাবস্থানে রয়েছেন গোয়েন্দা সদস্যরা।

তবে হোসেনি দালান ছাড়াও মোহাম্মদপুর, মিরপুর, বকশিবাজার, লালবাগসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকেও তাজিয়া মিছিল বের হওয়ার কথা রয়েছে।

ইসলামি পরিভাষায়, মহররমের ১০ তারিখকে ‘আশুরা’ বলে। সৃষ্টির শুরু থেকে এ দিনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।

হিজরি ৬১ সনের (৬৮০ খ্রিস্টাব্দ) ১০ মহররম ইরাকের কুফা নগরের অদূরে ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে ইয়াজিদ বাহিনীর হাতে সঙ্গী-সাথিসহ নির্মমভাবে শহীদ হন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (রা.)। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে ইমাম হুসাইন (রা.)-এর আত্মত্যাগের এই ঘটনা ইসলামের ইতিহাসে সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। এদিন মুসলমানরা ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে দিবসটি পালন করছেন।

এদিকে, পবিত্র আশুরা উপলক্ষে তাজিয়া মিছিল নির্বিঘ্ন করতে এবং নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

রোববার (৭ আগস্ট) ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। উক্ত তাজিয়া মিছিলে পাইক দলভুক্ত ব্যক্তিবর্গ দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি নিয়ে অংশগ্রহণ করে, যা ক্ষেত্রবিশেষে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। যা ধর্মপ্রাণ মানুষ ও নগরবাসীর মনে আতঙ্ক ও ভীতি সৃষ্টিসহ জননিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ। তাছাড়া মহররম মাসে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আঁতশবাজি ও পটকা ফোটানো হয়, যা ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তাজিয়া মিছিলে দা, ছোরা, কাঁচি, বর্শা, বল্লম, তরবারি, লাঠি ইত্যাদি বহন এবং আঁতশবাজি ও পটকা ফোটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন ডিএমপি কমিশনার।

এই আদেশ তাজিয়া মিছিল শুরু হতে শেষ সময় পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।