দীর্ঘ দুই বছর ডিটেনশন সেন্টারে থাকার পর ৪৪ জন বাংলাদেশিকে ফেরৎ পাঠাল মালটা পুলিশ

দীর্ঘ দুই বছর ডিটেনশন সেন্টারে থাকার পর অমানবিকভাবে এবং জেনেভা কনভেনশন না মেনে ৪৪ জনকে বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠিয়েছে মালটা সরকার । প্রবাসীদের কোন ধরনের আপিলের সুযোগও দেওয়া হয়নি । এ ঘটনায় মালটায় বাংলাদেশ কমিউনিটির মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন এবং ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে ।
গত ১৩ জানুয়ারী রাতের একটি ফ্লাইটে মালটা মিলিটারি পুলিশ কর্মকর্তারা হ্যান্ডকাফ পড়িয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে । ফেরৎ প্রবাসী বাংলাদেশিরা অভিযোগ করে বলেন,ডিটেনশন সেন্টারে থাকাকালীন সময়ে গ্রীস দূতাবাস তাদের কোনো সাহায্য- সহযোগিতা করেননি,বরং গ্রিস দূতাবাস এক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে তাদেরকে দেশে পাঠাতে দ্রুত সক্ষম হয় ।
এইসব প্রবাসী যোদ্ধারা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে লিবিয়া হয়ে নৌকা দিয়ে জীবনের চরম ঝুঁকি নিয়ে ইউরোপের দেশ মাল্টা পাড়ি জমান । মালটা ডিটেনশন সেন্টারে আট মাস থেকে দুই বছর পর্যন্ত অবস্থান করছেন,ফেরত ৪৪ ছাড়াও আরো দুইশত জন বাংলাদেশি ডিটেনশন সেন্টারে আছেন ।
মালটা ফেরত প্রবাসী মাদারীপুরের মোহাম্মদ ফিরোজ,অভিযোগ করে বলেন,আমাদের স্বাক্ষর নকল করে গ্রীস দূতাবাস ভুল তথ্য দিয়ে আমাদেরকে আউটপাস তৈরি করে । গ্রিস দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় মালটা পুলিশ ৪৪ জন প্রবাসী বাংলাদেশিদের আউট পাস তৈরি করেতে সক্ষম হয় । এতে আমাদের কোন ধরনের সম্মতি ছিল না ।
এব্যাপারে গ্রিস দূতাবাসের কাউন্সিলর মোঃ খালিদ (যিনি আউটপাস ইস্যু করেন ),প্রবাসীদের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন,তাদের সম্মতিতেই দেশে পাঠানো হয়েছে । তিনি আরও বলেন,ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে বাংলাদেশের চুক্তি মোতাবেক এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সকল নীতিমালা অনুসরণ করেই আউট পাস ইস্যু করা হয়েছে । ফেরত প্রবাসীরা মাল্টায় থাকার সকল আইনগত বৈধতা হারানোর পরেই এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে ।
ফেরৎ কয়েকজন কান্নাজরিত কণ্ঠে বলেন,আমরা জমি বন্ধক রেখে,ঋণ করে ,কারো পরিবারের শেষ সম্পত্তি বিক্রি করে স্বপ্ন নিয়ে পাড়ি দিয়েছিলাম ইউরোপে । সেই স্বপ্ন আমাদের ধূলিসাৎ হয়ে মাটিতে মিশে গেছে । ঋণদাতা ও পরিবারের চাপ গ্লানি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় হতাশার মধ্যে দিনগুলি কাটছে এই ভাগ্যাহত ফেরত বাংলাদেশিদের । অমনীষার অন্ধকারে তাদের পথ চলা । এ ব্যাপারে মালটা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব দাশ বলেন,বাংলাদেশীদের দেশে ফেরত এর ঘটনা এই প্রথম ঘটল,যা কমিউনিটিতে তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বিগ্নের সঞ্চার হয়েছে ।