জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখন ইউরোপেও পড়ছে। গ্রীষ্মের শুরুতেই তীব্র তাপপ্রবাহের সম্মুখীন পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলো। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
এমন পরিস্থিতিতে ফ্রান্সের একটি এলাকায় উন্মুক্ত অনুষ্ঠান আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফ্রান্সের বোর্দোর পাশেই গিরোন্দেতেই কনসার্ট ও বড় জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কর্মকর্তারা বলছেন, দাবদাহ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বজায় থাকবে।
এ ছাড়া শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত স্থান না হলে অভ্যন্তরীণ অনুষ্ঠানগুলোও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
একই অবস্থা স্পেনেও। দেশটির একটি অংশে যেকোনো ধরনের আউটডোর ইভেন্ট বাতিল করা হয়েছে। ইতালি ও যুক্তরাজ্যেও একই ধরনের আবহাওয়া বিরাজ করছে। শনিবার (১৮ জুন) সংবাদমাধ্যম সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
তাপপ্রবাহের প্রভাব এতো বেশি যে ইংল্যান্ডের উচ্চতর রয়্যাল অ্যাসকট রেসকোর্সের প্রোটোকলেও একটি বিরল পরিবর্তন আনা হয়েছে। অতিথিদের মাথায় টুপি ও জ্যাকেট ব্যবহার করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা শুধু রাজ পরিবারের জন্য নির্ধারিত ছিল।
মাদ্রিদে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ নাগরিকদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, সূর্যের অতিরিক্ত তাপ এড়িয়ে চলুন। বেশি পানি খাওয়ার পাশাপাশি যাদের হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে তাদের যত্ন নিতেও বলেন তিনি।
স্পেনের জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা এইএমইটি জানিয়েছে, শুক্রবার (১৭ জুন) মাদ্রিদে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১০৪ ফারেনহাইটে পৌঁছায়। ১৯৮১ সাল থেকে বছরের এত প্রথম দিকে এমন তাপমাত্রা দেখা যায়নি।
এদিকে তীব্র খরারকবলে পড়েছে ইতালি। সেখানের প্রায় অর্ধেক কৃষিজমিতে খরার প্রভাব পড়তে পারে। দেশটির নদীগুলো বিপজ্জনকভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকিতে পড়েছে সেচ ব্যবস্থা।
ইতালীয় ইউটিলিটি কোম্পানিগুলোর ফেডারেশন ইউটিলিটালিয়া এই সপ্তাহে সতর্ক করে জানিয়েছে যে, দেশের দীর্ঘতম নদী পো ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ খরার সম্মুখীন হচ্ছে। এতে দেশটির উত্তরের জলপথের অনেক অংশ সম্পূর্ণ শুকিয়ে গেছে।
এদিকে তাপপ্রবাহ তীব্র হওয়ায় দেশগুলোতে জ্বালানির চাহিদা বেড়েছে। কারণ শীততাপ যন্ত্রের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। অন্যদিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলাকে কেন্দ্র করে ইউরোপজুড়ে সংকট দেখা দিয়েছে। নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না মূল্যস্ফীতি।
Leave a Reply